লাইসেন্স করতে প্রতিটি লাইসেন্স বাবদ ৪ হাজার ৩ শত টাকা দিতে হয় - Alokitobarta
আজ : সোমবার, ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাইসেন্স করতে প্রতিটি লাইসেন্স বাবদ ৪ হাজার ৩ শত টাকা দিতে হয়


এবি সিদ্দীক ভূইঁয়া :ফায়ার সার্ভিসের ডিজি পরিবর্তন হলেও আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা হেড অফিসে রয়েছে বহাল তবিয়তে, হেড অফিসের সামনে ব‍্যানার প্রদর্শন করে ফায়ার সার্ভিসের সকল ষ্টাফবৃন্দরা প্রতিবাদ করলেও দেখেও না দেখার বান করছে ফায়ার সার্ভিসের কতৃপক্ষ।অথচ অদৃশ্য শক্তির বলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এ কর্মকর্তা।ছাত্র জনতার আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ,শ্রমিক লীগকে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ! থাকা সত্ত্বেও রয়েছে বহাল তবিয়তে।আওয়ামীলীগের অনুসারী গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন অধিদপ্তরে যুগ যুগ ধরে চেয়ার আঁকড়ে ধরে থাকা কর্মকর্তা। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পুরো আমল জুড়ে এ কর্মকর্তা ঢাকা ও আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল থেকে ফয়দা লুটেছেন। এ কর্মকর্তাদের অনেকের সাথেই সাবেক মন্ত্রী ড.দীপু মনি ও মফাজ্জল হোসেন মায়া সহ সাবেক সচিবের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক। এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ দিলে আমল নিতো না কেউ কারণ আওয়ামী লীগের প্রিয়জনের তালিকায় তিনি । ফায়ার সার্ভিসে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা বতর্মানেও ছাত্র জনতার মহান উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এখনো হেড অফিসে সক্রিয় রয়েছেন।সকল সরকারি অফিসের কর্মকর্তাদের রদবদল করা হলেও।রদবদল করা হয়নি ডিডি মো: সালেহ্ উদ্দিন কে। লাইসেন্স করতে প্রতিটি লাইসেন্স বাবদ ৪ হাজার ৩ শত টাকা দিতে হয় ডিডি মো: সালেহ্ উদ্দিন কে।প্রতি দিন গড়ে ২০/২৫ টি লাইসেন্সে সাক্ষর করে অবৈধভাবে ঘুষ নিয়ে প্রতি দিন ১ লক্ষ ৭ হাজার ৫ শত টাকা আয় করেন।নাম না প্রকাশ করার সত্ত্বে দশ জন ফায়ার ম‍্যান বলেন লাইসেন্সে সাক্ষর করে নির্ধারণ করা ফ্রি পেলে।না পেলে সাক্ষর করে না ফেলে রাখে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে।

সূত্র জানায়,স্বৈরাচার সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি অংশ এ কর্মকর্তা যে কোন উপায় পৌঁছে দিতেন সাবেক সচিব ও মন্ত্রীর কাছে। কোন কোন সময় সচিবের বাসায় বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন বলেও জানা গেছে।সাবেক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী সরকারের অনেক দোসরদের সঙ্গে এসব কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত যোগসাজস রয়েছে বলে সূত্র থেকে জানা গেছে।উপপরিচালক,মোঃ ছালেহ্ উদ্দিন আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেট গঠন করে নিয়োগ,বদলি বাণিজ্য ছাড়াও নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।নামে বেনামে রয়েছে সম্পদের পাহাড়! সকল অপরাধ থেকে রেহাই পেয়ে যায়। আওয়ামী লীগের অনুসারী হওয়ার সুবাদে এই কর্মকর্তা।ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে শুর পাল্টে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে যায়।একটি সুত্র জানায়, নতুন ডিজি আসার সাথে সাথে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে শুর পাল্টে ফেলে হেড অফিসে চাকুরীতে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এ কর্মকর্তা।তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন,উপপরিচালক,মোঃ ছালেহ্ উদ্দিন অত্যন্ত সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা এক জন কর্মকর্তা কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হয়েছেন,সেটাই আমাদের অনুসন্ধানের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ।আমাদের কাছে যদি কেহ অভিযোগ করে তা হলে তদন্তের মাধ্যমে আইনের আওতায় এনে আইনআনুগ ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।রানা প্লাজার ঘটনার পর সরকারি কিছু নিয়ম গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানকে বেঁধে দেওয়ার পর থেকে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মূলত অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রচুর সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ফায়ার ফাইটিং লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়ন এবং ফায়ার ফাইটিংয়ের সব ইকুইপমেন্ট নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে বাধ্য করানো তার অসৎ উপার্জনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন। নিকট আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন এ কর্মকর্তা ।ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের হতাশা প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমকে জানান, দুর্নীতি অনিয়ম ও এমন চিত্র প্রকাশ হওয়া ফায়ার সার্ভিস এর মত একটি গৌরব উজ্জ্বল বাহিনী কলঙ্কিত হওয়ার শামিল। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় কারন তারা আওয়ামী লীগের প্রিয় ব‍্যক্তি হওয়া সুবাদে পার পেয়ে যায়।

উপপরিচালক,মোঃ ছালেহ্ উদ্দিন বিএফএম,বিএফএম(এস),ঢাকা বিভাগ,ঢাকা।তার সাথে যোগাযোগ করতে ফোন কল কিংবা মেসেজে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।

বৈষম্য বিরুদ্ধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন,উপপরিচালক,মোঃ ছালেহ্ উদ্দিন আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা তার বিরুদ্ধে ফায়ার সার্ভিসের হেড অফিসের সামনে ব‍্যানার প্রদর্শন করে ফায়ার সার্ভিসের সকল ষ্টাফবৃন্দরা। কিন্তু এ প্রতিবাদও আমলে নেওয়া হয়নি। অথচ অদৃশ্য শক্তির বলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এ কর্মকর্তা।তাকে হেড অফিস থেকে সরিয়ে অন্যত্র বদলি করে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব‍্যবস্থা করতে হবে।এর চাকুরী জীবন পার করেন ঢাকার আসপাশ জুড়ে। আওয়ামী লীগের লোক! হওয়ার সুবাদে সুবিধা জনক স্থানেই চাকরির বেশি ভাগ সময় পার করেছেন।ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও বলেন,তাই তার বিরুদ্ধে ব‍্যবস্থা গ্রহন না করা হলে আমরা ছাত্র জনতা ফায়ার সার্ভিস সংষ্কার আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ‍্য হব।

তার নিজ এলাকায় একাধিক ব‍্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন তাদের পরিবার।তিনি ছাত্র অবস্থায় আওয়ামী লীগের ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন ।তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটা সত্য।একথা গুলো তার নিজ এলাকায় বিভিন্ন ব‍্যক্তির কাছ থেকে জানাযায়। আওয়ামী লীগের তথ্য সন্ত্রাসী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে।এদের মূল উদ্দেশ্যই হলো ছাত্র জনতার মহান উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা।এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড.ইফতেখারুজ্জামান বলেন,লাইসেন্স প্রতি ৪ হাজার ৩ শত টাকা করে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন এটি কোন ছোট্ট অপরাধ নয়।দুর্নীতি কখনো ছোট বড় নয় দুর্নীতি তো দুর্নীতিই সেটি যেমনই হোক। ছোট ছোট দুর্নীতি থেকেই বড় বড় দুর্নীতির জন্ম দেয়। দুদক আগের চেয়ে ভালো কাজ করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। দুদকের দুর্নীতির বিষয়ে আর বিশদ অনুসন্ধান প্রয়োজন। একইসঙ্গে দুদকের জনবলেরও ঘাটতি রয়েছে সেগুলোর সমাধান প্রয়োজন। কেননা যে তুলনায় দুর্নীতির অভিযোগ আসে সেই তুলনায় দুদক অনুসন্ধান করতে পারে না। যদি সকল দুর্নীতি দুদক অনুসন্ধান করতে পারতো তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসত। তবে আমরা আশাবাদী দুর্নীতিবাজদের শিকড় উপড়ে ফেলা সম্ভব সেটি একদিন হবেই।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বলেন,আমরা অনেক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছি।যদি আরো অভিযোগ পাই সেটাও তদন্তের মাধ্যমে আইন আনুগব‍‍্যবস্থা গ্রহন করা হবে। যারাই অপরাধ করুক না কেন আমাদের অনুসন্ধানে যদি কোনোভাবে প্রমাণিত হয়।’তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব এবং প্রয়োজনীয় যত ব্যবস্থা আছে তা নেব।কোনো দুর্নীতিবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে মহাপরিচালক,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল জানান, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মাদের বিরুদ্ধে ফায়ার সার্ভিসের হেড অফিসের সামনে ব‍্যানার প্রদর্শন করে ফায়ার সার্ভিসের সকল ষ্টাফবৃন্দরা। কিন্তু এ প্রতিবাদও আমলে নেওয়া হয়নি। অথচ অদৃশ্য শক্তির বলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন এ কর্মকর্তারা।এমন অভিযোগ করা হলে তিনি বলেন আমি নতুন আমার জানা নেই।লাইসেন্স প্রতি ৪ হাজার ৩ শত করে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলন করা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ পত্র পেলে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব‍্যবস্থা করা হবে।

Top