অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আসুন হরিণঘাটায় সাগর আর ঝাউবন
আলোকিত বার্তা:ঈদের ছুটিতে সবাই পরিবার নিয়ে যেমন সময় কাটাতে পছন্দ করেন, তেমনই প্রকৃতির টানে এখানে সেখানে ছুটেও যান অনেকে। ঈদের ছুটিতে তাই পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে দেখা যায় সৌন্দর্যপ্রেমী মানুষের উপচেপড়া ভিড়।কর্মব্যস্ততার মাঝেই একটু সময় বের করে ঘুরে আসতে পারেন দক্ষিণাঞ্চলের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলা হতে সাত কিলোমিটার দূরে হরিণঘাটা বনাঞ্চলে।দর্শনীয় স্থানটিতে যেমন উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য। আর অন্যদিকে অকৃত্রিম বনের মাঝে ছড়িয়ে থাকা সবুজের সমারোহ। এ সৈকতে মানুষের উপস্থিতি অনেক কম বলে এখানে নানা প্রজাতির পাখির নির্বিঘ্ন বিচরণ চোখে পড়ে।এছাড়া সৈকতে ঘুরে বেড়ানো লাল কাঁকড়ার দলও তৈরি করে দেখার মতো এক দৃশ্য। বনের আরেক পাশে বলেশ্বর ও বিষখালি নদী গিয়ে মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। নদী আর সাগরের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার সঙ্গে সঙ্গে দেখতে পাবেন বিশাল ঝাউবন। এ যেন একের ভেতরে দুই।
বন দেখার পাশাপাশি সাগরও দেখা হবে।বিশাল এই জায়গাজুড়ে আছে শুধু নীরবতা ও পাখিদের কলরব।নীরবতার মাঝে পাখিদের ডাক ক্ষণিকের জন্য ভুলিয়ে দেয় সব ধরনের যান্ত্রিক কোলাহল ও কর্ম ব্যস্ততা।প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ঠ এ বন নানান গাছপালায় সমৃদ্ধ। কেওড়া, গরাণ,গেওয়া, ওড়া প্রভৃতি শ্বাসমূলীয় গাছ বনের প্রধান বৃক্ষ। এছাড়া বনে আছে- হরিণ, বানর, বন বিড়াল, গুইসাপ, মেছো বাঘ, সজারু, শিয়াল, শুকর নানা প্রজাতির সরীসৃপসহ প্রায় ২০ প্রজাতির বন্য প্রাণী।বনে আছে অন্তত ৩৫ প্রজাতির পাখিসহ নানা প্রাণীকূল। হরেক রকমের পাখ-পাখালির কলকাকলিতে মুখর চারপাশ। এ বনের সৌন্দর্যকে আরও আকর্ষণীয় করেছে লালদিয়া, বিহঙ্গ দ্বীপ ও দ্বীপের সৈকত।
বনের ভেতরে এঁকেবেঁকে চলা ছোট বড় মিলিয়ে ১০-১২টি প্রবহমান খাল। একই সঙ্গে বনের দক্ষিণ সীমানায় সাগর মোহনার চরে মৌসুমী শুঁটকিপল্লী। বনের মধ্যে ঝুলন্ত রাস্তা তৈরির কারণে প্রতিদিন বনে ঘুরতে মানুষ আসছে।এ রাস্তা দ্রুত লাল দিয়ার চর পর্যন্ত নিতে পারলে সাগর পাড়ে সূর্য ওঠা ও ডোবা দেখতে পাওয়া যাবে। ইচ্ছা করলে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে বনের মধ্যে প্রবাহমান সরু খালে সময় কাটাতে পারছেন দর্শনার্থীরা।ঢাকা খেকে খুব সহজেই আপনি পৌঁছে যেতে পারবেন হরিণঘাটায়। সেক্ষেত্রে ঢাকার প্রধান দুই বাস টার্মিনাল সায়েদাবাদ ও গাবতলী থেকে সরাসরি বাসে করে পাথরঘাটায় পৌঁছাতে হবে।আর একটু শান্তিময় যাত্রার জন্য যেতে পারেন নৌপথে লঞ্চে করে। লঞ্চে নৌপথে যেতে হলে সদরঘাট থেকে সরাসরি বরগুনার লঞ্চে উঠতে হবে। ১১-১২ ঘণ্টার লঞ্চ জার্নির পর কাকচিড়ায় গিয়ে নামতে হবে।কাকচিড়া থেকে মোটরবাইক অথবা মাহিন্দ্রতে করে আধা ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে পাথরঘাটায় আসতে হবে। পাথারঘাটায় নেমে টেম্পু, মাহিন্দ্র অথবা মোটরবাইকে যাত্রা করে ২৫-৩০ মিনিট পরই দেখা মিলবে সেই কাঙ্ক্ষিত জায়গা হরিণঘাটার।