স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কামনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সক্রিয় সহযোগিতা - Alokitobarta
আজ : বুধবার, ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কামনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সক্রিয় সহযোগিতা


আলোকিত বার্তা:মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ হতে মিয়ামনারে ফেরত পাঠাতে চীনের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দ্রুত প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ বিষয়েও তিনি চীনের আশু হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন।চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন এবং চীনের পক্ষে ১৪ সদস্যের দলের নেতৃত্ব দেন চীনের স্টেট কাউন্সিলর এবং জননিরাপত্তা মন্ত্রী জাহাও কিজি।এদিকে চীন বলেছে,তারা এ বিষয়ে মিয়ানমারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছে। চীন মনে করে, বিষয়টি সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের আরো আলোচনা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর এবং ইউএনডিপির ইতিবাচক ভূমিকা পালন করা উচিত।

বিষয়ে আসিয়ান ইতিবাচক ভূমিকা রাখায় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোটটির প্রশংসা করেন চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রী জাহাও কিজি।আলোচনায় চীনের মন্ত্রী দুই দেশের পুলিশ বাহিনীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতা দেশ দুইটির উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিমত ব্যক্ত করেন এবং সাইবার অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশের মধ্যে অধিকতর সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন।গত ১ বছরে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭৫ জন কর্মকর্তাকে সন্ত্রাস দমন সংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে চীন। এ ধরণের প্রশিক্ষণ সুবিধা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া মাদক ও সাইবার অপরাধ দমনের জন্য বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন চীনা মন্ত্রী।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৬ সালে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিংপিং এর সফল বাংলাদেশ সফরের কথা উল্লেখ করে সে সময়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচিত সহযোগিতার ক্ষেত্রসমূহ আরো এগিয়ে নেয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যেখানে সন্ত্রাস দমনে দু’দেশের সহযোগিতার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচিত হয়।

চীনের মন্ত্রী ভবিষ্যতে চারটি ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সেগুলো হলো – আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দমন, মাদক দমনে প্রশিক্ষণ সুবিধা প্রদান এবং তথ্য বিনিময়, বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগে বাংলাদেশের সক্রিয় অংশগ্রহণে চীনের প্রত্যাশা এবং দুই দেশের মধ্যকার পারস্পরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপের নিয়মিত সভা আয়োজন।এ ব্যাপারে প্রয়োজনে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে একটি প্রতিনিধিদল চীনে বাংলাদেশ থেকে প্রেরণ করতে পারবে বলে অভিমত দেন জাহাও কিজি। তিনি বাংলাদেশে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের নিরাপত্তা প্রদানে বাংলাদেশের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, বাংলাদেশের ভূমিতে কোনো দেশের সন্ত্রাসী এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদেশি গ্রুপ কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। একইভাবে চীনের ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন।আলোচনায় দুই পক্ষই অভিমত ব্যক্ত করে, বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশ ও চীনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী দেশ হিসেবে চীন বাংলাদেশের পাশে থাকবে।বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে ঢাকায় অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম বৈঠকে আলোচিত বিষয়গুলো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উভয়পক্ষ অভিমত ব্যক্ত করেন। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ঢাকায় দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।সভা শেষে দুই দেশের মন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং বেইজিং মিউনিসিপাল পাবলিক সিকিউরিটি ব্যুরো এর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতার লক্ষ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।- বাসস

Top