নদীপথে ঢুকছে ইয়াবা দক্ষিণাঞ্চলে সড়কে কঠোর নিরাপত্তার কারণে রুট পরিবর্তন মাদক কারবারিদের
আলোকিত বার্তা:বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে সহজে ইয়াবার চালান পৌঁছাতে এখন নদী পথকেই প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করছে মাদক কারবারিরা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি এড়িয়ে সহজেই ইয়াবার চালান পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে হাতে গোনা ২/১টি বড় চালান আটক হলেও এ চক্রটিকে কোনো ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। গত সপ্তাহে কোস্টগার্ড কুয়াকাটা সংলগ্ন সমুদ্র থেকে পাঁচ লাখ পিস ইয়াবাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করে। এসময় জিম্মি হিসাবে থাকা ১৩ জেলেকে উদ্ধার করা হয়। টেকনাফের গভীর সমুদ্র থেকে এই ইয়াবার চালান ট্রলারে উঠানো হয় বলে জানিয়েছেন আটক মাদক কারবারিরা।
ভোলা কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের লে.কমান্ডার এম নাজিউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মাদক কারবারিরা সমুদ্রের এই রুটকে নিরাপদ হিসেবে চিহ্নিত করে মাদক পাচার শুরু করছে। এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কোস্টগার্ড নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে।
এর আগে গত ১ এপ্রিল বরিশাল নদীবন্দর এলাকায় একটি যাত্রীবাহী লঞ্চের তৃতীয় তলার কেবিন থেকে ৯ হাজার ৮শ পিস ইয়াবাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ ঘটনায় প্রেস ব্রিফিংকালে সদ্য বিদায়ী বিএমপি কমিশনার ও অতিরিক্ত আইজিপি মো. মোশারফ হোসেন জানান, বর্তমানে বেশি মাদক নৌ পথেই প্রবেশ করছে। সড়ক পথে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের রুট পরিবর্তন করেছে। কিন্তু নৌ পথে আমাদের টহল কম হওয়ায় এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে একটু বেগ পেতে হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে,বরিশাল নদী বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় সহজেই মাদকের চালান ঢুকানো সম্ভব হচ্ছে। সাগর পথে কক্সবাজার থেকে মাছ ধরার ট্রলারে জেলেদের মাধ্যমে কুয়াকাটা, কলাপাড়া, মহিপুরের সাগর পাড়ে ইয়াবার চালান পৌঁছে দেয় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে বরগুনা, কাউখালী, মঠবাড়িয়া, ভাণ্ডারিয়া, ঝালকাঠী, বরিশালসহ আশপাশের উপজেলার ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন নদী পথে তাদের চালান বুঝে নেন। এই কাজে জড়িত বরিশালের বড় বড় মাদক ব্যবসায়ীরা।ইতোমধ্যে পুলিশ ও র্যাবের অভিযানে বেশ কয়েকজন রাঘব বোয়াল মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হলেও মাদক নির্মূল অভিযান সফল হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুলিশেরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কারণ সোর্স নিজের স্বার্থ মতো তথ্য দিয়ে মাদক কারবারির সঙ্গে চুক্তি করে লাভবান হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সাগর ও নদীতে এক নৌকা থেকে অপর নৌকায় যে মাদক পাচার হচ্ছে এ বিষয়ে নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশকে আরো জোরদার অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন,মাদক নির্মূলে আমরা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। অনেক মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছে। এর ফলে মাদক বিক্রি ও ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে।তবে সম্প্রতি বড় বড় চালান নদী পথে আটক হওয়ায় রেঞ্জ পুলিশের কার্যক্রম আরো জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।