দুর্নীতিবাজ ও ঋণখেলাপি এমডি হতে পারবেন না - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
বেশ কয়েকটি আসনে স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্যের ক্ষমতার কাছে অসহায় তারা সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতার তথ্য গোপন করতেই এমন উদ্যোগ দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদের তথ্য প্রকাশ করতে হবে দেশের আবহাওয়ায় বিরাজ করছে মরুভূমির তাপ,বৃষ্টির বাতাস সরে গেছে চীনের দিকে আকাশে বুলেট-বারুদের ধোঁয়া,ঘুম থেকে উঠলেই সাইরেনের শব্দ তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না,জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের উন্নতি হয়নি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান না দেখালে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসাবেই গণ্য করা হবে

দুর্নীতিবাজ ও ঋণখেলাপি এমডি হতে পারবেন না


মোহাম্মাদ আরিফ হোসেন: নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে নিয়োগে যোগ্যতা, দক্ষতা ও উপযুক্ততা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়মে ফৌজদারি ও দেওয়ানি আদালতে দণ্ডিত বা দেউলিয়া ঘোষিত, জাল-জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত, আর্থিক অপরাধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হতে পারবেন না।কেউ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, জাল-জালিয়াতি ও নৈতিক স্খলনজনিত কারণে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান বা পরিচালক বা কর্মকর্তা বা কর্মচারী থাকাকালীন স্বীয় পদ থেকে বরখাস্ত হলে তার প্রধান নির্বাহী হতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সঙ্গে করখেলাপি ও ঋণখেলাপি কোনো ব্যক্তি এসব প্রতিষ্ঠানের এমডি বা সিইও হওয়ার সুযোগ পাবেন না। যিনি এমডি হবেন তিনি ঘন ঘন বিদেশে যেতে পারবেন না। জরুরি প্রয়োজনে গেলেও অন্তত ১০ কার্যদিবস আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে থাকতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কেলেঙ্কারির মূল হোতা আলোচিত পি কে হালদার বিপুল অঙ্কের টাকা-পয়সা নিয়ে বিদেশে গিয়ে পালিয়ে গেছেন। সে থেকে এমডিদের বিদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে আসছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে বলা হয়, কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অথবা প্রধান কর্মকর্তা হিসাবে কর্মকালীন প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন অথবা সনদ বাতিল করা হলে অথবা কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ করা হলে তিনি সিইও-এর জন্য অযোগ্য হবেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা ফাইন্যান্স কোম্পানি বা কোনো ব্যাংক কোম্পানির প্রধান নির্বাহী বা চেয়ারম্যান বা পরিচালক বা কর্মকর্তা বা অন্য কোনো পদে আসীন থাকা অবস্থায় তাকে স্বীয় পদ হতে অপসারণ বা বরখাস্ত করা হলে তিনি সিইও হতে পারবেন না।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিইও হতে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে ন্যূনতম স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী হবেন। অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং, ব্যবস্থাপনা কিংবা ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে উচ্চতর প্রাতিষ্ঠানিক বা পেশাগত ডিগ্রিধারী ব্যক্তি নিয়োগে প্রাধিকার পাবেন। তবে শিক্ষাজীবনের কোনো পর্যায়ে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি থাকতে পারবে না।নির্দেশনায় আরও বলা হয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিইও প্রস্তাবিত পদের অব্যবহিত পূর্ববর্তী পদগুলোতে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর ওপর অর্পিত কার্য সম্পাদনের প্রমাণ ও সুনাম থাকতে হবে। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংকিং পেশায় সক্রিয় কর্মকর্তা হিসাবে কমপক্ষে ২০ বছরের অভিজ্ঞতাসহ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অব্যবহিত পূর্ববর্তী পদে কমপক্ষে ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। পাশাপাশি ঋণ বা বিনিয়োগ স্থিতির পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকার উর্ধ্বে নয় এমন কোম্পানির ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি বা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তা বা বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসইভিপি) বা সমতুল্য অথবা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কোনো কর্মকর্তা যার শাখা ব্যবস্থাপক হিসাবে কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ব্যাংকিং পেশায় সক্রিয় কর্মকর্তা হিসাবে কমপক্ষে ২০ বছরের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর নেতৃত্ব প্রদানের গুণাবলি থাকতে হবে। আর তিনি অন্য কোনো ব্যবসায়ে বা পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। আবার কোম্পানিতে তার কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থ জড়িত থাকতে পারবে না। এছাড়া কোনো ব্যক্তির বয়স ৬৫ (পঁয়ষট্টি) বছর অতিক্রান্ত হলে তিনি কোনো কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারবেন না। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৬২ বছর। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগের মেয়াদ হবে সাধারণভাবে ৩ বছর, তবে তিনি পুনঃনিয়োগের যোগ্য হবেন যদি বয়স ৬৫ বছর অতিক্রান্ত না করেন।

আরও বলা হয়, নিযুক্তি বা পুনঃনিযুক্তির কর্মসম্পাদন সূচকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিযুক্তি বা পুনঃনিযুক্তির সময় ফাইন্যান্স কোম্পানির খেলাপি ঋণের পরিমাণ হ্রাস এবং অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা যুক্ত করতে হবে এবং সময়ে সময়ে এর অগ্রগতি তদারকি করতে হবে। একই সঙ্গে ওই পদে নিযুক্ত ব্যক্তির কর্মমূল্যায়নের লক্ষ্যে ৩ বছরের জন্য বা তার নিযুক্তি বা পুনঃনিযুক্তির মেয়াদে সুনির্দিষ্ট আর্থিক ও ব্যবস্থাপনাগত উন্নতি বিধানের তথা অন্যান্য কর্মসম্পাদন সূচক যুক্ত করতে হবে।আর মূল বেতন ও বাড়ি ভাড়া বাবদ প্রত্যক্ষ বেতন ও ভাতা এবং অন্যান্য ভাতা (যদি থাকে) যোগ করে মোট বেতন-ভাতাদি নিরূপণ করতে হবে। ইউটিলিটি বিল, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিজের চিকিৎসা খরচ, ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম প্রকৃত ব্যয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। উৎসব ভাতা হবে সর্বোচ্চ দুটি, প্রতিটি এক মাসের মূল বেতনের সমান। তিনি দ্বৈত নাগরিক হলে বা অন্য কোনো দেশে স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদে বসবাসের অনুমতির আবেদন করতে হবে।

Top
%d bloggers like this: