উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন কতদূর,নিম্ন আদালতে শতভাগ - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
বেশ কয়েকটি আসনে স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্যের ক্ষমতার কাছে অসহায় তারা সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতার তথ্য গোপন করতেই এমন উদ্যোগ দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদের তথ্য প্রকাশ করতে হবে দেশের আবহাওয়ায় বিরাজ করছে মরুভূমির তাপ,বৃষ্টির বাতাস সরে গেছে চীনের দিকে আকাশে বুলেট-বারুদের ধোঁয়া,ঘুম থেকে উঠলেই সাইরেনের শব্দ তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না,জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের উন্নতি হয়নি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান না দেখালে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসাবেই গণ্য করা হবে

উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন কতদূর,নিম্ন আদালতে শতভাগ


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :দেশের প্রায় সব বিচারিক (অধস্তন) আদালতে মামলার শুনানি, আদেশ ও রায় ঘোষণায় বাংলা ভাষার প্রচলন থাকলেও উচ্চ আদালতে এখনো তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। তবে সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অধিকাংশ বেঞ্চ এবং আপিল বিভাগের বিচারকাজে বাংলার চর্চা বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা মনে করছেন, আইনি অনেক বিষয়ের বাংলায় সঠিক পরিভাষা না থাকায় কিছুটা সমস্যায় পড়তে হয়। তবে উচ্চ আদালতেও ভবিষ্যতে বাংলার চর্চা আরও বাড়বে।কয়েক বছর আগেও শুধু ফেব্রুয়ারি মাস এলেই সুপ্রিম কোর্টের কয়েকটি বেঞ্চে বাংলায় আদেশ দেওয়ার খবর আলোচনায় আসত। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। এখন বছরজুড়েই আদালতের শুনানি, আদেশ ও অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের অধিকাংশই দেওয়া হয় বাংলায়।তবে, বাংলায় আদেশ ও রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ইংরেজি আইনের সঠিক বাংলা পরিভাষা না থাকার যুক্তি দেখালেন সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। তিনি মনে করেন চর্চার মাধ্যমে সব সমস্যা দূর করা সম্ভব। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, রেফারেন্সগুলো সব ইংরেজিতে। অনেক সময় বিদেশি পক্ষ থাকায় রায় ইংরেজিতে দিতে হয়। এসব সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে সর্বোচ্চ আদালতেও পুরোপুরি বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব। যদিও সর্বোচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন আগের থেকে অনেক বেড়েছে, বলছেন আইনজীবীরা।বাংলায় আদেশ ও রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ইংরেজি আইনের সঠিক বাংলা পরিভাষা না থাকার যুক্তি দেখালেন সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ। তিনি মনে করেন চর্চার মাধ্যমে সব সমস্যা দূর করা সম্ভব। অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলছেন, রেফারেন্সগুলো সব ইংরেজিতে। অনেক সময় বিদেশি পক্ষ থাকায় রায় ইংরেজিতে দিতে হয়। এসব সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে সর্বোচ্চ আদালতেও পুরোপুরি বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব

সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল, স্বাধীনতার ঘোষণা, চার নদী সংরক্ষণ, জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল, বিডিআর হত্যা মামলাসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় বাংলায় ঘোষণা করে উদাহরণ সৃষ্টি করেন কয়েকজন বিচারপতি। সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আদালতে শুনানির সময়, বিচারকদের রায় দেওয়ার সময় সেটি বাংলায় করা আমার মতে কঠিন কিছু নয়। এটি নির্ভর করছে কতটুকু আগ্রহ নিয়ে আমি এগোচ্ছি।কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ও মামলার নথির অধিকাংশ এখনো ইংরেজিতে হওয়ায় বেকায়দায় পড়তে হয় সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের। যদিও সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইংরেজি রায়গুলোর বাংলা অনুবাদ করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, কিন্তু তাতে সঠিক অনুবাদ না হওয়ায় দুই ভাষায়ই রায় প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন আইনজীবীরা।আশার বিষয়, বাংলায় রায়-আদেশ লেখার চর্চা বৃদ্ধির পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত সব রায় ও আদেশ বাংলায় দেখতে ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন প্রযুক্তিসেবা যুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে গুগল প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবী বা যে কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায়-আদেশ বাংলায় অনুবাদ করে দেখতে পারবেন। ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটের ‘বাংলা সংস্করণ’ চালু করা হয়েছে।

নিম্ন আদালতে শতভাগ, উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন কতদূর:

সাধারণ মানুষ ও বিচারপ্রার্থীরা যেন আদালতের রায় সহজেই বুঝতে পারেন, সেজন্য ইংরেজিতে দেওয়া রায় বাংলায় অনুবাদ করতে ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্টে একটি সফটওয়্যার যুক্ত হয়। ‘আমার ভাষা’ নামের এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আদালতের রায় বাংলায় অনুবাদ করা যায়।জানা গেছে, সফটওয়্যারের মাধ্যমে ইংরেজি রায়ের ৭০ শতাংশ সঠিক অনুবাদ হয়। বাকিটা নিজেদের ঠিক করে নিতে হয়। এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপিল বিভাগের ৭টি ও হাইকোর্ট বিভাগের ২২টি রায় অনুবাদ করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।আইনজীবীরাও চান আদালতে বাংলার ব্যবহার হোক। ভারত বা আশপাশের দেশে নিজস্ব ভাষায় আরগুমেন্ট ও রায় দেওয়া হয়। কিন্তু যেসব আইনি শব্দের পরিভাষা তাদের দেশের অভিধানে নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে ইংরেজি ব্যবহার করা হয়। টার্নিং পয়েন্ট হলো আমরা কতটুকু চাচ্ছি বাংলার দিকে এগিয়ে যাওয়ার। যদি দেখা যায় বিচারকরা চাচ্ছেন, আমরাও চাচ্ছি তাহলে এগিয়ে যাওয়া যাবে, কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না সুপ্রিম কোর্টেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনজীবীদের এখন বাংলায় শুনানি করতে দেখা যায়। আদালতের জিজ্ঞাসায়ও দেখা যায় বাংলার ব্যবহার। ইংরেজির পাশাপাশি উচ্চ আদালতে এখন বাংলায় রায়-আদেশের সংখ্যা বাড়ছে। অথচ এক দশক আগেও বাংলায় রায় ও আদেশের সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। তবে এ পর্যন্ত উচ্চ আদালতে বাংলায় কতটি আদেশ ও রায় হয়েছে, তার কোনো সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য জানা যায়নি।

তথ্যমতে, ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার জজ আদালত বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দেওয়া শুরু করেন, যা দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম। হাইকোর্ট বিভাগের দুজন বিচারপতি নিয়মিত বাংলায় রায় ও আদেশ দিচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন সময় হাইকোর্ট বিভাগের ১০ থেকে ১৫ জন বিচারপতি বাংলায় রায়-আদেশ দিয়েছেন। তবে উচ্চ আদালতে বাংলার ব্যবহার আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এখন পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগে কতটি মামলার আদেশ ও রায় বাংলায় দেওয়া হয়েছে- এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার অতিরিক্ত জেলা জজ মো. মোয়াজ্জেম হোছাইন বলেন, পরিসখ্যান আমাদের কাছে সুনির্দিষ্টভাবে নেই। ‘আমার ভাষা’র সফটওয়ার দিয়ে অনেক রায়ের অনুবাদ করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলায় রায়ের প্রক্রিয়াও চলমান। এছাড়া অন্যান্য জাজমেন্টের ক্ষেত্রেও আমাদের গুগল ট্রান্সলেশনের যে ফ্ল্যাগিং সার্ভিসটা সেটাও আমরা সংযুক্ত করে দিয়েছি। এতেও অনেকে ইংরেজি রায় বাংলায় অনুবাদ দেখতে পারেন। অনেক ক্ষেত্রে গুগলের অনুবাদ শতভাগ সঠিক হয় না। কিন্তু তারপরও বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষসহ সংশ্লিষ্টরা আদেশ বা রায় সম্পর্কে একটা ধারণা পেতে পারেন।তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের অনেক বিচারপতি বাংলায় রায় দিয়ে থাকেন এবং রায় প্রকাশ করেন। এ সংখ্যা আপিল বিভাগ থেকে হাইকোর্ট বিভাগেও ধীরে ধীরে বাড়ছে।সর্বোচ্চ আদালতে বাংলা ভাষার প্রয়োগ ও প্রচলন তাগিদ অনেক দিনের। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বহুবার এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। এ বিষয়ে খোদ আইনজীবীদের আগ্রহ কোন পর্যায়ে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল সাবেক আইনমন্ত্রী ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের কাছে। তিনি বলেন, আদালতে আরগুমেন্ট করার সময় আমি যে ভাষা ব্যবহার করছি এবং বিচারকরা রায় দেওয়ার সময় যে ভাষা প্রয়োগ করছেন সেগুলো বাংলায় করার ক্ষেত্রে খুব বেশি ডিফিকাল্টি নেই। এখন যদি মনে করে যে- না, ইংরেজিতে হচ্ছে ইংরেজিতেই হোক। তখন তো আর এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না।

আইনজীবীদের দিক থেকে কোনো বাধা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আইনজীবীরাও চান আদালতে বাংলার ব্যবহার হোক। ভারত বা আশপাশের দেশে নিজস্ব ভাষায় আরগুমেন্ট ও রায় দেওয়া হয়। কিন্তু যেসব আইনি শব্দের পরিভাষা তাদের দেশের অভিধানে নেই সেগুলোর ক্ষেত্রে ইংরেজি ব্যবহার করা হয়। টার্নিং পয়েন্ট হলো আমরা কতটুকু চাচ্ছি বাংলার দিকে এগিয়ে যাওয়ার। যদি দেখা যায় বিচারকরা চাচ্ছেন, আমরাও চাচ্ছি তাহলে এগিয়ে যাওয়া যাবে, কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকবে না।

সর্বোচ্চ আদালতে আদেশ ও রায় ঘোষণায় বাংলার প্রচলনে আইনজীবীদের আগ্রহ কেমন তা নিয়ে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আবু মোহাম্মদ (এএম) আমিন উদ্দিন বলেন, সুপ্রিম কোর্টে বাংলা ভাষার প্রচলন শুরু হয়েছে। কিন্তু সম্পূর্ণভাবে বাংলার প্রচলন করা যাবে না। কারণ, আমাদের রায়গুলো অনেক সময় বিদেশেও যায়। এখন ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়গুলো আছে, এখানে বিদেশিরাও পক্ষ থাকে, সবগুলো মামলার কার্যক্রম বাংলায় হয়ে যাবে তা নয়, তবে অধিকাংশ মামলায় হয়ে যাচ্ছে বা যাবে। আমি যখন এই আদালতে যোগদান করি তখন বাংলায় কোনো রায় হতো না, বাংলায় প্রথম রায় হলো সম্ভবত ১৯৯৬ বা ১৯৯৭ সালে।২১শে পদকপ্রাপ্ত ভাষাসৈনিক ও আপিল বিভাগের বিচারপতি কাজী এবাদুল হক বলেন, এখনো আমাদের জাতীয় ইস্যুতে বড় বড় আদেশ ও রায়গুলো বাংলায় হয়। প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক পঞ্চদশ সংশোধনীর রায়সহ যেসব রায় দিয়েছেন সব বাংলায় দিয়েছেন। তবে রেফারেন্সগুলো ইংরেজি ভাষায় হয়। কারণ, এগুলো অন্য দেশের হওয়ায় ইংরেজির বাইরে হবে না।

তিনি বলেন, আমরা তো শুধু নিজেদের রেফারেন্স ব্যবহার করি না, ভারত, ইংল্যান্ড ও আমেরিকার রেফারেন্স ব্যবহার করি। এগুলো আমরা নিই। বিভিন্ন রায় এবং আদেশে এসব রেফারেন্স নিতে হয়। কেউই বাংলা ভাষায় আদেশ ও রায় দিতে অনাগ্রহী নন। মাতৃভাষায় কথা বলা মাতৃভাষায় লেখা এটা তো একটা ভালো লাগা।পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) হত্যা মামলা। এ মামলায় হাইকোর্টের তিন বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ রায় প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠা। এতে বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী (বর্তমানে আপিল বিভাগে) বাংলায় ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন। ২০১০ সালে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরের বছর থেকেই তিনি ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রায়-আদেশ দেন। হাইকোর্ট বিভাগে এক যুগ দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ৭-৮ হাজার রায়-আদেশ বাংলায় দেনসুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, বিচারিক আদালতে আদেশ ও রায় বাংলায় হয়। উচ্চ আদালতেও শুনানি বাংলায় হয়। আদেশ ও রায় কিছুক্ষেত্রে বাংলায় হয়। সংবিধানে রয়েছে বাংলায় আইন করতে হবে, সবকিছু হবে বাংলায়। তবে রেফারেন্সগুলো ইংরেজি থেকেই নিতে হয়।

তিনি আরও বলেন, উচ্চ আদালতে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মামলার শুনানি বাংলায় হচ্ছে, যা খুবই ইতিবাচক। আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ এর আগে বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়েছেন। যেসব প্রতিবন্ধকতা আছে তা কাটাতে পারলে আশা করি ভবিষ্যতে সর্বোচ্চ আদালতে পুরোপুরি বাংলার প্রচলন হয়ে যাবে।হিউম্যান রাইডস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, প্রথমে আমাদের ইতিহাসের মধ্যে যেতে হবে। আমাদের জুডিশিয়ারি কিন্তু ইনহেরিট করেছি ইংলিশ দিয়ে। সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। একসময় সুপ্রিম কোর্টে ইংরেজিতেই সবকিছু হতো। কিন্তু বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনে আমাদের দাবি ছিল- সর্বত্র বাংলার প্রচলন। সরকার আদালতে বাংলা ভাষা চালুর জন্য একটি অধ্যাদেশ জারি করলো। নিম্ন আদালতে শুরু হয়ে গেলো, কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতে পুরোপুরি শুরু হয়নি। এর মধ্যে একটি মামলা আপিল বিভাগ পর্যন্ত গড়ালো। আপিল বিভাগ সিদ্ধান্ত দিলেন, ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা চলতে কোনো বাধা নেই।তিনি বলেন, আসলে আদালতের আদেশ-রায় বাংলায় হলেই ভালো। কিন্তু বাংলায় জাজমেন্ট দিতে যে প্রতিবন্ধকতাগুলো আছে সেগুলোর বিষয়ে একটি পরিকল্পনা নিতে হবে। লজিস্টিক সাপোর্টগুলো ঠিকভাবে থাকতে হবে। বাংলায় দক্ষ টাইপ রাইটার লাগবে। কারণ, রেফারেন্সগুলো তো বাংলায় নেই, সেগুলো তো আমাদের প্রস্তুত করতে হবে। রেফারেন্সগুলো বাংলায় থাকা দরকার। অন্যথায় বাংলায় রায় দেওয়াটা একটু কঠিন হবে।এ আইনজীবী আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টের অ্যাপসের মাধ্যমে রায় বাংলায় অনুবাদ করা যায়। ইংরেজিতে যখনই রায়টা ঘোষণা করা হয়, তখনই এটি বাংলায় করে সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে যেন প্রকাশ করা হয় সেটি খেয়াল রাখা উচিত। আমরা যারা সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করছি, সবাই ইংরেজিতে লিখে অভ্যস্ত। বাংলায় রায় লেখার অভ্যাস চালু করতে হবে। তবে অ্যাপসের কারণে বাংলায় রায় লেখার প্রয়োজনীয়তা কমে গেছে।

আমি পরিবেশ ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি। আমার বেশ কিছু মামলার রায় বাংলায় দেওয়া হয়েছে। নদীর মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক সাহেব বাংলায় রায় দিয়েছেন। হাতিরঝিলের একটি মামলায় বাংলায় রায় দেওয়া হয়েছে’- যোগ করেন মনজিল মোরসেদ।সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ বলেন, দেশে এলিট শ্রেণির একটা ধারণা- ইংরেজিতে না বলতে পারলে সে ভালো কিছু পারে না। এই যে হীনমন্যতা এটাই আগে দূর করতে হবে। সাধারণ মানুষেরও একটা ধারণা যে, ভালো ইংরেজি না বোঝা মানেই ভালো আইনজীবী না। কিন্তু আমাদের দেশে যারা প্রথিতযশা আইনজীবী তারা খুব ভালো ইংরেজি জানেন, কিন্তু আদালতে দাঁড়িয়ে উনারা বাংলায় সাবমিশন দেন। আবার যখন প্রয়োজন হয় ইংরেজিতে দেন।

ভাষার মাসে নতুন শুরু:
গত বছর (২০২৩ সালে) ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে বাংলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। ১ ফেব্রুয়ারি তিনি আদালতে বলেছিলেন, এখন থেকে বাংলা ভাষায় আদেশ দেওয়া হবে। অনুসন্ধানে জানা যায়, চেম্বার আদালত সপ্তাহে তিনদিন বসে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট কার্যদিবসে ৯৬০টি মামলায় আদেশ ও সিদ্ধান্ত বাংলায় দিয়েছেন তিনি। সাধারণত চেম্বার আদালতের আদেশ কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েকটি বাক্যে ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েকটি শব্দে হয়। বিচারপতি নাইমা হায়দারের বেঞ্চ বাংলায় রায় দেন। এছাড়া বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চও বাংলার ব্যবহার করেন।

বাংলায় রায় ও আদেশ:
প্রয়াত বিচারপতি এ আর এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী নব্বইয়ের দশকের শুরুতে হাইকোর্টে বাংলায় আদেশ দেওয়া শুরু করেন। এরপর সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে কাজী এবাদুল হক, হামিদুল হক, আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বেশ কয়েকটি রায় বাংলায় দিয়েছেন। বিচারপতি খায়রুল হক সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল, স্বাধীনতার ঘোষণা, স্বাধীনতাযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান সংরক্ষণ ও চার নদী সংরক্ষণসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায় বাংলায় দেন।বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম (বর্তমানে আপিল বিভাগে) রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালে বাংলায় রায় লিখেছেন। এক যুগের বেশি সময় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি থাকাকালে এই বিচারপতি বাংলায় প্রায় ৩০ হাজার রায় ও আদেশ দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিম্ন আদালতে শতভাগ, উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন কতদূর:

গাজীপুরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৬ সালের ১৫ জুন বাংলায় রায় দেন।দেশের ইতিহাসে আসামির সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড় পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) হত্যা মামলা। এ মামলায় হাইকোর্টের তিন বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ রায় প্রায় ৩০ হাজার পৃষ্ঠা। এতে বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী (বর্তমানে আপিল বিভাগে) বাংলায় ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন। ২০১০ সালে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পরের বছর থেকেই তিনি ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় রায়-আদেশ দেন। হাইকোর্ট বিভাগে এক যুগ দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ৭-৮ হাজার রায়-আদেশ বাংলায় দেন বলে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের (বর্তমানে আপিল বিভাগে) নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলায় রায় ও আদেশ দেওয়া শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০২১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দেওয়া রায়টি বাংলায় লিখেছেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।২০১০ সালের এপ্রিলে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগ পান বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন। তখন থেকে নিয়মিত বাংলায় রায়-আদেশ দিচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মামলায় ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতি রায় দেন। তাদের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল বাংলায় রায় লেখেন। এরপর থেকে তিনি বাংলায় রায় ও আদেশ দিচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্ট বিভাগের বেশ কয়েকজন বিচারপতি বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রয়াত বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান, বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহ, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম, বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান, বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী, বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান, বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেন রয়েছেন।

যা আছে সংবিধান ও আইনে:
সংবিধানের তৃতীয় অনুচ্ছেদ বলছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। এই বিধান পূর্ণভাবে কার্যকরে ১৯৮৭ সালের ৮ মার্চ বাংলা ভাষা প্রচলন আইন করা হয়। বাংলা ভাষা প্রচলন আইনের (১) ধারা বলছে, ‘এই আইন প্রবর্তনের পর দেশের সর্বত্র, তথা সরকারি অফিস-আদালত, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে নথি ও চিঠিপত্র, আইন-আদালতের সওয়াল-জবাব এবং অন্য আইনানুগ কার্যাবলি অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে।’ আইনটি পাসের পর থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দাপ্তরিক আদেশ ও নির্দেশনা বাংলায় হচ্ছে।

তবে সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার প্রচলন না হওয়ায় প্রতিকার চাইতে কেউ কেউ আদালতের দ্বারস্থও হন। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ২১ ফেব্রুয়ারিসহ অন্য জাতীয় দিবসগুলো পালনে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা তারিখ ব্যবহারে নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার বাসিন্দা মো. নস্কর আলী রিট করেন। একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এখনো বিবাদীরা রুলের জবাব দেননি। রুল চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সব ক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ। ওই বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। রুল এখনো নিষ্পত্তি হয়নি জানিয়ে সম্প্রতি তিনি বলেন, আদেশের পরও বিভিন্ন জায়গায় সাইনবোর্ড ও নম্বরপ্লেট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামফলকে ইংরেজি দেখা যায়।

মৌলিক আইন বাংলায় অনুবাদ করতে কমিটি গঠনের নির্দেশ:
দেশের প্রচলিত মৌলিক আইনের বাংলায় অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রণয়ন ও প্রকাশে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। কমিটিকে অবিলম্বে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলেন উচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ ও বাংলা বিভাগ, আইন কমিশনের প্রতিনিধির সমন্বয়ে আইন মন্ত্রণালয়কে এ কমিটি করতে বলা হয়।

নিম্ন আদালতে শতভাগ, উচ্চ আদালতে বাংলার প্রচলন কতদূর:

সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবীর করা রিটের শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১৪ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। রুলে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনায় অর্থবহভাবে বাস্তবায়ন করতে দেশের প্রচলিত মৌলিক আইনের বাংলায় অনূদিত নির্ভরযোগ্য পাঠ প্রণয়ন ও প্রকাশে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান আদালত।রিটের আগে এই ১০ আইনজীবী নোটিশ দিয়েছিলেন। নোটিশে বলা হয়েছিল, আদালতের যাবতীয় কার্যাবলি আইনের আলোকে পরিচালিত হয়। আদালতের কার্যক্রম সংক্রান্ত মৌলিক আইনগুলো হলো—দণ্ডবিধি-১৮৬০, সাক্ষ্য আইন-১৯৭২, চুক্তি আইন-১৮৭২, সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন-১৮৭৭, সিভিল কোর্টস অ্যাক্ট-১৮৮৭, সম্পত্তি হস্তান্তর আইন-১৮৮২, ফৌজদারি কার্যবিধি-১৮৯৮, দেওয়ানি কার্যবিধি-১৯০৮ এবং তামাদি আইন-১৯০৮, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (আপিল বিভাগ) রুলস-১৯৮৮, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট (হাইকোর্ট বিভাগ) রুলস-১৯৭৩, ক্রিমিনাল রুলস অ্যা অর্ডারস-২০০৯, সিভিল রুলস অ্যা অর্ডারস। এসব আইনের অধিকাংশই ব্রিটিশ আমলের এবং ইংরেজি ভাষায় প্রণীত।

ওয়েবসাইটে প্রকাশিত রায় দেখা যাবে বাংলায়:
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায়-আদেশ এখন থেকে বাংলায় দেখতে ২০২৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি একটি প্রযুক্তিসেবার উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, রায় ও আদেশের ঘরে নির্দিষ্ট মামলা ক্লিক করলে নিচে অনুবাদ (গুগল) বের রয়েছে। এতে ক্লিক করলে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায়টি আসবে। এর ওপরের দিকে ডান পাশে ‘ভাষা নির্বাচনের’ অপশন রয়েছে। ভাষা হিসেবে বাংলা নির্বাচনের পর রায়টি বাংলায় দেখা যাবে। তবে এতে ভাষা ও শব্দগত কিছু দুর্বলতা দেখা যায়, যা ব্যবহারের মধ্য দিয়ে দ্রুত কেটে যাবে।এ বিষয়ে আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত সব রায়-আদেশ গুগলের প্রযুক্তির সহায়তায় যে কোনো ব্যক্তি বাংলায় অনুবাদ করে দেখতে পারবেন। এতে বিচারপ্রার্থী তার মামলার ফলাফল সম্পর্কে অন্তত প্রাথমিকভাবে জানতে পারবেন। প্রযুক্তির এই সংযোজন দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে নতুন এক মাত্রা যোগ করেছে। তবে শব্দ ও ভাষাগত কিছু দুর্বলতা এখনো আছে।ওয়েবসাইটে ইংরেজিতে প্রকাশিত রায় গুগলের মাধ্যমে বাংলায় অনুবাদ করলে ওপরে ‘দায়বর্জন বিবৃতি’ দেখা যায়। যেখানে বলা আছে, জনসাধারণের বিচারপ্রক্রিয়ায় সহজ অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণের অভিপ্রায়ে বাংলায় অনূদিত রায়-আদেশ দেখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অনূদিত রায় বা আদেশের অনুলিপি সইমুহুরি বা জাবেদা নকলের বিকল্প হিসেবে অথবা অন্য কোনো উদ্দেশে ব্যবহার করা যাবে না।

Top
%d bloggers like this: