বন্ধুত্বের অনন্য নিদর্শন যৌথ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
বেশ কয়েকটি আসনে স্বতন্ত্র সংসদ-সদস্যের ক্ষমতার কাছে অসহায় তারা সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতার তথ্য গোপন করতেই এমন উদ্যোগ দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদের তথ্য প্রকাশ করতে হবে দেশের আবহাওয়ায় বিরাজ করছে মরুভূমির তাপ,বৃষ্টির বাতাস সরে গেছে চীনের দিকে আকাশে বুলেট-বারুদের ধোঁয়া,ঘুম থেকে উঠলেই সাইরেনের শব্দ তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না,জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের উন্নতি হয়নি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান না দেখালে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসাবেই গণ্য করা হবে

বন্ধুত্বের অনন্য নিদর্শন যৌথ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যৌথ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনন্যসাধারণ বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতার প্রমাণ দিয়েছে। প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখলে যে দেশের উন্নতি হয়, আমরা সেটাই প্রমাণ করেছি। আমি মনে করি, বিশ্বের জন্য এটা একটা দৃষ্টান্ত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তিনটি উন্নয়ন প্রকল্পের যৌথভাবে উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বুধবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঢাকা থেকে শেখ হাসিনা এবং নয়াদিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদি অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।
ভারতের সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা (মোদি ও আমি) আজ (বুধবার) যৌথভাবে তিনটি প্রকল্পের উদ্বোধন করেছি। এগুলো দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যকার অনন্যসাধারণ বন্ধুত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতারই বহিঃপ্রকাশ। সামনের দিনগুলোয় আমাদের যৌথ সহযোগিতার দৃষ্টান্তস্বরূপ আরও এমন অনেক সাফল্যের উদাহরণ তৈরি হবে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে বাংলাদেশ সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোয় আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছি। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি, ব্যবসাবাণিজ্য বৃদ্ধি, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজীকরণসহ আরও অনেক কিছু আমরা করেছি। বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ খাতে আমাদের অর্জন দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আরও সাশ্রয়ী মূল্যে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ প্রদানের মাধ্যমে বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিশেষ অবদান রাখবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে অন্য ব্যয়বহুল উৎসের ওপর থেকে আমাদের নির্ভরতা কমিয়ে আনবে। পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে সহায়তা করবে। আখাউড়া-আগরতলা রেলসংযোগ আমাদের দুদেশের জনগণের মধ্যে, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশের সঙ্গে সংযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিকরণ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। খুলনা-মোংলা বন্দর রেলসংযোগ প্রকল্পটি মোংলা বন্দরকে বিদ্যমান রেল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সারাসরি যুক্ত করবে। এতে আমদানি করা কনটেইনারগুলো সহজে রেলের সাহায্যে দেশের উত্তর-পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে পরিবহণ সম্ভব হবে। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমরা দুদেশের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার মাধ্যমে অনেক বাস্তব ফলাফল অর্জন করেছি। এর মধ্যে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণ, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারতের অন্য রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযোগ সহজীকরণ প্রভৃতি।

জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো এবং উষ্ণ আতিথেয়তা প্রদর্শনের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জনগণ ও তার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী চিরজীবী হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে আসন্ন দীপাবলি উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ভারতের জনগণকে তার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তৃতা শেষ করেন শেখ হাসিনা।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয়-আমরা আবার ভারত-বাংলাদেশ পারস্পরিক সহযোগিতা উদ্যাপন করতে একত্রিত হয়েছি। আমাদের সম্পর্ক আপাতদৃষ্টিতে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তর করতে বাংলাদেশের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ড. মানিক সাহা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন। প্রকল্পগুলো হলো-আখাউড়া-আগরতলা রেলসংযোগ, খুলনা-মোংলা বন্দর রেলসংযোগ এবং মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্লান্টের দ্বিতীয় ইউনিট।

নগদ লেনদেনবিহীন সমাজ দেশের উন্নয়ন ও রাজস্ব সংগ্রহ সহজ করবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে নগদ লেনদেনবিহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা উন্নয়নকে ত্বরান্বিত এবং রাজস্ব সংগ্রহ সহজ করবে। বুধবার সকালে গণভবনে বাংলাদেশের নিজস্ব কান্ট্রি কার্ড স্কিম ‘টাকা পে’ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, যখন আমরা একটি নগদ লেনদেনবিহীন সমাজ গড়ে তুলতে পারব, তখন এটি দুর্নীতি হ্রাস, দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত এবং রাজস্ব আদায় সহজ করবে। তিনি বলেন, অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্যে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকেও স্বাধীন ও সার্বভৌম হতে হবে।

প্রতিটি কার্ডধারীর তথ্য নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি, এ নেটওয়ার্কের নিরাপত্তাব্যবস্থা ভালোভাবে সুরক্ষিত থাকবে। বিশেষ করে ফায়ারওয়াল ফুলপ্রুফ তৈরিতে আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। ‘টাকা পে’ কার্ড বাংলাদেশে নগদ লেনদেনবিহীন সমাজ গঠনের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে। তিনি বলেন, আমরা অন্য কারও ওপর নির্ভরশীল হব না। আমরা আমাদের অর্থ আমাদের দেশেই ব্যবহার করব। এ সিস্টেমকে অন্য দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করার চেষ্টা করব। আমাদের অবশ্যই হার্ড কারেন্সির ওপরও নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি), সোনালী ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংক ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক ‘টাকা পে’ জাতীয় কার্ড প্রকল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। টাকা পে কার্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতায় বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক এবং ব্র্যাক ব্যাংকের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ইস্যু করছে।

Top
%d bloggers like this: