বরিশাল সদর জগদীশ স্বারস্বত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ- খবরের তুবড়ি/ঝুড়ি প্রধান শিক্ষক শাহআলম - Alokitobarta
আজ : বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বরিশাল সদর জগদীশ স্বারস্বত মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ- খবরের তুবড়ি/ঝুড়ি প্রধান শিক্ষক শাহআলম


বরিশাল অফিস:অর্থনৈতিক লুটপাট, বালিকা শিক্ষার্থী ও শিক্ষিকাদের প্রতি কুদৃষ্টি এবং অন্যান্য জনবলদের সাথেঅসদাচারণসহ অভিযোগের একাধিক তদন্তের মুখোমুখি হচ্ছে বরিশাল নগরীর জগদীশ স্বারস্বত বালিকামাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহআলম। একাধিক শিক্ষিকা থানায় তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী,জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় মাধ্যমিক দপ্তরেও অভিযোগ দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন,মাধ্যমিক দপ্তর থেকে ইতিমধ্যে তদন্ত টিম বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে। এব্যাপারেগতকাল সকালে প্রধান শিক্ষক শাহআলম বলেন, এই মাত্র তদন্ত টিম এসেছে আমি বিব্রত। এনিয়ে আপনাদেরসাথে পরে কথা বলবো। কিন্তু অভিযোগুলোর ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন,আমার বিরুদ্ধে তারা জিডি করেছে আমিও করেছি। শুধু তাই নয় আমাকে কতিপয় শিক্ষক মারধরও করেছেযেকারণে আমি জিডি করেছি। এনিয়ে অনুসন্দানসুত্রে আরো জানা গেছে, ১২শ শিক্ষার্থী সমৃদ্ধস্বারস্বত স্কুলে ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর যোগদান করেন প্রধান শিক্ষক শাহআলম। এরপর থেকে তিনি কতিপয়পদক্ষেপ নিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে প্রতি শিক্ষার্থী প্রতি টিফিন ২শ টাকা। অথচ বিগত দিনগুলোতেছিলো ৬০ টাকা। বেতন করেছে দ্বিগুন বাড়িয়ে করেছে ২শ টাকা। টিফিন বাবদ প্রতি মাসে ২লাখ ৪০হাজার টাকা। এর বিপরীতে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীদের টিফিন দিয়েছে মোট ১লাখ ২০ হাজার। কিন্তু এরবিপরীতে ঔ বছর টিফিন বাবদ আয় আদায় করেছে ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। আর ২০১৯ সালে অধ্যবধি কোনটিফিন দেয়া হয়নি। অথচ চলতি বছরে টিফিনের বিপরীতে ১২শ শিক্ষার্থী থেকে টিফিন বাবদ তিনমাসে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে। টিফিন দেয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রীদের হাজিরা খাতা অনুযায়ী শ্রেণীশিক্ষকের স্বাক্ষরিত নোট তৈরী করে মোট উপস্থিতি অনুযায়ী টিফিন দেয়া হয়। এতে রয়েছে ৫ টাকাদামের সিঙ্গারা, ৫ টাকা দামের কেক/৪ টাকা দামের বনরুটি। কিন্তু এই টিফিনের বিপরীতে কেন ২শ টাকানেয়া হয় জানতে চাইলে কোন সদুত্তর নাদিয়ে প্রধান শিক্ষক বলেন আমরা নেই।

এদিকে বছরে ৬/৭ মাসপাঠদান কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। বাকি মাসগুলো পরীক্ষা, দিবস, বিশেষ বন্ধ, পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় পাঠদান বন্ধথাকে। তাহলে পুরো বছর অর্থাৎ ১২ মাসের টিফিন কেন নেয়া হয় এরও কোন সুদত্তর মেলেনি। অপরদিকেপ্রধান শিক্ষক শাহআলম ২৪/৬/২০১৮ তারিখ নগরীর সদর রোড শাখার অগ্রণী ব্যাংকে তার ব্যক্তিগত হিসাবনাম্বারে ০২০০০০৩৩৬১৯৬৪ ১লাখ ৯শ ৫০ টাকা। তার পরের দিন ৬০ হাজার ৫শ ৭০ টাকা। শুধু তাই নয় উন্নয়নেরনামে ভুয়া ভাউচার দিয়ে ৬০ লাখ টাকা উঠিয়েছে স্কুলটির অগ্রণী ব্যাংক হিসেব নং০২০০০০৩৪১৪৪০৯থেকে। ৮/১০/২০১৭ তারিখ থেকে ১০/৫/২০১৮ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সভাপতির সাথে যোগসাজস করেএটাকা উঠানো হযেছে। ২টি কক্ষ টাইলস করা, রং করা, ফলস সিলিং, দুটি কেসি গেইট, দশটি কাঠেরচেয়ার ক্রয়সহ বিভিন্নধরণের ভাউচারের মাধ্যমে। কিন্তু স্কুল ম্যনেজিং কমিটির নিয়মানুযায়ী সকল আয়দিন শেষে ব্যাংক হিসেবে সংরক্ষিত থাকবে। এরপর ব্যায়ের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তের পর প্রধানশিক্ষক ও সভাপতির যৌথ স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন হবে। অথচ ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই প্রধানশিক্ষক ও সভাপতি টাকা উত্তোলণ করে তাদের সুবিধামতো ব্যয় ভাউচার তৈরী করেছে বলে সুত্রে জানা গেছে।এব্যাপারে স্কুলটির সাবেক সভাপতি নিজামুল ইসলাম বলেন, আমি কোন দুর্ণীতি করিনি বরং উন্নয়নকরেছি। স্বারস্বত স্কুলটিতে এহেন কর্মকান্ডের ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক মো: অজিয়র রহমান বলেন,এডিসি রাজস্ব ও একজন মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাসহ একটি তদন্ত টিম গঠিত হয়েছে। কিন্তু আপনিএখন স্কুলটির সভাপতি সেক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক স্কুলের টাকা স্কুলের হিসাব নম্বরে জমা দিয়ে তার ব্যক্তিগতহিসাবে জমা করছেন বিষয়টি জানেন কিনা জানতে জেলা প্রশাসক আরো বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে সকল বিষয়স্পষ্ট হবে এবং প্রকৃত দোষী কে উদঘাটিত হবে। ছাত্রীবহুল এ স্বারস্বত স্কুলটির প্রধান শিক্ষক শাহআলমেরএহেন দুর্ণীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অবরুদ্ধ করে রাখে গত বছর এসএসসিফলাফলের পর। এঘটনায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানাগেছে। শুধু তাই নয় উক্ত প্রধানশিক্ষকের বিরুদ্ধে নগরীর কোতয়ালি থানায় ১৬/৪/২০১৮ তারিখ স্কুলটির সহকারি শিক্ষিকা সন্ধ্যা রানি,রোজিনা মমতাজ নুপুর, লাকী, সীমা রানিসহ ১৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা জিডি করেন কুদৃষ্টিজনিতআচরণের কারণে। যার নং-৮৯৪, ৮৮৯, ৮৯৮ ও ৮৯১সহ আরো একাধিক।

এদিকে একাধিক অভিভাবকেরঅভিযোগসুত্র জানায়, আমাদের মেয়েরা স্কলে যেতে চায়না কারণ প্রধান শিক্ষক মেয়েদের দিকে কুনজড় দেয়এবং অসংলগ্ন আচরণ করে। স্বারস্বত স্কুলটিতে দুর্ণীতির নিয়ে সুত্রে আরো জানা গেছে, বরিশালবিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে অভিযোগ দেয়া হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রæয়ারী মাসে। এরপর শিক্ষামন্ত্রণালয়ে গত বছর অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ জেলা প্রশাসক বরাবরও অভিযোগ দেয়া হয়েছে।আর এরই প্রেক্ষিতে স্কুলটিতে কিছুদিন পরপর তদন্ত কার্যের হ্যপা দেখা যাচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল তদন্তকরেছে শিক্ষা ও কল্যাণ শাখার ম্যাজিস্ট্রেট, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষাঅফিসারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। নগরীর প্রাণ কেন্দ্রে শিক্ষার্থীবহুল এ পুরানো স্কুলটিতে দুর্ণীতিরবিষয়ে বরিশাল বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো: ইউনুস বলেন, বিদ্যালয়ে কলেজ শাখা নিয়ে স্থানীয়পর্যায়ে বিরোধ রয়েছে। জেলা প্রশাসক এই বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ায় বিষয়টি তিনিই দেখছেন।

Top
%d bloggers like this: