মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিলেও কাউন্সিলর পদ উন্মুক্তই - Alokitobarta
আজ : সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিলেও কাউন্সিলর পদ উন্মুক্তই


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিলেও কাউন্সিলর পদ উন্মুক্তই রাখছে আওয়ামী লীগ। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে কাউকে দলীয় সমর্থনও দিচ্ছে না ক্ষমতাসীনরা। ফলে প্রতিটি ওয়ার্ডেই দলীয় প্রার্থীর ছড়াছড়ি। ইতোমধ্যেই গড়ে ৩-৪ জন করে নেতা মনোনয়নপত্র কিনেছেন। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। কোনো কোনো ওয়ার্ডে ৮-১০ পর্যন্ত কাউন্সিলর প্রার্থী আছেন। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা চান- ভোটকেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এবং বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়িয়ে নির্বাচনি আমেজ ধরে রাখতে। ফলে কাউকেই নির্বাচনি মাঠ থেকে সরাবে না তারা।

গাজীপুর : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৫৭ ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন ২৩৯ জন। সংরক্ষিত ১৯ ওয়ার্ডে প্রার্থীর সংখ্যা ৭৭। কাউন্সিলর প্রার্থীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। বিএনপি এবং অন্যান্য দল বাদ দিলেও গড়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩-৪ জন করে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। কোনো কোনো ওয়ার্ডে এই সংখ্যা ৮-১০। তাদের কাউকেই দলের সমর্থন দেয়নি আওয়ামী লীগ। কাউকে বসাতেও চায় না তারা। এ নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা যুগান্তরকে বলেন, কাউন্সিলর পদে আমরা কাউকে সমর্থনও দিচ্ছি না, কাউকে বসতেও বলছি না। আমরা চাই কেন্দ্রে ভোটার আসুক, নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হোক।

সিলেট : সিলেট সিটি নির্বাচনে সোমবার পর্যন্ত কাউন্সিলর পদে ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭২ জন ও ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে ২৪৯ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। এই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এই সিটিতেও গড়ে ৩-৪ জন করে দলীয় নেতা কাউন্সিলর পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। ২৩ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে। ফলে প্রার্থীর সংখ্যা আরও বাড়বে।জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, কাউন্সিলর পদ উন্মুক্তই থাকছে। কাউন্সিলর পদে দল থেকে কাউকেই মনোনয়ন বা সমর্থন দেওয়া হচ্ছে না।

খুলনা : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সোমবার পর্যন্ত সাতজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে ১৮৭ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর ১৫০ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৩৭ জন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনোনয়ন ফরম কেনা কাউন্সিলর প্রার্থীদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী। ইতোমধ্যে ৩১ ওয়ার্ডের দু-তিনটি ছাড়া প্রায় প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে গড়ে ৩-৪ জন করে আওয়ামী লীগ নেতা প্রার্থী হয়েছেন। আগামী ১৬ মে এই সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হবে। ফলে এই সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে জানা গেছে।দলীয় সূত্র জানায়, পাঁচ সিটির মধ্যে খুলনায় মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী নিয়ে বেশ স্বস্তিতেই আছে আওয়ামী লীগ। তবে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় এই সিটির ভোট নিয়ে খুব একটা উত্তাপ নেই। এখন কাউন্সিলর পদে দলীয় সমর্থন দিলে ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। ফলে এই সিটিতেও কাউন্সিলর পদ উন্মুক্ত রাখার পরিকল্পনা রয়েছে আওয়ামী লীগের।

বরিশাল : বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ৩০টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে সোমবার পর্যন্ত ১৮০ জন কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এই কাউন্সিল প্রার্থীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। ইতোমধ্যে গড়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৩-৪ জন করে আওয়ামী লীগ বা সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী প্রার্থী হয়েছেন। কোনো ওয়ার্ডে এই সংখ্যা আরও বেশি, ৫-৬ জনও আছে। এই সিটিতে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হবে আগামী ১৬ মে। ফলে কাউন্সিলর প্রার্থীর এই সংখ্যা আরও বাড়বে।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশালে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী বদলের পরেই বরিশালের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়েছে। কাউন্সিলর পদে নির্বাচনেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। অনেক ওয়ার্ডেই সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়র প্রার্থী দুজনের অনুসারীরাই নির্বাচনি মাঠে আছেন। যদিও অন্য সিটির মতো এখানেও কাউন্সিলর পদে দল থেকে কাউকে সমর্থন দেওয়া হয়নি।

রাজশাহী : রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এ পর্যন্ত মেয়র পদে একজন এবং ১০টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ২৫ জন, ৩০টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৭৪ জন মনোনয়নপত্র তুলেছেন। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেওয়া যাবে। ফলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতেও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রার্থীর ছড়াছড়ি। প্রতিটি ওয়ার্ডেই তাদের একাধিক নেতা প্রার্থী হচ্ছেন। দল থেকে কাউকে সমর্থন না দিলেও এদের সবাই মেয়র লিটনের অনুসারী বলে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের কৌশল হলো প্রথমে বর্তমান মেয়র লিটনের পক্ষ নিয়ে দোয়া চাইছেন। এছাড়া মেয়র পদে জোটগতভাবে মাঠে থাকলেও ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে দুটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী দিচ্ছেন।

Top
%d bloggers like this: