ক্যান্সার সনাক্তের মেশিন পেটস্ক্যান ক্যান্সার শনাক্ত করতে গিয়ে ক্যান্সার বানায় - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ

ক্যান্সার সনাক্তের মেশিন পেটস্ক্যান ক্যান্সার শনাক্ত করতে গিয়ে ক্যান্সার বানায়


নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ ন্যাচারোপ্যাথিতে ইউ এস এ থেকে পি এইচডি ডিগ্রিধারী ডাঃ শিবেন্দ্র কর্মকার বলেছেন, ক্যান্সার সনাক্তের মেশিন পেটস্ক্যান ক্যান্সার শনাক্ত করতে গিয়ে ক্যান্সার বানায়।তিনি তার ফেসবুক পেজে এধরণের হুশিয়ারি দেন। তিনি বিবরনে বলেন,

PET scan কিভাবে কাজ করে:
মানব কোষ ‘ গ্লুকোজ ’ ব্যবহার করে দেহের জন্য শক্তি উৎপাদন করে। এই উৎপাদিত শক্তিই কোষের সকল প্রাণ রাসায়নিক সংশ্লেষন ও বিশ্লেষনে ব্যবহৃত হয়। তাই গ্লুকোজ মেটাবলিজমে এর কোন ত্রুটি থাকলে দেহে নানা রকম রোগ দেখা দেয়। কোষে গ্লুকোজের কার্যকারীতা পরীক্ষার জন্য মূলতঃ পেট স্ক্যান ব্যবহার করা হয়। গ্লুকোজের একটি অনুরূপ (এনালগ) বিজ্ঞানীরা তৈরি করেছেন। এই এনালগ গ্লুকোজের সাথে একটি তেজষ্ক্রিয় পদার্থ ফ্লোরিন-১৮ যুক্ত করা হয়। এটি অতি শক্তিশালী গামা-রে নিক্ষেপ করে। এই তেজষ্ক্রিয় ফ্লোরিন যুক্ত তৈরিকৃত নতুন গ্লুকোজটির নাম FDG’(Flourin Deoxy glucose । এই তেজষ্ক্রিয় গ্লুকোজ রক্তস্রোতে প্রবেশ করানো হয়। কোষ স্বাভাবিক নিয়মেই এই গ্লুকোজ গ্রহণ করে । গ্লুকোজের মেটাবলিজমের প্রতিটি স্তরে , তেজষ্ক্রিয় ফ্লোরিনের বিকিরন চলতে থাকে। আর এই বিকিরন শক্তিই সংকেত আকারে বিশেষ কম্পিউটার প্রযুক্তির মাধ্যমে সংরক্ষন করা হয়। একটি বিশেষ ধরনের সফটওয়ার , সংরক্ষিত সংকেত গুলুকে একত্রিত করে একটি পূর্ন ‘ইমেজ ’প্রদান করে।
গবেষনায় জানা গেছে দেহের স্বাভাবিক কোষের চেয়ে ক্যান্সার কোষ সবচেয়ে বেশি পরিমান ‘গ্লুকোজ’ ব্যবহার করে। স্বাভাবিক নিয়মেই ‘ক্যানসার কোষ’ থেকে অধিক পরিমান বিকিরন রশ্মি গ্রাহক যন্ত্রে ধরা পড়ে। এবং বিশেষজ্ঞ স্বাভাবিক কোষ ও ক্যানসার কোষের পার্থক্য নির্ণয় করেন। পেট স্ক্যান ১ থেকে ২ সে:মি: আয়তনের টিউমার সনাক্ত করতে পারে। কিন্তু ক্যান্সার গবেষনায় জানা গেছে যে, দেহে যখন টিউমার সৃষ্টি হয় তখন সেটির আয়তন হয় ১সে:মি; এর ১০০০ ভাগের ১ ভাগ। অর্থাৎ ১ সে:মি: এর কম আয়তন বিশিষ্ট টিউমার কোষ পেট স্ক্যান সনাক্ত করতে সক্ষম নয়।
PET Scan এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া: তেজষ্ক্রিয় ফ্লোরিনের বিচ্ছুরিত অতি শক্তিশালী বিকিরন (গামা-রে প্রতি সেকেন্ডে গতি ১লক্ষ ৮৬ হাজার মাইল) কোষের DNA এর স্থায়ী ক্ষতি সাধন করে। যা কোষের স্থায়ী রোগ,ক্যন্সার,টিউমার এবং বংশগত নানা রোগের সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া তিনি আর একটি পেজে বলেছেন, প্রকৃতির শক্তি ; ক্যান্সার থেকে দিতে পারে মুক্তি! তার মতে
ক্যান্সার শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন রোমান চিকিৎসক সেলসাস প্রায় ২ হাজার বৎসর অাগে। ক্যান্সার এর ল্যাটিন শব্দ’ ক্র্যাব’ দেখতে অনেকটা কাকড়ার মত। তারও অাগে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক গ্রীক চিকিৎসক হিপোক্র্যাটস এটিকে ‘ কার্নিওস’ ও ‘ ‘কার্সিনোমা ‘ নাম দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে গ্রীক চিকিৎসক গ্যালেন এটিকে ‘অনকো’ নাম দিয়েছিলেন। এটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ ফোলা স্থান। অাধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসকদের বলে অনকোলজিষ্ট।

ক্যান্সার চিকিৎসা পদ্ধতি কি হবে তা জানতে হলে অবশ্যই ক্যান্সার কি ধরনের রোগ এটি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা নিতে হবে।

ক্যান্সার দেহের কি ধরনের রোগ এটি বুঝার জন্য প্রথমে দেহ কোষ নিয়ে একটু ধারনা নিতে হবে কারন এটি কোষের একটি জটিল প্রানরাসানিক সমস্যা।

দেহ গঠনের একক হচ্ছে কোষ। এ দেহ প্রায় ১০০ ট্রিলিয়ন জীবন্ত কোষ দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ এক কথায় বুঝাতে গেলে এ দেহে কোষ ব্যাতিত অন্য কিছু নেই। ক্যান্সার কোষের একটি অসুখ, এটি দেহের যে স্থানেই হোকনা কেন। ক্যান্সারের নামকরন কর হয় দেহের যে অঙ্গের কোষটি ক্যান্সারে পরিনত হয় সে অঙ্গের নাম অনুসারে। যেমন, হার্টের ক্যান্সার,কিডনির ক্যান্সার,ব্রেইন ক্যান্সার,স্কিন ক্যান্সার ইত্যাদী। তবে মেডিকেলের ভাষায় ক্যান্সার দু’ধরনের। ১) এডেনোমা ২) সারকোমা।

যেমন,হার্ট,কিডনি,লিভার,ব্রেইন সহ যে কোন টিস্যুর ক্যান্সারকে সারকোমা বলে।

দেহের গ্ল্যান্ড বা গ্রন্থির ক্যন্সারকে এডেনোমা বলে।

একটি জীবন্ত কোষের দেহ গঠন একটু বুঝলে ক্যান্সার কোষের কোন স্থানে হয় তা জানা সহজ হয়। একটি কোষ দেহের প্রধান যে কয়টি অঙ্গ থাকে তার একটি নাম ক্রমোজম। একটি কোষে ২৩ জোড়া ক্রমোজম থাকে। এর ২৩ জোড়া অর্থাৎ ৪৬ টি ক্রমোজম এর ২৩ টি বাবার শুক্রানু এবং ২৩ মায়ের ডিম্বানু থেকে এসেছে। প্রতিটি ক্রমোজম অসংখ্য জিন (জেনিটিক্যাল কোড) দিয়ে তৈরি। প্রতিটি কোষের ২৩ জোড়া ক্রমোজমে প্রায় ৩০ হাজার জিন রয়েছে। পুরো দেহের মানচিত্র এবং প্রানরসায়ন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কোটি কোটি প্রোটিন তৈরির নির্দেশনা রয়েছে এ জিনের মধ্যে।

এ কোষ সেকেন্ডে লক্ষ লক্ষ কাজ করে। তার মধ্যে প্রধান একটি কাজ হচ্ছে কোষ বিভাজন। একটি কোষ বিভাজিত হয়ে দুটি পূর্নাঙ্গ কোষে পরিনত হয়ে দেহ প্রানকে চলমান রাখে। মাতৃ জড়ায়ুতে জন্ম থেকে বিভাজন শুরু হয়েছে এবং মৃত্যুতে এ বিভাজন থামবে। অার কোষের সব কাজ পরিচালিত হয় জিন এর নির্দেশে। অামাদের দেহের ভিতর বাহিরের সবই কোষের কাজ।

কোষ বিভাজন একটি নিয়ম মেনে চলে। অর্থাৎ দেহের প্রয়োজন ছাড়া কোষ বিভাজন হয়না। এ জন্যই অামাদের দেহ অাকৃতি একই রকম থাকে।

বিভাজন শুরুর অাগে কোষের ক্রমোজম হুবহু দুটি কপি করে। যেহেতু প্রত্যেকটি কোষের ভিতর পুরো দেহের তথ্য লিপিবদ্ধ অাছে তাই কোষ বিভাজন সম্পন্ন হলে প্রতিটি নতুন কোষে পুরো দেহের তথ্য অবিকল থাকে।

ক্রমোজম এর কপি তৈরি হওয়ার কৌশল নিয়ে একটু কথা বলব। কারন ক্যান্সার এর জন্য মুলতঃ ক্রমোজম এর ভুল কপি হওয়াই দায়ী। সুখবর এই যে, ক্রমোজম এর ভুল কপি খুব কম তৈরি হয়। গবেষনায় জানা গেছে ক্রমোজম’ এর কপি তৈরি হওয়ার সময় প্রতিটি কোষে প্রতিদিন ১০ লক্ষ ভুল সংশোধন হয়। এ কাজটি করার জন্য অন্যান্য জিন দায়িত্ব পালন করে।

দেহের সকল কোষের প্রতিটিতেই সম সংখ্যক জিন থাকে। কিন্তু সব কোষের সব জিন সক্রিয় নয়। একএকটি অঙ্গে অালাদা জিন সক্রিয় থাকে। এ জন্য সকল কোষ একরকম হওয়া সত্বেও অঙ্গগুলোর ভিন্ন কাজ হয়। যেমন হার্টের কোষের কাজ সংকোচন প্রসারন,অাবার ব্রেইন কোষের কাজ সংবাদ পরিবহন।

কি কি উপকরন দিয়ে এ ক্রমোজম তৈরি তা একটু জেনে নেই। এটি জোড়ায় জোড়ায় থাকে। প্রতিটি ক্রমোজম অসংখ্য জিন( জেনিটিক্যাল কোড) দিয়ে তৈরি। প্রতিটি জিন অসংখ্য ডিএনএ দিয়ে তৈরি। প্রতিটি ডিএনএ অসংখ্য নিউক্লিটাইড দিয়ে তৈরি। প্রতিটি নিউক্লিটাইড তৈরি হয় একটি রিবোস সুগার,ফসফরিক এসিড ও একটি নাইট্রোজেন জৈব অনু পিউরিন বা পাইরিমিডিন।

এক কথায় বলতে গেলে ক্রমোজম তৈরি নিউক্লিটাইড দিয়ে। একটি দেহ কোষের ভিতর ১২ বিলিয়ন নিউক্লিটাইড রয়েছে। এ নিউক্লিটাইড জোড়ায় জোড়ায় একত্রিত হয়ে একটি ডিএনএ তৈরি করে। এ ডিএনই হচ্ছে গোপন সংকেত যেটি দেহের ভিতর ও বাহিরের কার্যকরী প্রোটিন তৈরির নির্দেশ প্রদান করে। একটি জিন অনেক ডিএনএ এর একক। এ জন্য একটি জিন কয়েশত থেকে হাজার প্রোটিন তৈরির নির্দেশনা প্রদান করে। এ জিন যদি ত্রুটি যুক্ত হয় তবেই দেহে নানা রোগ তৈরি হয়। ৩ থেকে ৪ টি জিনের ত্রুটিপূর্ণ অাচরনের জন্য দেহে ক্যান্সার হয়।

এখন অালোচনা করব কোন কোন জিনের ত্রুটিপূর্ণ অাচরনের কারনে দেহে ক্যান্সার হয়।
কয়েকটি জিনের নাম হচ্ছে, টিউমার সাপ্রেসর জিন,অনকোজিন,এপপটোসিস জিন। এক কথায় এ জিনগুলোর কাজ হচ্ছে, কোষকে টিউমার,ক্যান্সাারে রূপান্তরের হাত থেকে রক্ষা করে দেহকে নিরাপদ রাখা।

জিনের মিউটেশন ঘটার মাধ্যমে জিনের মুল প্রোটিন তৈরির চরিত্র বদলে যায়। এতে দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি হয় না বা নতুন জাতের কোন প্রোটিন তৈরি করে যা দেহের জন্য ক্ষতিকর।

উপরিউক্ত অালোচনা এটি স্পষ্ট হলো যে, জিনের মিউটিশন এর কারনে দেহে ক্যান্সার হয়। প্রশ্ন কি কি কারনে এ মিউটিশন হয় এবং মিউটেশন কমাতে পারলে প্রাকৃতিক ভাবেই ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব।

ক্রমোজম এর কপি হওয়ার সময়ে এ মিউটেশন ঘটে। এছাড়া বিকিরন(রেডিয়েশন) ও কার্সিনোজেন (সিনথেটিক ক্যামিক্যল) এর বারবার অাঘাতে কারনে জিন মিউটেশন ঘটে। বয়স্ক কোষে ও তরুন কোষে বেশী মিউটেশন হয়। মিউটেশন হচ্ছে ডিএনএ গাঠনিক পরিবর্তন।

এতক্ষনের অালোচনায় এটি স্পষ্ট বোঝা গেল কোষের কিছু জিনের পরিবর্তনগত অাচরন হলো ক্যান্সার। কিছু জিন কোষের প্রয়োজনীয় বিভাজনের নির্দেশ দেয়,অাবার কিছু জিন অপ্রয়ােজনীয় বিভাজন থামিয়ে দেয়। কিছু জিন ত্রুটিপূর্ণ, অসুস্থ্য, বয়স্ক কোষকে হত্যা করে। এর যে কোন একটি জিনের মিউটিশন এর কারনে দেহের যে কোন স্থানে ক্যান্সার হতে পারে।

অাসলে ক্যান্সার হচ্ছে দেহ কোষের অনিয়মিত ও অপ্রয়ােজনীয় বিভাজন। অনিয়মিত বিভাজন থেকে প্রথমে টিউমার পরে ক্যান্সার। বুঝাতেইতো পারছেন দেহ অঙ্গের কোন কোষ টিউমার বা ক্যান্সারে রূপ নিলে সেটি দেহের জন্য ভয়ংকর পরিনতি ডেকে অানতে পারে। কারন ক্যান্সার কোষ দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং সারা দেহে ছড়িয়ে পরে। সুখবর হচ্ছে এ ধরনের ঘটনা দেহে খুবই কম ঘটে। দেহে প্রতিদিন প্রতিটি কোষে ১০ লক্ষ ভুল সংশোধন হয়ে দেহকে বিপদ মুক্ত করে।

দেহের নিজস্ব এত সর্তকতার পরও নানা কারনে দেহে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে। এ ক্ষেত্রে অাধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসায় কি কি পদক্ষেপ নেয়া হয় সে বিষয়ে অালোচনা করব:

অাধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসা চলে ক্যামোথেরাপী,রেডিওথেরাপী ও সার্জারী এ তিনে মিল।

অাধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসায় বহুল পরিচিত পদ্ধতির নাম ক্যামোথেরাপী বা সংক্ষেপে ক্যামো বলে। এ ক্যামো কিভাবে ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে সে বিষয়ে কথা বলব।

ক্যামোথেরাপী ড্রাগগুলোর মুল কাজ হচ্ছে দেহ কোষকে খুন করা। এটি ক্যান্সার ও ননক্যান্সার কোষের মধ্যে পার্থক্য করেনা। কোষের মূল নিয়ন্ত্রক ডিএনএ কে ড্যামেজ করে কোষকে মেরে ফেলায়াই এর প্রধান কৌশল। একটি ক্যামো সাইকেলে কত পরিমান কোষ মরবে সে হিসাব করেই ক্যামোর সাইকেল ঠিক করা হয়। সাধারনত ২ থেকে ৩ ট্রিলিয়ন কোষ নিধনের লক্ষ্য স্থির করে ১ সাইকেল ক্যামোডোজ নির্ধারন হয়। সাধারন ভাবে ২ থেকে ৬ সপ্তাহের বিরতিকে ১ সাইকেল বলে। এভাবে ৩ থেকে ৬ মাস ক্যামো কোর্স নির্ধারন করা হয়।

তাহলে প্রশ্ন কোষের ডিএনকে ধ্বংশ করার মাধ্যমে দেহ কোষ হত্যা ও অাহত করে কিভাবে দেহের ক্যান্সার নির্মূল হয়? ক্যামোর মাধ্যমে ২% থেকে ৩% মানুষ সাময়িক বেঁচে ফিরে। এ বেঁচে ফেরার পেছনেও অাছে দেহ কোষের অদম্য প্রানশক্তি। ক্যামোত দেহ কোষ মেরেছে তবে রোগী সুস্থ্য হলো কিভাবে? দেহ কোষের উপর প্রকৃতির ক্ষমতা প্রর্দশনই ছিল এর পেছনের রহস্য।

রেডিয়েশন থেরাপী হচ্ছে ক্যান্সার ট্রিটমেন্টের অারেকটি পদ্ধতি। উঁচুশক্তি সম্পন্ন রে(গামা রে) নিক্ষেপ করা হয় ক্যানসার অাক্রান্ত স্থানে। রশ্মির অাঘাতে ডিএনএ ধ্বংশ হয় অাশে পাশের নন ক্যান্সারাস কোষও ধ্বংশ হয়।

সার্জারী হচ্ছে অনুমান করে ক্যান্সার অাক্রান্ত দেহ অংশ কেটে বাদ দেয়া। তবে স্টেজ ১ ও ২ তে সার্জারী ক্যান্সার প্রতিরোধে সক্ষম হয়।

ক্যান্সার স্টেজ ১,২ তে বুঝায় এটি নির্দিষ্ট স্থানে রয়েছে ছড়িয়ে পড়েনি। স্টেজ ৩,৪ তে বুঝায় ক্যান্সার কোষ উৎস স্থান থেকে দেহের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছে। স্টেজ ৩ ও ৪ পৌঁছালে ক্যামো হচ্ছে একমাত্র পদ্ধতি। কারন ক্যান্সার কোষগুলো অত্যন্ত মারমুখী হয়। দ্রুত বিভাজন ক্ষমতা ও অমরত্ত লাভের কারনে ক্যান্সার দেহের জন্য অবশ্যই বিপদজনক। অামি অাগেই বলেছি দেহের উপর দীর্ঘমেয়াদি মারত্মক রেডিয়েশন,বেড ক্যামিক্যাল প্রবেশের কারনে দেহের স্বাভাবিক কোষ ক্যান্সার কোষে পরিনত হয়।I

উপরিউক্ত অালোচনার সার সংক্ষেপ করলে যা দ্বারায় সেটি হল;
♦দেহ জীবন্ত কোষে তৈরি। প্রতিটি কোষের জীবন পরিচালনাকারী সব তথ্য কোষের ডিএনএ এর মধ্য সংরক্ষিত অাছে।
♦ ক্যান্সার দেহ কোষের সমস্যা যা দেহের যে কোন স্থানে হতে পারে। ক্যান্সারকে যে নামই দেয়া হোক না কেন সমস্যাটা কিন্তু কোষের তথ্য কেন্দ্র ডিএনএ এর।
♦এ ডিএনএ হচ্ছে দেহের বায়োলজি পরিচালনাকারী কোটি কোটি প্রোটিন উৎপাদন নির্দেশদাতা।
♦দেহ কোষ বিভাজনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ দুটি স্বাধীন কোষে রূপান্তর হতে পারে।
♦দেহ সব সময় ২/৩ ট্রিলিয়ন কোষ বিভাজনরত অবস্থায় থাকে।
♦কোষ বিভাজনের সময় প্রতিটি কোষে ২৪ ঘন্টায় ১০ লক্ষ সমস্যা হয়।
♦কোষ বিভাজন সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত হয়ে নতুন কোষের সৃষ্টি করে।
♦এত সর্তকতার পরও যদি ত্রুটিযুক্ত কোষের জন্ম হয় তবে দেহ সিসটেম কোষটিকে মেরে ফেলে দেহকে বিপদমুক্ত করে।
♦দেহের অভ্যন্তরের টক্সিন এবং বাহিরের প্রবেশকৃত টক্সিন, রেডিয়েশন দেহের কোষ বিভাজনকে বিঘ্নিত করে, ডিএনএ এর গাঠনিক পরির্তন অানে। পরিবর্তিত ডিএনএ সম্পূর্ণ নতুন ধরনের প্রোটিন তৈরি করে যা দেহের জন্য ভয়ংকর রোগের কারন হতে পারে বা ডিএনএ পরিবর্তন হওয়ার কারনে দেহের প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি বন্ধ হয়ে দেহে নতুন নতুন রোগ লক্ষন দেখা দিতে পারে।
♦প্রোটিন হচ্ছে খাদ্যপুষ্টি এমাইনোএসিড এর চেইন। একটি প্রোটিন অনু তৈরি হতে ২০ টি এমাইনোএসিড লাগে। ৩টি এমাইনোএসিড এর একটি সংকেতকে কোড বলে। এভাবে অসংখ্য কোড মিলে তৈরি হয় ডিএনএ সিকোয়েন্স। এভাবে একটি ডিএনএ সিকোয়েন্স একটি নির্দিষ্ট প্রোটিনের গঠন সংকেত বহন করে। ক্যান্সারের শুরুটা এ ডিএনএ সিকোয়েন্স তৈরির গোলমাল থেকে।
♦ অাধুনিক ক্যান্সার চিকিৎসায় ক্যামো ও রেডিও থেরাপী প্রয়োগ করে ডিএনএ এর ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে ক্যান্সার কোষের মৃত্যু ঘটানো হয়। এতে দেহের সুস্থ্য কোষের ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটিই ক্যান্সার রোগীর পার্শ্বক্রিয়া ও মৃত্যুর কারন।

প্রাকৃতিক ঔষধী খাদ্য ব্যবস্থাপনায় ক্যান্সার প্রতিরোধ এবং স্টেজ ১ ও ২ কিভাবে নিরাময় হয় সে বিষয়ে অালোচনা করব;

দেহ কোষের প্রানরসায়ন সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয় সামান্য ক্ষারীয় পরিবেশে। ক্ষার এবং এসিড এর তারতম্য হয় হাইড্রোজেন অায়নের কম বেশী অনুসারে। কোন দ্রবনে যদি হাইড্রোজেন বেশী থাকে সে দ্রবনটি এসিডধর্মী হয়। অাবার যদি কম থাকে সেটি ক্ষারধর্মী হয়। নানা কারনে দেহ তরলে এ ভারসাম্য নষ্ট হয়। এসিড ও ক্ষারের মাত্রা নির্দেশক হচ্ছে পিএইচ(PH)।

ভাজাপোড়া খাবার,প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার বিপাকের পর বর্জ হিসাবে অতিরিক্ত হাইড্রোজেন রক্তে মিশে।

দেহের কিডনি দেহ তরলের পিএইচ ভারসাম্যা রক্ষা করে। কিডনির সমস্যার কারনে দেহ তরলের পিএইচ ভারসাম্য নষ্ট হয়।

দেহের অতিরিক্ত এসিড বা ক্ষার দুটোই কোষের ডিএনএ এর স্থিতিশীলতা নষ্ট করে।

দেহের এ এসিড ক্ষার ভারসাম্য রক্ষা করে প্রাকৃতিক খাবার। তাই প্রাকৃতিক খাবারকে বলা হয় দেহের ক্ষারীয় খাবার। দেহ চাহিদার মোট খাবারের ৭০% খেতে হবে ক্ষারীয় খাবার। ফলমুল,সালাদ ও শাকশবজি হবে দেহের প্রধান খাদ্য। তেজষ্ক্রিয় ও ক্যামিকেল টক্সিন এক্সপোজার থেকে দেহকে দূরে রাখতে হবে। প্রতিদিন মুক্ত বাতাসে শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে।

বিশেষায়িত কিছু ঔষধী খাদ্য খেতে হবে। যেমন, স্পাইরুনিলা, মাশরুম,ওমেগা ও ভিটামিন মিনারেলস খেতে হবে। মনে রাখতে হবে দেহের ক্ষার ও এসিডের ভারসাম্য ঠিক থাকলে দেহে কখনো রোগ হয়না।

Top
%d bloggers like this: