আলস্য আসবে না ততদিন খেলব যতদিন ক্রিকেটটা উপভোগ করবো - Alokitobarta
আজ : বৃহস্পতিবার, ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলস্য আসবে না ততদিন খেলব যতদিন ক্রিকেটটা উপভোগ করবো


আলোকিত বার্তা:বাংলাদেশের ক্রিকেটের একটা কঠিন সত্য বেরিয়ে এসেছে আব্দুর রাজ্জাকের মুখ থেকে। কী সেই সত্য? তা হলো, ত্রিশ বছরে পা রাখলেই কাউকে কাউকে ফিটনেসের অজুহাতে বাইরে ফেলে দেয়া হয়। বলা হয় তার বডি মুভমেন্ট স্লো, ফিল্ডিং ভালো না, বিশটি রান অতিরিক্ত দিয়ে দেন, দৌঁড়াতে পারেন কম।এভাবেই ক্যারিয়ারের প্রদীপ প্রায় নিভে গেছে শাহরিয়ার নাফিস, তুষার ইমরান, নাঈম ইসলাম, অলক কাপালি, আব্দুর রাজ্জাকদের। এরা সবাই যে শুধু ফিটনেসের ঘাটতির কারণে বাদ পড়েছেন তেমন নয়, কেউ কেউ হয়তো অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সের কারণেও সাময়িকভাবে বাদ পড়েছিলেন। কিন্তু সেভাবে আর ফিরতে পারেননি।
ওপরে যাদের কথা বলা হলো তাদের প্রায় সবাই বাদ পড়ার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফর্ম করেছেন। কিন্তু ভাগ্যের দরজা আর খোলেনি। বয়স হয়ে গেছে, শরীর ভারী হয়ে গেছে, বডি মুভমেন্ট স্লো, ফিটনেস কম- এই অজুহাতে তাদের আর সে অর্থে বিবেচনায় আনা হয়নি।কিন্তু আলোকিত বার্তার সঙ্গে আলাপে আব্দুর রাজ্জাক পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন তিনি যখন ৩০-৩১ বছর বয়সে সবচেয়ে পরিণত হয়েছিলেন, ঠিক তখনই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে- সেই ধোঁয়া তুলে।

তাই তো ৪০০ উইকেট শিকারের আনন্দের মাঝেও মুখে সে মনোকষ্টের কথা, ‘আসলে দুঃখের কথা কি বলবো? কাকে দুষবো? আমার কারো বিপক্ষে কোন অভিযোগ নেই। তবে একটা বড় দুঃখবোধ আছে। তাহলো, আমি যখন পরিণত হয়েছি, যখন প্রথম মনে হলো, আমি কি? আমার সীমাবদ্ধতা কোথায়? আমার শক্তি ও সামর্থ্যের জায়গাটাই বা কি? কখন কোথায় কি করতে হবে- ঠিক তখনই ছুড়ে ফেলে দেয়া হলো। আমি বাদ পড়লাম। এটা যে কত বড় মানসিক যন্ত্রণা, বলে বোঝাতে পারবো না! আমার আর কোন চাওয়া-পাওয়া নেই। তবে আমি চেয়েছিলাম এমন কিছু করে যাই, তাতে সবাই আমাকে মনে রাখবে।’

আর কতদিন খেলতে চান রাজ্জাক? তার শেষ কথা, ‘যতদিন ক্রিকেটটা উপভোগ করবো ততদিন মাঠে থাকার ইচ্ছে আছে। এখনকার মত যতদিন প্র্যাকটিসে যেতে মন চাইবে, অনুশীলন ও ম্যাচ খেলার জন্য আগের মত ভোরে উঠতে পারবো, এতটুকু আলস্য আসবে না এবং শরীর ও মন বাঁধা হয়ে দাড়াবে না- ততদিন খেলে যাব।ক্রিকেটাররা সাময়িকভাবে অফফর্মে থাকবেন আবার নিজেকে ঝালাই করে জাতীয় দলেও ফিরবেন। কিন্তু ত্রিশ বছরের বেশি হয়ে গেছে, ফিটনেস কম- এই অজুহাতে সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদ দিতে গেলে কিন্তু একসময় কিছুই থাকবে না। এ মানসিকতার পরিবর্তন দরকার।আবহাওয়া-জলবায়ু এবং প্রকৃতি ও জন্মগতভাবে বাঙালিরা কী খুব ফিট? একজন ক্যারিবিয়ান, দক্ষিণ আফ্রিকান, অস্ট্রেলিয়ান, ইংলিশ, কিউই, আফগান কিংবা পাঞ্জাবিদের সাথে শারীরিক শক্তিতে বাঙালি সবসময়ই পিছিয়ে।ফর্মের তুঙ্গে সৌরভ গাঙ্গুলিও শচিন, শেবাগ, যুবরাজ, দ্রাবিড়দের চেয়ে স্লথ ছিলেন। ভারতীয় দল যখন রানিং করতো তখন ফর্মের তুঙ্গে থাকা গাঙ্গুলিকে বহরে অনেকের পেছনে থাকতেই দেখা যেত। তাই বলে তাকে কিন্তু বাদ দেয়া হয়নি। কাজেই একটু বয়সে শরীর ভারী হয়ে গেলে তাকে বাদ দিতে হবে, তার পারফরম্যান্স আর বিবেচনায় আসবে না- এমন মানসিকতার পরিবর্তন দরকার।

Top
%d bloggers like this: