ইসরাইল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে
মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :ইসরাইল ও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। নতুন কোনো বাধা সৃষ্টি না হলে যেকোনো সময় আসতে পারে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা। গতকাল সউদীভিত্তিক গণমাধ্যম আল আরাবিয়ার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কায়রো নিউজ জানিয়েছে, চলমান গাজা যুদ্ধের বিরতি বিষয়ে আলোচনা করতে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিসরে পৌঁছেছে। সূত্রটি উচ্চপদ্স্থ একটি মিসরীয় সূত্রে জানিয়েছে, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। যেকোনো সময় যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসতে পারে।সূত্রটি আরব ওয়ার্ল্ড নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছে, হামাস আন্দোলন মিসরীয় প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। আলোচনাকে আরো অগ্রসর করার জন্য মিসরীয় পক্ষের সাথে আজ আরো বিশদ আলোচনা করবে। তিনি যোগ করেন, আমরা আশা করি, আর কোনো পরস্পরবিরোধী অবস্থান তৈরি হবে না। কোনো পক্ষ থেকে নতুনভাবে বাধাও আসবে না। ওয়াকিবহাল সূত্রটি আরো জানিয়েছে, চুক্তিটি চারটি পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে। প্রথম ধাপে শুধুমাত্র ইসরাইলি নারী, বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থদের ছাড়া হবে। তাদের সংখ্যা প্রায় ৩০ জন। দ্বিতীয় ধাপে অবশিষ্ট বেসামরিক নাগরিকদের মুক্তি দেবে। তৃতীয় পর্যায়ে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মুক্তি দেয়া হবে। চতুর্থ ধাপে নিহতের লাশ বিনিময় হবে।
এর আগে, ফিলিস্তিনের ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস জানিয়েছে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করার জন্য ইতিবাচক মন নিয়ে হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিশরের রাজধানী কায়রো গিয়েছে। শুক্রবার রাতে টুইটারে দেয়া এক পোস্টে হামাস জানিয়েছে, সম্প্রতি হামাস নেতারা যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে যে প্রস্তাব পেয়েছেন তাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখছেন এবং একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ইচ্ছা নিয়েই হামাসের প্রতিনিধি দল কায়রো যাচ্ছেরয়টার্স জানিয়েছে, হামাস ও সিআইএ কর্মকর্তারা শনিবার কায়রোতে মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। তবে তারা পৃথকভাবে সাক্ষাৎ করবেন না একত্রে, তা পরিষ্কার হয়নি না বলে মিশরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কমকর্তা জানিয়েছেন। হামাস জানিয়েছে, একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দেয়া সর্বশেষ প্রস্তাবগুলো যাচাই করার পর তাদের প্রতিনিধিরা একটি ‘ইতিবাচক মনোভাব’ নিয়ে কায়রোতে যাচ্ছেন।
গত কয়েক মাস ধরেই যুদ্ধবিরতি নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে। কিন্তু সিদ্ধান্তমূলক কোনো অগ্রগতি হয়নি। হামাস সম্পূর্ণভাবে যুদ্ধবিরতি চাইলেও যুদ্ধবাজ নেতানিয়াহু রাফাহ শহরে স্থল আগ্রাসন চালানোর ব্যাপারে অনড় অবস্থান নিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কায়রোয় যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলেও তা কতটুকু টেকসই হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ৩৪,৬৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৭,৯০৮ জন আহত হয়েছে। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরাইলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১,১৩৯ জন, যেখানে কয়েক ডজন মানুষ এখনও বন্দী রয়েছে। সূত্র : আল-আরাবিয়া, আল-জাজিরা।