প্রতিটি মানুষ ন্যায়বিচার পাক আমরা চাই
আলোকিত বার্তা:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই প্রতিটি মানুষ ন্যায়বিচার পাক। বিচার না পেয়ে আমরা যেমন কেঁদেছি এমন যেন আর কেউ না কাঁদে। গণতন্ত্র না থাকলে যেমন আইনের শাসন সুষ্ঠু হয় না তেমনি আইন না থাকলে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত হয় না।তিনি আরো বলেন, মানুষ যেন সুষ্ঠু আইন সম্পর্কে জানতে পারে সেজন্য ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু জেলা নয়, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে আইনি সহায়তা ছড়িয়ে দিতে হবে। আমরা এজন্য প্রতিটি জেলায় জাতীয় আইনগত সহায়তা অফিস স্থাপনাসহ সেখানে নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি।রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রবিবার জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস-২০১৯-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অ্যাসিডে দগ্ধ, প্রতিবন্ধী, সহায় সম্বলহীন যারা বিচার পেতে অক্ষম তাদেরকে সরকারি সহায়তায় আইনি সেবা দেয়া হচ্ছে। তারা যেন আদালতে সুষ্ঠু বিচার পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, মামলা জট থেকে মুক্তি পেতে আপসযোগ্য মামলা নিষ্পত্তিতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ফলে অতিরিক্ত ব্যয় ছাড়া মানুষ এর সহায়তা পাবে।তিনি আরো বলেন,আমরা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ব্যবস্থার সার্ভিসও চালু করেছি। এজন্য নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে কীভাবে অফিসাররা কাজ করবে। অনেককেই আইনগত সহায়তা দেয়া হয়েছে। অনেক মামলা নিষ্পত্তিও হয়েছে।শেখ হাসিনা বলেন,সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রম বৈষম্য দূর করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তৃণমূল পর্যায়ে এই কাজের বিস্তার ঘটিয়ে আমরা স্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই, যেন আমাদের দেশের সকলে ন্যায়বিচার পায়। এক্ষেত্রে আশা করি সকলেই আমাদের সহায়তা করবে।তিনি বলেন,আমরা যারা অসহায়, দরিদ্র তাদের সহায়তা করছি এটা ঠিক। কিন্তু অন্যায়ের শিকার অনেক সময় অর্থশালী সম্পদশালী পরিবারও হয়ে থাকে। বিশেষ করে যদি মা-বাবা মারা যায়, অনেক সময় মেয়েরা সম্পত্তির যে উত্তরাধিকার, সে সম্পত্তি তারা পায় না। ভাইয়েরা দিতে চায় না। অনেক সময় সম্পদশালী পরিবারের ভেতর অমানবিক আচরণ আমরা দেখতে পাই। মানুষের নিষ্ঠুরতার শিকার মানুষই হয়। এই যে সামাজিক অবিচারটা হয় এদিকেও আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনগত সহায়তা কমিটি গঠিত হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্টেও অসহায়, দুস্থ বিচারপ্রার্থীরা সরকারি আইনিসেবা পাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী জানান,গত দশ বছরে তিন লাখ ৯৩ হাজার ৭৯০ জনকে সরকারি খরচে আইনগত সহায়তা দেয়া হয়েছে। একই সময়ে এ কার্যক্রমের আওতায় মোট এক লাখ ৬৬৮টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।তিনি বলেন, মামলা দীর্ঘসূত্রতা ও জট কমাতে অধঃস্তন আদালতে বিচারক নিয়োগ, নতুন নতুন আদালত, ট্রাইবুন্যাল স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি ও নিয়োগ, উচ্চতর প্রশিক্ষণসহ সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিতে সরকারের উদ্যোগ এবং ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্পের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।