রাজধানীর ৯৫ ভাগ ভবনেরই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক নেই। - Alokitobarta
আজ : রবিবার, ২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
২০টি ব্যাংক থেকে ৩৩ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ আগামী তিনদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বজ্রসহ ঝড় বৃষ্টি হতে পারে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা যাতে আবার ফিরে আসতে না পারে সেজন্য কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করা বৈষম্য ও শোষণের শিকল ছিঁড়ে বারবার গণমানুষকে মুক্তি দিয়েছে দেশের তরুণরাই নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই দেশের সব সাংবাদিকের জন্য বেতন ৩০ হাজার অথবা ৪০ হাজার-ই হোক এর নিচে নামা যাবে না নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস উল্টে খাদে, আহত ১০ প্রশাসনের শীর্ষ পদে রেকর্ড চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ,১২ সচিব ওএসডি ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী এসপিরা এখনো আছেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ব্যাংক লুটের টাকা ৪ দেশে পাচার,নজিরবিহীন জালিয়াতির তথ্য বেরিয়ে আসছে

রাজধানীর ৯৫ ভাগ ভবনেরই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক নেই।


আলোকিত বার্তা:বহুতল ভবন নির্মাণে মানা হচ্ছে না ইমারত নির্মাণ বিধিমালা।উপেক্ষিত থাকছে অগ্নিনির্বাপণের নির্দেশনাও। মাঠপর্যায়ের চিত্র বলছে,বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণের ন্যূনতম বিধি-বিধানগুলোও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) পরিকল্পনাবিদ মাজহারুল ইসলাম বলেছেন,রাজধানীর ৯৫ ভাগ ভবনেরই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক নেই।ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় যেসব নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো যাচাই-বাছাইও করা হয় না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীর বেশির ভাগ ভবনেরই ‘অকুপেন্সি সনদ’ বা ‘ব্যবহারের চূড়ান্ত সনদ’ নেই।ভবন নির্মাণের সময় অগ্নিনির্বাপণের বিধানগুলো মানা হচ্ছে কিনা, তা যাচাই করা ও তদারকির মূল দায়িত্ব রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স বিভাগের।অথচ এ দুটি সংস্থার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার খেসারত দিতে হচ্ছে নগরীর অসহায় ও নিরপরাধ মানুষগুলোকে। বিশেষ করে সম্প্রতি পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টা ও বৃহস্পতিবার বনানীর ২২ তলা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে বহু মানুষের জীবনহানির পর ভবন নির্মাণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজউক থেকে আবাসিক ভবনের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক, শিল্পকারখানা, হোটেল বাণিজ্যের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। আর এসব অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করছে সিটি কর্পোরেশন, রাজউক, ওয়াসা, ফায়ার সার্ভিসের একশ্রেণীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা।এছাড়া অপরিকল্পিত বহুতল ভবন নির্মাণ করা ছাড়াও পর্যাপ্ত উন্মুক্ত স্থান না রেখে ভবন নির্মাণ করায় আলো-বাতাস প্রবেশেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।বৃহস্পতিবার বনানীতে আগুনে ভস্মীভূত ২২ তলা ভবনটিও গড়ে উঠেছিল কোনো ধরনের বিধিবিধান না মেনেই। ফলে আগুন লাগার পর ফায়ার সার্ভিসকে হিমশিম খেতে হয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে।কথা হয় জাতীয় অধ্যাপক ও প্রকৌশলী বিশেষজ্ঞ ড. জামিলুর রেজা চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি আলোকিত বার্তাকে বলেন, ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণের জন্য সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। এর মধ্যে ফায়ার রেটিং, ফায়ার এক্সটিংগুইশার, ফায়ার সেফটিক ব্যবস্থা ও জলাধার রাখাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা রয়েছে। এসব নির্দেশনা মেনে চললে খুব সহজেই আগুন নিভিয়ে ফেলা সম্ভব। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর মনিটরিংয়ের অভাবে সেসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।জানতে চাইলে স্থপতি ইকবাল হাবিব আলোকিত বার্তাকে বলেন, রাজধানী ঢাকার বেশির ভাগ বহুতল ভবন নির্মাণে অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ নিয়ম মেনে চলা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের সমান ব্যর্থতা দায়ী। তিনি বলেন, রাজধানীকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য রাখতে হলে ভবনগুলোর অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ প্রতি বছর পানি-বিদুৎ ও গ্যাস সেবার সংযোগগুলো নিশ্চিত করতে হবে।এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ মাজহারুল ইসলাম আলোকিত বার্তাকে বলেন, বহুতল ভবনের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার প্রধান দায়িত্ব রাজউকের। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নিজ দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে।

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান আলোকিত বার্তাকে বলেছেন, বনানীর ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। ভবন নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়েছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া বনানী এলাকায় বিধিবহির্ভূত যেসব ভবন নির্মাণ করা হয়েছে তার তালিকা প্রকাশ করা হবে শিগগির।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর বেশিরভাগ বহুতল ভবনে যথাযথ অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য অগ্নিকাণ্ডে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগ মানুষের নিরাপত্তার দিকটি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তার কিছু বিধিমালা নির্ধারণ করে দিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস বিভাগের এক জরিপেও সেই চিত্র উঠে এসেছে। ঢাকার জনবহুল ভবন বিশেষ করে হাসপাতাল, শপিংমল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো ২ হাজার ৬১২টি ভবনের ওপর জরিপ চালিয়ে দেখা গেছে যে, এর মধ্যে মাত্র ৭৪টি ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা সন্তোষজনক পাওয়া যায়। বাকি ২ হাজার ৫৩৮টি ভবনই অগ্নিঝুঁকির মধ্যে থাকার চিত্র উঠে এসেছে।

Top