মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ সংশোধন দাবি টিআইবির
মোহাম্মাদ মহাব্বাতুল্লাহ মাহাদ:এতে আমরা সন্তুষ্ট। কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী গৃহীত হয়নি। এগুলো কমিশনের কার্যকারিতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।৩১ অক্টোবর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ, ২০২৫ অনুমোদন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এর লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও কার্যকর করা।তিনি বলেন, কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সাত সদস্যের মধ্যে দুজনকে খণ্ডকালীন নিয়োগের বিধান বৈষম্যমূলক এবং সদস্যদের মর্যাদা ও এখতিয়ারে বৈষম্য সৃষ্টি করে। এটা কমিশনের অকার্যকরতার অন্যতম কারণ। সব কমিশনারের পদমর্যাদা ও সুবিধার সমতা নিশ্চিত করা জরুরি।জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ,২০২৫ সংশোধনের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি বলছে, নতুন অধ্যাদেশ বৈষম্যমূলক কমিশন গঠনে সহায়ক। এতে প্রতিষ্ঠানটির স্বাধীন ও কার্যকর কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে।রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড.ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জন্মলগ্ন থেকে কমিশন অকার্যকর। এ অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে অংশীজনের দেওয়া অনেক প্রস্তাব অনুমোদিত খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় চেয়ারম্যান ও কমিশনার বাছাইয়ের পর প্রাথমিকভাবে মনোনীত প্রার্থীদের নাম প্রকাশের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এটা গ্রহণ করা হয়নি। একইভাবে কোনো সংস্থার আটক স্থান আইনবহির্ভূত বিবেচিত হলে তা বন্ধ করা ও দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের প্রস্তাবও উপেক্ষিত হয়েছে, যা টিআইবির মতে হতাশাজনক।তিনি বলেন, কোনো আইন মানবাধিকার সংরক্ষণের পরিপন্থি হলে কমিশনকে তা পর্যালোচনা করে সংশোধনের সুপারিশ করার সুযোগ থাকা উচিত ছিল। পাশাপাশি ধারা ১৪-তে এই আইনকে মানবাধিকার সংক্রান্ত অন্যান্য আইনের ওপর প্রাধান্য দেওয়ার বিধান থাকলে সাংঘর্ষিক পরিস্থিতিতে কমিশনের ভূমিকা শক্তিশালী হতো।বিবৃতিতে টিআইবি উল্লেখ করে, সব অভিযোগে প্রাথমিক অনুসন্ধান বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। এ বিধান কমিশনের কাজে দীর্ঘসূত্রতা বাড়াবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিদের জন্য হয়রানি ও ন্যায়বিচার দুরূহ করবে।উদ্বেগ প্রকাশ করে টিআইবি জানায়, কমিশন বা তদন্ত দলে প্রেষণে নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত করা, প্রেষণ প্রক্রিয়ায় কমিশনের মতামত বাধ্যতামূলক করা এবং এসব পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত ও যোগ্যতার ভিত্তিতে রাখার সুপারিশ বিবেচিত হয়নি। কমিশনের বার্ষিক আর্থিক নিরীক্ষা সম্পন্নের পর প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইটে প্রকাশের বাধ্যবাধকতা থাকা উচিত। যাতে প্রতিষ্ঠানটির জবাবদিহি ও স্বচ্ছতা আরও সুসংহত হয়।টিআইবির মতে, গ্লোবাল অ্যাসোসিয়েশন অব ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ইনস্টিটিউশনসের মানদণ্ড অনুসারে কমিশনকে স্বাধীন, কার্যকর ও বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে সব পক্ষের উচিত অধ্যাদেশটি দ্রুত সংশোধন করা।