জাকসুতেও শিবিরের বিজয় - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাকসুতেও শিবিরের বিজয়


মু.এবি সিদ্দীক ভুঁইয়া:তেত্রিশ বছর পর অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুর রশিদ জিতু। সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত ঐক্য জোটের মো. মাজহারুল ইসলাম। জাকসুতে সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদ দুটি। দুটিতেই ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। তারা হলেন-এজিএস (পুরুষ) ফেরদৌস আল হাসান ও এজিএস (নারী) আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পর জাকসুতেও বড় জয় পেল ইসলামী ছাত্রশিবির।

জাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে জিএস, এজিএসসহ ২০টিতে শিবির সমর্থিত ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। বাকি পাঁচটি পদের মধ্যে ভিপিসহ তিনটিতে স্বতন্ত্র এবং দুটিতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। যদিও এ নির্বাচনের আটটি প্যানেলের মধ্যে ছাত্রদলসহ পাঁচটি নির্বাচন বর্জন করে। প্রগতিশীল রাজনীতির আধিক্য হিসাবে পরিচিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিবিরের এমন জয়ে বিস্মিত প্রশাসনসহ শিক্ষার্থীদের অনেকেই।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় ভোটগ্রহণের দীর্ঘ ৪৭ ঘণ্টা পর শনিবার বিকাল ৫টার দিকে জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরু করেন নির্বাচন কমিশন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে প্রথমে হল সংসদ এবং পরে জাকসু নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ডিজিটাল পদ্ধতির বদলে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ভোট হাতে গোনায় ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘ সময় লেগেছে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে। একই সঙ্গে ছাত্রদলসহ অন্যান্য প্যানেল এবং শিক্ষকরা নির্বাচনে যেসব অভিযোগ করেছেন, সেই অনিয়ম নির্বাচন কমিশন পায়নি বলে জানিয়েছে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে রাজনীতিতে আসে ইসলামী ছাত্রশিবির। প্রকাশ্যে রাজনীতিতে আসার পরপরই প্রচণ্ড বিরোধিতার মুখে পড়ে দলটি। আত্মপ্রকাশের এক বছরের কম সময়ের মধ্যে জাকসুর ২০টি পদে জয় পেলেন ছাত্রশিবির প্রার্থীরা। শুধু তাই নয়, হল সংসদের অনেক পদে দলটির নেতাকর্মীরা ভিপি, জিএস ও এজিএস নির্বাচিত হয়েছেন। যদিও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রদল ছাড়া আর কোনো দল আনুষ্ঠানিক প্যানেল ঘোষণা করেনি। তবে দলের প্রকাশ্য নেতারা হল সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

ফলাফলে আরও দেখা গেছে, নবনির্বাচিত ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু ৩৩৩৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম ছাত্রশিবিরের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ পেয়েছেন ২৩৯১ ভোট। এ পদে মোট ৯ জন প্রার্থী ছিলেন। জিএস মো. মাজহারুল ইসলাম পেয়েছেন ৩৯৩০ ভোট। তার নিকটতম বাগছাসের আবু তৌহিদ মো. সিয়াম ১২৩৮ ভোট পেয়েছেন। এ পদেও শেষ পর্যন্ত আটজন প্রার্থী ছিলেন। এজিএস (পুরুষ) পদে ১০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে ফেরদৌস আল হাসান ২৩৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। এজিএস (নারী) আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা পেয়েছেন ৩৪০২ ভোট। এ পদে ছয়জন প্রার্থী ছিলেন। জাকসুতে ভোট পড়েছে মোট ৮ হাজার ৩টি। শতকরা হিসাবে ৬৭ দশমিক ৯ শতাংশ।

সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সারিতে যারা নেতৃত্বে দিয়েছেন, তাদের একজন ছিলেন আব্দুর রশিদ জিতু। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন। পরে সরকারের বিভিন্ন কাজে সমালোচনা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে একযোগে যে ১৭ জন সমন্বয়ক ও সহসমন্বয়ক পদত্যাগ করেন, তাদের একজন জিতু। ওই সময় আবদুর রশিদের নেতৃত্বে পদত্যাগকারী কয়েকজন মিলে ‘গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলে। ওই সংগঠনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ, পোষ্য কোটা বাতিলসহ বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন আবদুর রশিদসহ অন্যরা। গণ-অভ্যুত্থানের আগে আব্দুর রশিদ জিতু নিষিদ্ধ ঘোষিত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। আর জিএস মো. মাজহারুল ইসলাম ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রশিবিরের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস ও প্রচার সম্পাদক। মাজহারুল ইসলাম বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের বিভিন্ন পদে ছিলেন। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আন্দোলনে তাকে দেখা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একযোগে ২১টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অব্যবস্থাপনা ও বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার ৪৭ ঘণ্টা পর শনিবার বিকাল ৫টায় ফলাফল ঘোষণা শুরু হয়। হল সংসদের রিটার্নিং কর্মকর্তারা স্ব স্ব হলের ফল ঘোষণা করেন। পরে জাকসুর ফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান। ফল ঘোষণার সময়ে নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্য অধ্যাপক ড. খো. লৎফুল এলাহী ও অধ্যাপক ড. একেএম রাশিদুল আলম উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনে অনিয়মের ঘটনায় পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণ দেখিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নির্বাচন কমিশনের আরেক সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার পদত্যাগ করায় তিনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। আর গতকাল ফলাফল ঘোষণার আগমুহূর্তে পদত্যাগ করেন ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ফল ঘোষণার আগেই সেখানে ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) নেতাকর্মী এবং বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ভিড় জমান। তারা বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’ ‘দেশনেতা জানেন নাকি, জিতু ভাই জাকসু ভিপি, ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন তারা। তাদের স্লোগানে পুরো হলরুম মুখর হয়ে ওঠে।

ফলাফল ঘোষণার শুরুতে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ এবং ভোট গণনার কাজে এসে মারা যাওয়া শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতি ও অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন। ফল ঘোষণায় দেরির কারণ সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. একেএম রাশিদুল আলম বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফলাফল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নয়, ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। আমরা তাদের দাবিতে সাড়া দিয়েছি। আমাদের সহকর্মীরা পোলিং এজেন্টদের সঙ্গে নিয়ে দুদিন ও দুই রাত কষ্ট করে ফলাফল প্রস্তুত করেছেন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি বিভিন্ন পক্ষ নির্বাচনে নানা অনিয়মের কথা বলেছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কাছে এ ধরনের কোনো অনিয়ম হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়নি। ৩৩ বছর পর নির্বাচন করতে গিয়ে ছোট ছোট জায়গায় হয়তো কিছুটা বিচ্যুতি হতে পারে। নির্বাচনি ব্যবস্থাপনায় ভুল হয়ে থাকলে সেজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ৩৩ বছর পর এমন এক বিষয় নিয়ে দাঁড়াতে পেরেছি, যা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অনন্য অসাধারণ বিষয় হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, আমরা অনেক চড়াই-উতরাই, অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা একসঙ্গে হতে পেরেছি।

জাকসু নির্বাচনে আটটি প্যানেল অংশ নেয়। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের প্যানেল ‘সম্প্রীতির ঐক্য’, ‘সংশপ্তক পর্ষদ’, ‘স্বতন্ত্র অঙ্গীকার পরিষদ’ ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আংশিক প্যানেল নির্বাচন বর্জন করে। ওইসব প্যানেলের কেউ জাকসুর কোনো পদে জয়ী হননি। নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে বৃহস্পতিবারই নির্বাচন মনিটরিং টিমের তিনজন সদস্য, শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার ও শনিবার আরেকজন নির্বাচন কমিশনার ড. রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা পদত্যাগ করেন। পাঁচজন নির্বাচন কমিশনারের দুজন পদত্যাগ করায় বাকি তিনজন ফলাফল ঘোষণা করেন। এতে নির্বাচনি মাঠে শেষ পর্যন্ত যে তিনটি প্যানেল ছিল, তারা কোনো না কোনো পদ পেয়েছে।

জাকসুতে জয়ী হলেন যারা : ভিপি, জিএস ও দুজন এজিএস বাদে বাকিরা হলেন-শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আবু ওবায়দা উসামা (২৪২৮ ভোট), পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সম্পাদক মো. সাফায়েত মীর (২৮১১ ভোট), সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জাহিদুল ইসলাম বাপ্পি (১৯০৭ ভোট), সহসাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ রায়হান উদ্দিন (১৯৮৬ ভোট), নাট্য সম্পাদক মো. রুহুল ইসলাম (১৯২৯ ভোট), সহক্রীড়া সম্পাদক (নারী) ফারহানা আক্তার লুবনা (১৯৭৬ ভোট), সহক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ) মো. মাহাদী হাসান (২১০৫ ভোট), তথ্যপ্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক মো. রাশেদুল ইসলাম লিখন (২৪৩৬ ভোট), সহসমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক (নারী) নিগার সুলতানা (২৫৬৬), সহসমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক (পুরুষ) মো. তৌহিদ হাসান (২৪৪২ ভোট), স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তাবিষয়ক সম্পাদক হুসনী মোবারক (২৬৫৩ ভোট) এবং পরিবহণ ও যোগাযোগ সম্পাদক মো. তানভীর রহমান (২৫৫৯)। কার্যকরী সদস্যদের মধ্যে ছাত্র শিবিরের জয়ী প্রার্থীরা হলেন-মো. আবু তালহা (১৮৫৪ ভোট) ও মো. তরিকুল ইসলাম (১৭৪৬ ভোট), নুসরাত জাহান ইমা (৩০১৪ ভোট), নাবিলা বিনতে হারুণ (২৭৫০ ভোট) ও ফাবলিহা জাহান (২৪৭৫ ভোট)। বাগছাস প্যানেল থেকে সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক পদে আহসাব লাবিব (১৬৯০ ভোট) এবং কার্যকরী সদস্য পদে মোহাম্মদ আলী চিশতী (২৪১৪) জয়ী হয়েছেন। এছাড়া সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিবুল্লাহ শেখ জিসান আহমেদ (২০১৮) ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান কিরন (৫৭৭৮) ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

ফলাফল মেনে নিতে হবে-ছাত্রদলের তিন প্রার্থীর পোস্ট : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন বর্জন করলেও ফলাফল মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শাখা ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের নারী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী আঞ্জুমান ইকরা, সহক্রীড়া সম্পাদক রুহুল আমীন সুইট এবং কার্যকরী সদস্য পদপ্রার্থী হামিদুল্লাহ সালমান। শুক্রবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেন ইকরা। এর আগে দুপুরে একইভাবে ফেসবুকে জানান রুহুল আমীন সুইট আর সালমান। ইকরা তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের ঊর্ধ্বে সুষ্ঠু ভোটের জন্য আমরা শিক্ষার্থীদের কাছে দায়বদ্ধ ছিলাম। কিন্তু প্রশাসনের প্রকাশ্য অনিয়ম, কারচুপির পরও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এই রায় আমাদের মেনে নিতে হবে। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দায়িত্বশীলদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে নিজেদের ভুলগুলো পুনর্বিবেচনা করে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায় সেই লক্ষ্যে কাজ করা। রুহুল আমীন সুইট ফেসবুকে লেখেন, ‘আদর্শ ও আপসহীনতা থেকে দূরে সরে না গিয়ে রিয়্যালিটি মাইনা নিতে হবে। আপনারা যারা আমার জার্নিতে পাশে ছিলেন তাদের সবার প্রতি চিরকৃতজ্ঞতা।’ এদিকে সালমান তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘জাকসু নির্বাচনে প্রশাসনের অনেক অনিয়ম সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা যে রায় দেবে সে রায় মেনে নিতে হবে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতি আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ এটা।’

আজ ক্যাম্পাস বন্ধ : নির্বাচন-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ক্যাম্পাসের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন। আগামী সোমবার ক্লাস চলবে। তবে ওইদিনের ফাইনাল পরীক্ষা স্থগিত থাকবে।

Top