রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে


মোহাম্মাদ মুরাদ হোসেন :রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে চলতি অর্থবছরে দেশটির প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে। বুধবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট : ট্যাক্সিং টাইমস’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ কম হওয়ায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সরকারের বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারিত হচ্ছে না। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় বাধার সৃষ্টি করেছে। ফলে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির (জিডিপি) হার প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়ছে না। সরকারের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হচ্ছে না। গত আগস্টে সরকারের পালাবদলের পর সৃষ্ট অস্থিরতায়ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারণে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার কমে যাচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির বড় বাধা হচ্ছে রাজস্ব আহরণ নিম্ন পর্যায়ে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় না হওয়ায় বাংলাদেশকে বড় অঙ্কের ঘাটতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। কখনো কখনো এ ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রার চার ভাগের এক ভাগ হয়ে যাচ্ছে। এ ঘাটতির কারণে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় বাধার সৃষ্টি করেছে। রাজস্ব আয় কম হওয়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে সরকারের বিনিয়োগ কম হচ্ছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী অবকাঠামো খাতের উন্নয়ন হচ্ছে না। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়ছে না। দারিদ্র্য বিমোচন হচ্ছে না। অর্থসংস্থানের গতিও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশটিকে এখনো উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে। অনেক দেশ বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে সৃষ্ট চড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও বাংলাদেশ এখনো পারেনি। সরকারের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এ হার এখনো অনেক বেশি। খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেশি মাত্রায় বেড়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মূল্যস্ফীতির হার নিম্নমুখী হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এবং আগস্টে হঠাৎ সরকার পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার পূর্বাভাসের চেয়ে কম হচ্ছে। অর্থনীতি এখনো স্বাভাবিক হতে পারেনি। যে কারণে গত অক্টোবরের তুলনায় এপ্রিলেও পূর্বাভাস কমানো হয়েছে। বাংলাদেশ আর্থিক খাতকে শক্তিশালী করার এবং তার সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো আধুনিকীকরণের জন্য একটি কর্মসূচিতে প্রবেশ করেছে। এতে আগামীতে সুফল বয়ে আনতে পারে বলে প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।এতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের কর রাজস্বের বিপরীতে জিডিপি অনুপাত কার্যত স্থির হয়ে পড়েছে। জিডিপি বাড়লে কর রাজস্বের অনুপাত বাড়ছে না। এমন কি হ্রাস পাচ্ছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ কেবল দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে বড় বাধার সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে রাজস্ব বৃদ্ধি-কর ভিত্তির পরিবর্তনের জন্য কর রাজস্বের প্রতিক্রিয়া শিথিল নীতি প্রয়োগ করা হয়। যে কারণে রাজস্ব আয় বাড়ানো যাচ্ছে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে হতে পারে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। আগামী অর্থবছরে হতে পারে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। তবে গত অক্টোবরের তুলনায় এপ্রিলে প্রবৃদ্ধির হার দশমিক ৭ শতাংশ কমানো হয়েছে। আগামী অর্থবছরের জন্য কমানো হয়েছে দশমিক ৪ শতাংশ। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।

Top