রিকশাওয়ালা, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষসহ দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রিকশাওয়ালা, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষসহ দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে গণমুখী, পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী এবং টেকসই কৌশল ও পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, উন্নয়নকে দ্রুততর করতে আলোচনার মাধ্যমে কৌশল ঠিক করুন, যাতে আমরা দেশকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকালে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৬১তম কনভেনশনে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। আইইবি ঢাকা সেন্টার রাজধানীতে আইইবি সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে ‘প্রকৌশল ও প্রযুক্তির জন্য স্মার্ট বাংলাদেশ’ মূল প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে।শেখ হাসিনা জানান, তার সরকার যত পরিকল্পনা করছে বা দেশের উন্নয়ন করছে, সেখানে প্রকৌশলীদের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, আমার একটা অনুরোধ থাকবে-যে পরিকল্পনা হোক, সেই পরিকল্পনা প্রথমত, পরিবেশবান্ধব হতে হবে। কারণ, জলবায়ুর অভিঘাত থেকে আমাদের দেশকে রক্ষা করা আমাদের লক্ষ্য এবং এটা আমাদের করতেই হবে। আমাদের খরা, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস প্রতিনিয়ত মোকাবিলা করতে হয়। কাজেই সেদিকে লক্ষ রেখেই পরিকল্পনা প্রহণ করতে হবে। জলাধারগুলোকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে জলাধার সংরক্ষিত রেখে এবং নদীনালা, খালবিল, হাওড় এলাকায় পানির প্রবাহ ধরে রেখে স্থাপনা নির্মাণ করতে হবে। বৃষ্টির পানি ধরে রেখে তা কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা নিতে হবে। সরকারপ্রধান বলেন, এর পাশাপাশি পরিকল্পনাগুলো যেন টেকসই হয় এবং খরচের দিকটাও বিবেচনায় নিতে হবে। অহেতুক যে কোনো পরিকল্পনা যেন আমরা গ্রহণ না করি। প্রধানমন্ত্রী জানান, এটা একনেক বৈঠকেও তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, কোনো পরিকল্পনা গ্রহণ করলে এর থেকে জনগণ কতটুকু লাভবান হবে, যেটা আমাদের জন্য উপযোগী সেই পরিকল্পনা নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, শুধু একটা নির্মাণকাজের জন্য যেন নির্মাণ করা না হয়, এটা আমার অনুরোধ। একটা কনস্ট্রাকশন হলে কিছু লোক কাজ পাবেন, কিছু কমিশন বা কিছু লোক নানা সুবিধা পাবেন, সেটা যেন না হয়। আমি আমার পার্লামেন্টারি পার্টির এমপিদেরও নির্দেশ দিয়েছি। সংসদে বলেছি, একনেক সভাসহ সব জায়গায় বলেছি। আর সেরকম যদি কোনো প্রকল্প দেখি, অবশ্যই আমি তা অনুমোদন করব না। যে প্রকল্প শেষ করলে এর থেকে দেশ কিছু লাভবান হবে, মানুষ লাভবান হবে, আমাদের উপার্জন হবে, সেভাবেই যেন পরিকল্পনা করা হয়। এটাই আমার কাম্য।অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত প্রকৌশলীদের যৌক্তিক দাবিগুলো দেশের উন্নয়নে তাদের অবদানের কথা মাথায় রেখেই তিনি যাচাই-বাছাইপূর্বক পূরণের ব্যবস্থা নেবেন বলেও আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন স্তরের প্রকৌশলী, কেন্দ্র, উপকেন্দ্র, প্রকৌশল বিভাগ এবং এএমআইই পরীক্ষার স্নাতকদের হাতে স্বর্ণপদক, সনদসহ পুরস্কার তুলে দেন।

আইইবি সভাপতি প্রকৌশলী মো. আব্দুস সবুর এমপি, আইইবি সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী এসএম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হোসেইন ও আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। আইইবির ৬১তম কনভেনশনের থিম সং-এর পাশাপাশি একটি অডিও-ভিজুয়াল উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের আরও অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে আপনারা (প্রকৌশলীরা) বিশেষভাবে অবদান রাখতে পারবেন, আমরা সেটা আশা করি। দেশের উন্নয়ন যাদের চোখে পড়ে না, সেই বিশেষ গোষ্ঠীর সমালোচনাও করেন তিনি। সরকারপ্রধান বলেন, আমি অবাক হয়ে যাই আমাদের দেশের কিছু কিছু মানুষ আছেন, আপনি যাই করেন, কিছুই তাদের ভালো লাগে না। ‘কিছু ভালো লাগে না’ একটা গোষ্ঠী রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৌশল ক্ষেত্রে আরও গবেষণা করে আপনাদের যে উদ্ভাবনী শক্তি ও মেধা রয়েছে, সেটাকে কীভাবে আমরা দেশের কাজে লাগাতে পারি, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন। কারণ, আমাদের সবকিছুই নির্মাণের দায়িত্ব পড়ে প্রকৌশলীদের ওপর।শেখ হাসিনা বলেন, বিত্তশালীরা কেবল নয়, আমি চাই আমার রিকশাওয়ালা, সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষসহ দিনমজুররাও ফ্ল্যাটে থাকবে। আমার প্রতিটি কাজ হচ্ছে এই তৃণমূল মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। এ কথা মাথায় রেখেই আপনারা আপনাদের দায়িত্ব পালন করবেন। দেখবেন নিজেদেরও ভালো লাগবে।

Top