সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণায় গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, যারা চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় জড়িত থাকবেন, তাদের জন্য সরকার বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ দেবে। প্রধানমন্ত্রী সোমবার সকালে তার কার্যালয়ের (পিএমও) শাপলা হলে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। এ সময় দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পাবনার রূপপুরে করা হবে উল্লেখ করেন তিনি।শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণে। কিন্তু সেখানের মাটি এত নরম, প্রতিটি দ্বীপে অনুসন্ধান চালিয়ে আমরা দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধহয় সম্ভব নয়। তবে এখন যেখানে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছি, সেটার কাজ সম্পূর্ণ সমাপ্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়টাও আমরা এই পাবনায়, এই রূপপুরেই করতে পারব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গবেষণা ছাড়া কোনো কিছুতেই উৎকর্ষ লাভ করা যায় না। বিজ্ঞানকে বঙ্গবন্ধুই বেশি গুরুত্ব দিতেন। পঁচাত্তরের পর স্বৈরশাসকরা গবেষণায় গুরুত্ব দেয়নি। জাতির পিতা স্বাধীন দেশে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময়ই পরমাণু শক্তি কমিশন এবং বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত পরমাণু শক্তি কমিশন মানুষের স্বাস্থ্য পরিচর্যায় অত্যাধুনিক নিউক্লিয়ার মেডিসিনের প্রচলন করে। ২২টি নিউক্লিয়ার মেডিসিন সেন্টার থেকে ক্যানসার ও থাইরয়েডজনিত রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা হচ্ছে। তিনি বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্রও স্থাপন করেন, সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞান-এ দুটি গবেষণার ওপর আমাদের সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই আমাদের গবেষণায় আরও বেশি সবাই মনোযোগী হবে, গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা কীভাবে দূর করা যায়, সেই ব্যাপারে আমাদের সরকারের সব সময় অত্যন্ত আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে।শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবসম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণসাধন ও টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন। আমাদের বিজ্ঞানী ও গবেষকদের এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা একটা জায়গায় একটু পিছিয়ে আছি, সেটা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা। তিনি চিকিৎসকদের গবেষণায় মনোযোগী হওয়ারও আহ্বান জানান।

সরকারপ্রধান বলেন, তাহলে দেশের মানুষ সুস্থ হবে, সবল হবে, তারা মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। এরপর থেকে যারা স্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা করবে, তাদের আরও বিশেষ করে গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, কৃষিতে গবেষণা করে আজ আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না-বাংলাদেশে এখন ফলমূল, এমনকি যে টিউলিপ ফুল শীতের দেশ ছাড়া হয় না, সেই টিউলিপও বাংলাদেশে হচ্ছে। স্ট্রবেরিও বাংলাদেশে হচ্ছে। এসবই গবেষণার ফসল। গবেষণা আমাদের জন্য নতুন ভাগ্য খুলে দেয়।তিনি বলেন, এজন্য আবারও চিকিৎসকদের কাছে আমি অনুরোধ করব-যারা সরকারি চাকরি করছেন, তারা প্রাইভেট প্র্যাকটিস একটু কমিয়ে দিয়ে গবেষণার দিকে নজর দিন। আর এরপরে যারা গবেষণা করবেন, তাদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য আমরা যা করার করব।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান করেন।বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সভাপতিত্ব করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

Top