সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় হামলা
আলোকিত বার্তা:সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় হামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।রোববার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।রিজভী বলেন, ‘গতকাল শনিবার বিকালে উত্তরায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল বহিরাগত ব্যক্তি ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ক্ষতিসাধন করে।তিনি বলেন,আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই- মির্জা ফখরুলের বাসায় হামলার ঘটনার পেছনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে।সরকারের পক্ষ থেকে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার প্রক্রিয়া চলছে। এই বিষয়টিকেই ক্ষমতাসীনদের ‘ধাপ্পাবাজি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ মতে দেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ধর্ষণ অপরাধের সাজা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া (আইন সংশোধন) শুরু করার জন্য। তাই সাজা বাড়াতে আইন সংশোধন করার যে প্রক্রিয়া তা আমরা শুরু করে দিয়েছি। এই বক্তব্য আইওয়াশ ছাড়া কিছুই নয়।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আইনমন্ত্রীর বক্তব্য (আইন সংশোধন) চরম ধাপ্পাবাজি। দেশজুড়ে নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে যে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠছে সেই আন্দোলনকে প্রশমিত করার জন্যই নতুন আইন তৈরির উদ্যোগের কথা বলা হচ্ছে। বিদ্যমান যে যাবজ্জীবন সাজার বিধান আছে সেটি প্রয়োগ হয়নি কেন? কারণ বর্তমান সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্রছায়ায় গুম, খুন, ধর্ষণ মহামারি রূপ ধারণ করেছে। সুতরাং অপরাধীদের অধিকাংশই পার পায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। তাদের শাস্তি দেয়া দূরের কথা, বরং রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে ফাঁসির আসামিকে ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। ফলে অপরাধীরা যা খুশি তাই করার উৎসাহ পাচ্ছে। অপরাধ করে রেহাই পাওয়ার সংস্কৃতির জন্যই দেশে নারী ও শিশুর ওপর নির্যাতন ও সম্ভ্রমহানীসহ অন্যান্য সামাজিক অপরাধগুলো জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে।তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম, খুন, ধর্ষণ ও দুর্নীতি করলে পার পাওয়া যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক করে না- এটি যেন দেশের অলিখিত বিধান হয়ে গেছে। দেশের রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে বারবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমার (স্টেট ক্লিমেন্সি) কারণে ভয়ঙ্কর অপরাধীরা রেহাই পাওয়াতে তারা এখন সমাজে প্রভু হয়ে বসেছে। খুন, জখম ও নারীর শ্লীলতাহানিকে তারা নিজেদের অধিকার মনে করছে।রিজভী বলেন, গতকাল চাঁদপুর ও জয়পুরহাটের কালাইয়ে দুটি পৌরসভা নির্বাচন এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪৪ নং ওয়ার্ডে কমিশনার নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে। শতভাগ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হলেও সেসব এলাকায় বিএনপির এজেন্ট ও ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। চাঁদপুরে পৌর নির্বাচনে ভোটাররা কেন্দ্রে গেলে তাদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। সেখানে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপির ২০/২৫ জন নেতাকর্মীসহ ভোটারদের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করেছে। জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভায় এ পর্যন্ত কোনোদিন নৌকা প্রতীক বিজয় লাভ করেনি। কিন্তু সেখানে এবার জোর করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে কেন্দ্র করে দখল করে নৌকায় সিল মেরে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কেবল একটি মাত্র ওয়ার্ডের ভোট, সেটিও তারা জোর করে কেন্দ্র দখলের মাধ্যমে ছিনিয়ে নিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় সরকারের অবিমৃশ্যকারী আইনের শাসনবিরোধী ভয়ংকর রূপটি ফুঠে উঠেছে। সারাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।গুম, খুন, নারী ও শিশু নির্যাতনের যে মহামারী চলছে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নিতেই সরকারের এজেন্টরা দলের মহাসচিবের বাসভবনে এই হামলা চালিয়েছে। বিএনপি এই অনাকাঙ্ক্ষিত সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।