জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একের পর এক ঝটিকা মিছিল করছে - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একের পর এক ঝটিকা মিছিল করছে


মোহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম:জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা একের পর এক ঝটিকা মিছিল করছে।ঝটিকা মিছিলের জন্য ঢাকার বাইরে থেকে এসে কেরানীগঞ্জ এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আর এসব মিছিলে যেসব ডিজিটাল ব্যানার ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো তৈরি হচ্ছে ছয়টি জেলায়।জেলাগুলো হলো-বরগুনা,বরিশাল,মাদারীপুর,নড়াইল, গোপালগঞ্জ এবং গাজীপুর। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঝটিকা মিছিলকে কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না।যারাই ঝটিকা মিছিলে অংশ নেবে তাদের সবাইকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।আর গ্রেফতারের পর যেন তারা জামিন না পান সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে সরকার।প্রয়োজনে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।

সূত্র আরও জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যেসব জায়গা থেকে ব্যানার তৈরি করছে সে জায়গাগুলো এরই মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ডিজিটাল ব্যানার তৈরির প্রেসগুলোর মালিকানায় আছেন বিএনপি-জামায়াতের স্থানীয় নেতারা। কেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের ব্যানার তৈরি করা হচ্ছে-জানতে চাইলে প্রেসকর্মীরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জানিয়েছেন, ‘এটা তাদের লাভজনক ব্যবসা। সাধারণ ব্যানার বানাতে যেখানে এক হাজার টাকা নেওয়া হয়, আওয়ামী লীগের ব্যানার বানাতে সেখানে নেওয়া হয় তিন হাজার টাকা।’ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রেস মালিকদের সঙ্গে কথা বলবেন আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সংশ্লিষ্ট কর্মককর্তারা।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বরকে ঘিরে অপপ্রচার চলছে অনেক বেশি। জনমনে আতঙ্ক তৈরি করতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহার করে এসব হচ্ছে। আসলে এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের অবস্থা খুবই খারাপ। তাদের পক্ষে তেমন কিছু করা সম্ভব নয়। আর ১৩ নভেম্বর তো শুধু শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার রায়ের দিন ঘোষণা করা হবে। ওই দিন তো আর রায় ঘোষণা করা হবে না। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেসব তথ্য এসেছে, সব ধরনের তথ্যকে গুরুত্ব দিয়েই নিরাপত্তা ছক আঁকা হয়েছে। আশা করছি, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট মাঠে থাকবে। ইতোমধ্যেই সারা দেশে অভিযান শুরু হয়ে গেছে। সোমবার থেকে অভিযান জোরদার করা হচ্ছে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ শতাংশ সদস্যকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে সেনাবাহিনী আগে যেমন ছিল তেমনই থাকবে। তাদের উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে না।’ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের ঢাকা লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কোনো ধরনের আশঙ্কা নেই।’

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, ঝটিকা মিছিলে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের প্রতিনিয়ত গ্রেফতার করছি। জনমনে আতঙ্ক তৈরিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে আওয়ামী লীগের একটি অংশ ১০ থেকে ১২ নভেম্বর-এই ৩ দিনে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এক লক্ষাধিক গ্যাস বেলুন উড়ানোর পরিকল্পনা করেছিল। এই পরিকল্পনায় অংশ নেওয়া ২৫ জনকে এরই মধ্যে আমরা গ্রেফতার করেছি।

Top