এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি
মোহাম্মাদ নাসির উদ্দিন: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এনসিপি এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। তবে যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে প্রার্থী দেওয়া হতে পারে। যেমন, খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে সেখানে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইলে জুলাই শহীদ গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় নাহিদের সঙ্গে এনসিপির স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।এদিকে বিএনপি এবং জামায়াতের সঙ্গে এনসিপির জোট, আসন ভাগাভাগি ও মন্ত্রিসভার হিস্যা নিয়ে দরকষাকষি চলছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছে এনসিপি। প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে বুধবার কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এছাড়া পৃথক ফেসবুক পোস্টে এনসিপির দুই নেতা বলেছেন, এসব মিডিয়া প্রোপাগান্ডার মাধ্যমে পতিত ফ্যাসিবাদকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আসন বণ্টনের ইজারা পেয়েছে লন্ডন।
জুলাই যোদ্ধা গাজী সালাউদ্দিনের কবর জিয়ারত শেষে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। সমঝোতা বা জোট একটি রাজনৈতিক ও আদর্শিক জায়গা থেকে হতে পারে। যেমন জুলাই সনদের বিষয়টি রয়েছে। চলতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে আমাদের প্রার্থীদের প্রাথমিক একটি তালিকা প্রকাশ করব।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছি। বাংলাদেশের নির্বাচনের যে সংস্কৃতি, যাদের টাকা আছে, এলাকায় গডফাদারগিরি করে, আমরা সেই সংস্কৃতিকে এবার চ্যালেঞ্জ করতে চাই। বরং সাধারণ মানুষের পাশে যাকে পাওয়া যায়, যাকে মানুষের প্রয়োজনে পাওয়া যায়, যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, তাদের জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমরা সংসদে দেখতে চাই।
জোট নিয়ে সংবাদের প্রতিবাদ : এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুসফিক উস সালেহীন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা এবং মন্ত্রিসভায় হিস্যা চাওয়ার খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। জাতীয় নাগরিক পার্টি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট, আসন সমঝোতা বা ক্ষমতা ভাগাভাগির বিষয়ে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন কোনো প্রস্তাবও দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদে কখনো হয়নি।
এদিকে দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বুধবার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, একটি পত্রিকায় ২০টি, আরেক জায়গায় ১০টি আবার কেউ লিখেছেন ৫টি আসনে বিএনপির সঙ্গে এনসিপির সমঝোতা হয়েছে। অর্থাৎ আগামী নির্বাচনে জনগণের ভোট উপেক্ষা করে আসন বণ্টনের ইজারা পেয়েছে লন্ডন। মানে তারেক রহমান বা বিএনপির বাইরে আগামী সংসদে যাওয়ার ক্ষমতা কারও নেই। আগে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে হাওয়া ভবন নমিনেশন বিক্রি করত, আর এখন লন্ডন থেকে সরাসরি আসন বিক্রির ইজারা নেওয়া হয়েছে। পৃথক এক ফেসবুক পোস্টে আরেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন লেখেন, এই ঐতিহাসিক নির্বাচন এনসিপি নিজস্ব সক্ষমতায় লড়বে। কোনো সমঝোতা করা হবে না।