বহুমুখী পদক্ষেপে স্থবিরতা - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বহুমুখী পদক্ষেপে স্থবিরতা


মু.এবি সিদ্দীক ভুঁইয়া:পাচারের সম্পদ ফেরানোর কাজে নিয়োজিত অন্যতম সংস্থা বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের (বিএফআইইউ) অপসারিত প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। পাচার করা টাকা ফেরানোর জন্য আইনগত পদক্ষেপ ও বহুপাক্ষিক যোগাযোগে শিথিলতা দেখা দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়ায়ও ভাটা পড়েছে। এমনকি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া থমকে আছে। লন্ডনে কিছু সম্পদ জব্দের পর নতুন অগ্রগতি নেই। এর আগে অফিশিয়াল নিয়োগপত্র ছাড়াই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ ও পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার বিষয়ে গভর্নরকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য কাজ করা একজন ব্যাংকারের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ উঠেছে। যদিও শেষ পর্যন্ত তার নিয়োগ হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকের সঙ্গে দুর্নীতিবাজদের সখ্য হয়েছে-এমন অভিযোগও উঠেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে পাচারের সম্পদ দেশে ফেরাতে গৃহীত বহুমুখী পদক্ষেপ এ মুহূর্তে এক রকম স্থবির হয়ে পড়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।আরও জানা গেছে, পাচারের সম্পদ ফেরানোর বিষয়ে গভর্নরকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য উপদেষ্টা পদমর্যাদায় একজন বিশেষজ্ঞকে নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছিল গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে। তিনি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কাজও করছিলেন। তিনি হচ্ছেন ইফতি ইসলাম। গত জুনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদের সভায় তার নিয়োগের প্রস্তাব বাতিল করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিএফআইইউর স্বাভাবিক কার্যক্রমে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছিল। এর আগে একই বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ দুজন কর্মকর্তা প্রধান উপদেষ্টার কাছেও অভিযোগ করেছিলেন।

বিএফআইইউর অপসারিত প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধেও সংস্থাটির সার্বিক কার্যক্রমে শিথিলতা আনার অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান সরকার গত বছরের আগস্ট থেকেই যখন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের দুর্নীতি দালিলিকভাবে শনাক্ত করে তাদের আইনের মুখোমুখি করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে, তখন সরকারের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা হিসাবে বিএফআইইউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটাই ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু শুরুতে জোর তৎপরতা দেখালেও পরবর্তী সময়ে বিএফআইইউর কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দেয়। এ নিয়ে একাধিক পক্ষ থেকে বিএফআইইউর কার্যক্রমে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের প্রভাবে সংস্থাটির প্রধান হয়েছিলেন। গত ১৮ আগস্ট অশ্লীল ভিডিও ভাইরাল হলে তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর তার নিয়োগ বাতিল হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত এ পদটি খালি রয়েছে। এ পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য গভর্নরের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কাজ করছে।

এদিকে বিএফআইইউর একটি সূত্র জানিয়েছে, নানা বাধার পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহে ধীরগতির জন্য জনবল সংকট, দক্ষ জনবলের অভাব, বিদেশি সংস্থাগুলোর তথ্য না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিএফআইইউ থেকে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে তথ্য চাইলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে বলে সংস্থাটির প্রতিবেদন থেকেই তথ্য পাওয়া গেছে। কারণ সংস্থাটি বিদেশ থেকে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট তথ্য চেয়ে তা পেয়েছে। কিন্তু সংস্থাটি আগে বিদেশ থেকে পাচার করা সম্পদের তথ্য পেলেও এখন কম পাচ্ছে। এর নেপথ্য কারণ হিসাবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বিএফআইইউর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অনিচ্ছায় বা নানা জটিলতায় তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রমে ধীরগতির কারণেই তথ্য পেতে দেরি হচ্ছে। ফলে দুর্নীতিবাজদের আইনের মুখোমুখি দাঁড় করানোর কার্যক্রম ঝুলে যাচ্ছে।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তফা কে মুজেরী বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন। নির্বাচনের পর অন্তর্বর্তী সরকার বিদায় নেবে, নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। এজন্য হয়তো দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য সিদ্ধান্তগুলো এ সরকার নিতে চাচ্ছে না। পাচার করা টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়াটি অনেক দীর্ঘ। একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় ধারাবাহিকতা না থাকলে পাচার করা টাকা ফেরানো যাবে না। বর্তমান সরকারের উচিত ছিল শুরুর দিকেই এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা। নির্বাচিত সরকার এসে কী করে সেটি এখন দেখতে হবে। তিনি আরও বলেন, পাচার করা টাকা ফেরানোর কাজে এখন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে। এটি সরকারের শুরুতে বললে এতদিনে চুক্তি হয়ে যেত। কিন্তু সবে মাত্র এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এর সুফল কবে নাগাদ আসবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ এবং জটিল। এজন্য কৌশলগতভাবে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। সংশ্লিষ্টদের সঠিক ধারণা না থাকায় নির্বাচনের আগে টাকা ফেরত আনার আশ্বাস দিয়েছে। এতে আশার সঞ্চার হলেও বাস্তবে অগ্রগতি নেই। এছাড়া টাকা ফেরত আনার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া সরকারের দিক থেকে পর্যাপ্ত দিকনির্দেশনা নেই, পরিকল্পনায়ও ঘাটতি রয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশ থেকে টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে সেটি বলা যাবে না। তাই পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার পাশাপাশি অর্থ পাচার বন্ধে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে উদ্যোগ নিতে হবে।

সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাস পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপর থেকে ডেপুটি প্রধান দিয়ে সংস্থাটি চলছিল। আগস্টের শেষদিক থেকে বিএফআইইউ থেকে পতিত সরকারের মন্ত্রী, এমডি, আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা, ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সম্পর্কে দেশের ব্যাংক ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে ব্যাংক হিসাব ও অন্যান্য সম্পদের তথ্য চাওয়া শুরু হয়। এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পরিবারসহ ১০ শিল্প গ্রুপের ব্যাংক হিসাব ও অন্যান্য সম্পদের তথ্য চাওয়া হয় ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে। পাশাপাশি বিদেশে তাদের পাচার হওয়া সম্পদের তথ্যও চাওয়া হয়।

গত বছরের ৮ আগস্ট থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্র্যন্ত বিএফআইইউর প্রধান পদটি খালি ছিল। তখন সংস্থার উপপ্রধান এটি পরিচালনা করছিল। ১৭ জানুয়ারি বিএফআইইউর প্রধান হিসাবে এএফএম শাহীনুল ইসলাম যোগ দেন। তিনি যোগ দেওয়ার পর মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত কার্যক্রম ভালোই চলছিল। কিন্তু মার্চের শেষদিক থেকে গত ১৯ আগস্ট তিনি ছুটিতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সংস্থাটির সার্বিক কার্যক্রমে ভাটা পড়ে। সংস্থাটির প্রধানের কার্যক্রমে শিথিলতা ও তথ্য সংগ্রহে অনীহার কারণেই মূলত কয়েকটি গ্রুপের পাচারের তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম পিছিয়ে যায়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে টাকা পাচারের শীর্ষে রয়েছে এস আলম গ্রুপ। এদের বিভিন্ন কোম্পানি ২ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। পাচার করেছে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। তদন্তে অগ্রাধিকার পাওয়ার মধ্যে সবার আগে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবার, দ্বিতীয় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তৃতীয় এস আলম গ্রুপ।

গত মার্চের শুরুতে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এস আলম গ্রুপের বিষয়ে তৈরি বিএফআইইউর প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, ৯টি গোয়েন্দা প্রতিবেদন দুদক ও সিআইডিতে পাঠিয়েছে বিএফআইইউ। সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস, কানাডা ও মালয়েশিয়ায় সম্পত্তির খোঁজ পাওয়ার তথ্য উল্লেখ করেছে। পাশাপাশি ১৯৮ কোটি টাকা ও ১ লাখ ৫৮ হাজার ডলার স্থিতিসহ ৬৩৮টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। ৪২৬ কোটি টাকার শেয়ারসহ ২৪টি বিও হিসাব ও বিএসইসি ৮ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার শেয়ার জব্দ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।

একই সংস্থার মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনে বলা হয়, আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার ৩৭৮টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়। এতে ৪ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা স্থিতি রয়েছে। ৬৬ কোম্পানির ২২৭টি বিও হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এতে ১৬ হাজার ৮০৭ কোটি টাকার স্থিতি রয়েছে। ২১ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এগুলো সবই স্থানীয় সম্পদের তথ্য। কিন্তু বিএফআইইউ মার্চের প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত এই আড়াই মাস এস আলম গ্রুপের বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়ে প্রাপ্ত নতুন কোনো তথ্যের উল্লেখ করেনি তাদের প্রতিবেদনে।

সরকারের উচ্চপর্যায়ে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে দুদক থেকে বলা হয়েছে, বিএফআইইউ কর্তৃক বিদেশ থেকে এস আলম গ্রুপের পাচার করা সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি বলে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্টেন্স রিকোয়েস্ট বা এমএলএআর পাঠানো সম্ভব হয়নি। এমএলএআর পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হবে বিদেশ থেকে বিএফআইইউ কর্তৃক তথ্য পাওয়ার পর।

অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, মার্চের প্রতিবেদনে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস, কানাডা ও মালয়েশিয়ায় সম্পত্তির খোঁজ পাওয়ার তথ্য উল্লেখ করার পরও কেন আড়াই মাসে পাচারের কোনো তথ্য সুনির্দিষ্ট করতে পারেনি।

যদিও প্রধানমন্ত্রীর পরিবার ও অন্য কয়েকটি গ্রুপের বিষয়ে বিদেশ থেকে পাচার করা সম্পদের তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে পেয়েছে বিএফআইইউ। এসব তথ্যের আলোকে বিদেশে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ ও বেক্সিমকো গ্রুপের কিছু সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।

মার্চের একই সময়ের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদনে বেক্সিমকো গ্রুপের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আইল অব ম্যান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সম্পত্তি, কোম্পানি ও ব্যাংক হিসাবের খোঁজ পাওয়ার তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

মে মাসের একই সময়ে তৈরি প্রতিবেদনে বলা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আর আর গ্লোবাল ট্রেডিং কোম্পানি নামে একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার শনাক্ত করা হয়েছে। তবে অর্থ জমার কোনো স্থিতি নেই। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিএফআইইউ জমা অর্থের স্থিতি জানতে পারলে তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হবে।

যুক্তরাজ্যের একটি ব্যাংকে দুটি হিসাব পাওয়া গেছে। তবে স্থিতি জানা নেই। এ বিষয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএফআইইউ সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে হিসাবের স্থিতি জানতে পারলে প্রতিবেদনে পরবর্তী সময়ে উল্লেখ করা হবে।

মার্চের তৈরি প্রতিবেদনে ওরিয়ন গ্রুপের বিষয়ে বলা হয়, আলবেনিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কানাডায় তাদের সম্পদ ও বিনিয়োগের সন্ধান পাওয়া গেছে। কমনওয়েলথ অব ডমিনিকা এবং আলবেনিয়ায় বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব গ্রহণ করা হয়। আলবেনিয়ায় নাগরিকত্বের তথ্য ব্যবহার করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিনিয়োগ করা হয়েছে। বিনিয়োগের সেসব তথ্য পাওয়া গেছে।

মে মাসে তৈরি প্রতিবেদনে একই গ্রুপের বিষয়ে বলা হয়, বিএফআইইউ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে তথ্য সংগ্রহের পর এমএলএআর পাঠানোর কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। প্রশ্ন উঠেছে, বিএফআইইউ মার্চ পর্যন্ত বিদেশে পাচারের এত তথ্য পেল, কিন্তু আড়াই মাস পর মে মাসে কোনো তথ্যই পেল না কেন?

জেমকন গ্রুপের বিষয়ে প্রথমে বলা হয়, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগের তথ্য পাওয়া গেছে। পরবর্তী সময়ে বলা হয়, বিএফআইইউ কর্তৃক সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে তথ্য পাওয়া গেলে এমএলএআর পাঠানোর কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

সূত্র জানায়, বিএফআইইউ প্রথমে প্রাথমিক গোয়েন্দা সূত্র ব্যবহার ও পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। এর মধ্যে মানি লন্ডারিং নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন এগমন্ট গ্রুপের মাধ্যমেও তথ্য সংগ্রহ করে। এই সংস্থাটির সদস্য বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী এর সদস্য সংখ্যা ১৮২টি দেশ। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি টাকা পাচার হয় এমন সব দেশই রয়েছে। এসব দেশ থেকেও তথ্য পেতে পারে। এছাড়া চারটি আন্তর্জাতিক সংস্থা তদন্তে সহায়তা দিচ্ছে। সব মিলিয়ে বিএফআইইউ চাইলে বিদেশ থেকে তথ্য পাওয়া খুব কঠিন কিছু নয় বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

Top