এক শ্রেণির স্বার্থন্বেষি মানুষ দেশকে কোন দিকে নিচ্ছে - Alokitobarta
আজ : বুধবার, ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এক শ্রেণির স্বার্থন্বেষি মানুষ দেশকে কোন দিকে নিচ্ছে


নুর নবী জনী : ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, পাখির মতো গুলি করে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। হাজার হাজার মায়ের কোল খালি করা হয়েছে। এক শ্রেণির স্বার্থন্বেষি মানুষ দেশকে কোন দিকে নিচ্ছে। তা আর বলার প্রয়োজন রাখে না। খুনি ও ফ্যাসিস্ট, পাচারকারী হাসিনা বুঝতেও পারেনি, ৫ আগস্ট তাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। ফলে হে খুনিরা, হে স্বার্থন্বেষি মহল বাংলাদেশের মানুষ, ইসলাম দরদী মানুষ এবং দেশ প্রেমিক মানুষ আজকে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজও জাতীয় সংসদে যায় নাই। তার একটি মাত্র কারণ- আমরা কখনো ডাকাতদের, চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় যাওয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হই নাই।
গতকাল শনিবার দুপুরে ইসলামী আন্দোলন খুলনা মহানগর ও জেলার উদ্যোগে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, সকল বন্ধ মিল কলকারখানা চালু ও ইসলামী সমাজ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, ১৫ বছরের পতিত ফ্যাসিবাদের বিষাক্ত ছোঁয়া এখনো দেশকে অনিরাপদ করে রেখেছে। পতিত স্বৈরাচার দেশকে অস্থিতিশীল করে সুযোগ নেয়ার পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ দলের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে একই সাথে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সমালোচনায়, বক্তব্যে ও মন্তব্যে শিষ্টাচারের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। কারণ কোনো অবস্থাতেই পতিত ফ্যাসিবাদকে সুযোগ করে দেয়া যাবে না। ৫ আগস্টের পরে দেশ গঠনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন বলে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। সেই সংস্কার হতে হবে রাষ্ট্রের কাঠামোতে, আইনে এবং রাজনৈতিক দলের চরিত্র ও সংস্কৃতিতে। রাষ্ট্রের কাঠামো ও আইনী সংস্কারের কাজ কিছুটা অগ্রগতি হলেও রাজনৈতিক চরিত্র ও সংস্কৃতিতে তেমন কোন পরিবর্তন আসে নাই। ৫ আগষ্টের পরে রাজনৈতিক হানাহানিতে নিহত-আহত মানুষের সংখ্যা শুনে আঁতকে উঠতে হয়। চাঁদাবাজী কোন অর্থেই কমে নাই। সন্ত্রাসও কমে নাই। বরং রাজনৈতিক পরিচয়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে যে বর্বরতায় মানুষকে হত্যা করা হয়েছে তার প্রতিবাদে জনতা ফুঁসে উঠেছে স্বাভাবিক কারণেই। জনতার সেই প্রতিবাদকে রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বর্বর সেই হত্যাকা-কে আড়াল করে ফেলা হয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পরে মানুষ এই ধরণের রাজনীতি দেখতে চায় না। এ ধরণের অপরাধের সাথে জড়িতদের একটা বড় অংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। বিএনপি তাদের বহিস্কারের মাধ্যমে এটা প্রমাণিতও বটে। তাই বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বলবো, কর্মীদের অপরাধের দায়ভার দল হিসেবে আপনাদের বহন করতেই হবে। চাঁদাবাজরা বিএনপির সাথে সম্পৃক্ততা দেখিয়েই জনতার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। তাই জনতার ক্ষোভ বিএনপির প্রতি হবে এটা স্বাভাবিক। জনতার এই প্রতিবাদকে প্রতিপক্ষ না বানিয়ে দলের ভেতরে থাকা অপরাধীদের চিহ্নিত করুন। অপরাধ ঘটার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি খুলনা মহানগর সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম মনা, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম এর খুলনা মহানগর সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন হেলাল, জেলা সভাপতি মাওলানা মো. ইমরান হুসাইন, এনসিপি খুলনা মহানগর সংগঠক হামিম রাহাত, এনসিপি খুলনা জেলা প্রধান সমন্বয়কারী মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফয়জুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি শরীফ সাইদুর রহমান, সেক্রেটারি হাফেজ শহিদুল ইসলাম, খেলাফত মজলিস খুলনা মহানগর সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ, সেক্রেটারি এ অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম, খেলাফত মজলিস খুলনা জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল্লাহ জুবায়ের, হেফাজত ইসলাম খুলনা মহানগর সভাপতি মাওলানা মোস্তাক আহমেদ, সেক্রেটারি মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, গণঅধিকার পরিষদ খুলনা মহানগর সভাপতি মো. বেলাল হোসেন, গণঅধিকার পরিষদ খুলনা জেলা সভাপতি আজিজুল ইসলাম, সেক্রেটারি মো. রাশেদ, এবি পার্টি খুলনা জেলা সেক্রেটারী মো. আকতার হোসেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ খুলনা মহানগর সভাপতি বীরেন ঘোষ, সেক্রেটারি গোপাল, পূজা উদযাপন পরিষদ খুলনা মহানগর সেক্রেটারি প্রশান্ত কুন্ডু প্রমুখ।গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলন খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ।

Top