গাজায় ত্রাণ সংগ্রহের সময় অন্তত ৭৯৮ জন নিহত হয়েছেন
আলোকিত বার্তা :গাজায় ত্রাণ সংগ্রহের সময় অন্তত ৭৯৮ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর (ওএইচসিএইচআর)।গতকাল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয় ওএইচসিএইচআর-এর মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি বলেন, ‘৭ জুলাই পর্যন্ত আমরা ৭৯৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করেছি। এর মধ্যে ৬১৫ জন যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইএফ) পরিচালিত সহায়তা কেন্দ্রের আশপাশে এবং বাকি ১৮৩ জন জাতিসংঘসহ অন্যান্য ত্রাণসহায়তাকেন্দ্রে নিহত হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল পরিচালিত জিএইচএফ গাজায় সরাসরি ত্রাণ বিতরণ করছে, যেখানে তারা মার্কিন বেসরকারি নিরাপত্তা ও সরবরাহ সংস্থাগুলোর সহায়তা নিচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে পাশ কাটানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে ইসরাইল দাবি করেছেÑপূর্বের ত্রাণকার্যক্রম ব্যবস্থায় হামাস যোদ্ধারা ত্রাণ সরিয়ে নিচ্ছিল। তবে জাতিসংঘ এই নতুন ব্যবস্থাকে ‘সহায়তার নিরাপত্তাহীন পরিবেশ’ এবং মানবিক সহায়তার পক্ষপাতহীনতার নীতির লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে। মে মাসের শেষ দিকে গাজায় প্যাকেট করে খাদ্য বিতরণ শুরু করে জিএইচএফ। সংস্থাটি বারবার দাবি করে এসেছে, তাদের পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে কোনো প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটেনি। যদিও জাতিসংঘের রিপোর্টে বিপরীত চিত্র উঠে এসেছে। গাজায় চলমান মানবিক সংকটে এই সহিংসতার নতুন মাত্রা উদ্বেগ তৈরি করছে বলে মত প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার বিশ্লেষকেরা।এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান যুদ্ধাবস্থায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত বাহিনীর এক নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে। এই হামলার লক্ষ্য ছিল ইসরাইলের তেলআবিবে অবস্থিত বেন গুরিওন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরÑযা ইসরাইলের প্রধান বিমানবন্দর হিসেবে পরিচিত। হামলায় ব্যবহৃত হয়েছে ‘জুলফিকার’ নামক একটি শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তারা জুলফিকার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এই হামলা চালিয়েছে এবং এটি ‘সফলভাবে তার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে’। এই অভিযানের পেছনে উদ্দেশ্য ছিল গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ। ইসরাইলের অধিকৃত এলাকায় হামলার পর ৩০০-র বেশি শহরে সাইরেন বাজানো হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
হুথি বাহিনীর দাবি, এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ফলে বেন গুরিওন বিমানবন্দরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এবং লক্ষ লক্ষ ইসরায়েলি নাগরিককে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাহিনীটি জানায়, তারা দখলদার শক্তি এবং তাদের মিত্রদের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে যাবে যতক্ষণ না গাজা থেকে আগ্রাসন ও অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়। বিবৃতিতে হুথিরা আরও জানায়, তারা শুধুমাত্র বিমানবন্দর নয়, দখলকৃত অঞ্চলের সামরিক ও বাণিজ্যিক অবকাঠামো এবং ইসরায়েলগামী জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করছে। এর আগে লোহিত সাগরে ‘ম্যাজিক সীজ’ ও ‘ইটার্নিটি সি’ নামের দুটি ইসরায়েলগামী বাণিজ্যিক জাহাজ ডুবিয়ে দেয় ইয়েমেনি বাহিনী। সূত্র : আল-জাজিরা, প্রেস টিভি।