অন্যায়ের পক্ষ কখনোই নয় - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্যায়ের পক্ষ কখনোই নয়


আলোকিত বার্তা :নবীযুগের একটি ঘটনা। বিশর নামে বনু উবায়রিকের এক মুনাফিক ছিল। সে একবার হযরত রিফাআ (রা.)-এর ঘর থেকে খাদ্যশস্য ও হাতিয়ার চুরি করে। সাহাবী নবীজীর দরবারে গিয়ে তার নামে বিচার দেন। কিন্তু ওই লোক চুরি করে যাওয়ার সময় একটা চালাকি করে। খাদ্যশস্যের বস্তার মুখ কিছুটা আলগা করে রাখে। যার ফলে রাস্তায় অল্প-অল্প শস্যদানা পড়তে থাকে। এক ইহুদির বাড়ির দরজায় পৌঁছে সে বস্তার মুখ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। শুধু তাই নয়, চোরাই হাতিয়ারও সেই ইহুদির বাড়িতেই রেখে আসে।তারপর নিজ গোত্রের কিছু লোককে বলেÑ আমি হাতিয়ার অমুকের বাড়িতে রেখে এসেছি। সেখানে গেলেই পাওয়া যাবে। এতে ওই ইহুদি ফেঁসে যাচ্ছিল। কারণ সরেজমিন যাচাই করে তার বাড়ি পর্যন্ত খাদ্যশস্য পড়ে থাকতে দেখা গেল। আবার চোরাই অস্ত্রও পাওয়া গেল তার বাড়িতেই। তাই প্রথমদিকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্দেহে পড়ে যানÑ ইহুদিই বুঝি চুরি করেছে! তাকে জিজ্ঞেস করা হলে সে বলল, হাতিয়ার তো বিশর আমার এখানে রেখে গিয়েছে। কিন্তু এর সপক্ষে সে কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারছিল না।

নবীজী তো আর গায়েবের খবর জানেন না, আল্লাহর পক্ষ থেকে যা জানানো হয় তিনি কেবল তা-ই জানেন। এ জন্য ধারণা করা হয়েছিল, এই লোক নিজেকে বাঁচানোর জন্যই বিশরের নাম নিচ্ছে। অপরদিকে বিশরের খান্দান বনু উবায়রিকের কিছু লোকজনও জেনে-শুনে তার পক্ষ নিলো। তারা জোর দিয়ে বলল, বিশরের নয়; ওই ইহুদিরই শাস্তি হওয়া উচিত।

আল্লাহ যখন নবীজীকে প্রকৃত ঘটনা জানিয়ে দেন তখন বিশরের মুখোশ খুলে যায়। ইহুদিকে সম্পূর্ণ নিরপরাধ ঘোষণা করা হয়। (দ্র. তাফসীরে তবারী-৯/১৮৩; তাফসীরে ইবনে কাসীর-২/৪০৫; তাফসীরে কুরতুবী-৫/৩৭৫; তাফসীরে বাগাভী-১/৬৯৮)। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেনÑ ‘আপনি খেয়ানতকারীদের পক্ষাবলম্বনকারী হবেন না।’ (সূরা নিসা-১০৫) আল্লাহ তা‘আলা আরো ইরশাদ করেনÑ ‘যারা নিজেদের সঙ্গেই খেয়ানত করে আপনি তাদের পক্ষে বাগি¦ত-া করবেন না। আল্লাহ কোনো খেয়ানতকারী পাপিষ্ঠকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা নিসা-১০৭)

আয়াত যদিও নাজিল হয়েছে বিশেষ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে, কিন্তু এতে সব মুমিনের জন্যই রয়েছে শিক্ষা। অপরাধ করে অন্যের ওপর দোষ চাপানো নিকৃষ্ট কাজ; মুমিন এমনটি করতে পারে না। এ বিষয়ে কুরআনে ইরশাদ হয়েছেÑ ‘যে ব্যক্তি কোনো দোষ বা পাপকর্মে লিপ্ত হয়, তারপর কোনো নির্দোষ ব্যক্তির ওপর তার দায় চাপায়, সে (আসলে) নিজের ওপর গুরুতর অপবাদ ও প্রকাশ্য গোনাহর ভার চাপিয়ে দিলো।’ (সূরা নিসা-১১২)

Top