নিবন্ধন ফিরে পেল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী
মু.এ বি সিদ্দীক ভুঁইয়া :নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন ফিরে পেল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকও পেয়েছে দলটি। দলীয় প্রতীকসহ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন পুনর্বহাল করে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ফলে আগামী সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক নিয়েই অংশ নিতে পারবেন দলের প্রার্থীরা। উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্তের ৩ সপ্তাহের মাথায় এ প্রজ্ঞাপন জারি করল ইসি।আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর আপিল নিষ্পত্তির আগেই ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন। এ কারণে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে পারেননি দলটির নেতারা। তারা বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৭ বছর পর রাজনৈতিক দল হিসাবে আবারও ইসিতে নিবন্ধন পেল জামায়াতে ইসলামী।জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহাল করে নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে জারি করা প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন দলীয় প্রতীকসহ পুনর্বহাল করা হলো।
১ জুন রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৩ সালে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন আপিল বিভাগ। এরপরই ৪ জুন বৈঠক করে জামায়াতের নিবন্ধন ও প্রতীক ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালার তফশিলে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
২০০৮ সালের নভেম্বরে জামায়াতকে নিবন্ধন সনদ দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতকে ইসির দেওয়া নিবন্ধনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৯ সালে রিট করেন সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ ব্যক্তি। চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্টের তিন সদস্যের বৃহত্তর বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালত এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সনদ দেন, যা ওই বছরই আপিল হিসাবে রূপান্তরিত হয়। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে দলটি। হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই তা স্থগিত চেয়ে জামায়াত আবেদন করে, যা ২০১৩ সালের ৫ আগস্ট খারিজ করে দেন আপিল বিভাগের তৎকালীন চেম্বার বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী। এরপর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।