দেশে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে বনভূমি ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ৮ বছরে - Alokitobarta
আজ : বুধবার, ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে বনভূমি ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ ৮ বছরে


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া : দেশে আশঙ্কাজনক হারে কমছে বনভূমি। ৮ বছরে কমেছে ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ ২০১৫ সালে বন এলাকা ছিল ১৮ হাজার ৪৯৯ দশমিক শূন্য ৮ বর্গকিলোমিটার বা ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ এলাকা। কিন্তু ২০২৩ সালে এসে কমে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৪৯৮ দশমিক ১৮ কিলোমিটারে বা ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ। সেই সঙ্গে দেশে প্রতিবছর একজন মানুষ গড়ে হাত ধোয়ায় পানি ব্যবহার করেন ৩১ হাজার ৩২ লিটার। টাকার অঙ্কে খরচ করেন ৯৮১ টাকা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) পরিবেশ, পরিবর্তন ও দুর্যোগ পরিসংখ্যান শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এর আওতায় রোববার ৭টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। রাজধানীর আগারগাঁও বিবিএস অডিটোরিয়ামে প্রকাশনা আনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক। বিবিএস-এর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিং উইং-এর পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন খান। মুক্ত আলোচনাপর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্মসচিব ড. দীপঙ্কর রায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে বনভূমি কমলেও বেড়েছে কৃত্রিম সামাজিক কনায়ন কার্যক্রমের আওতায় সৃজিত বন। এক্ষেত্রে ২০১৫ সালে ছিল ১ হাজার ৩৪১ দশমিক ৪৮ বর্গকিলোমিটার। ২০২৩ সালে এসে ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৭০৮ বর্গকিলোমিটার। এছাড়া ২০১৫ সালে দেশে কৃষিজমি ছিল ৭৪ হাজার ৩৮৬ দশমিক ৬৩ বর্গকিলোটার। ২০২৩ সালে এসে সেটি কমে হয়েছে ৭২ হাজার ৯১৫ দশমিক ৭৪ বর্গকিলোমিটার। এক্ষেত্রে কৃষিজমি কমেছে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ।

বাংলাদেশে প্রথমবার হাউজহোল্ড বেজ এনভায়রনমেন্টাল সার্ভে (এইচবিইএস) ২০২৪ পরিচালিত হয়েছে। এ জরিপ থেকে প্রাপ্ত ডেটা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর হাত ধোয়ায় গড়ে খরচ হয় ৯৮১ টাকা, যা গ্রাম এলাকায় ৮৩১ এবং শহরে ১ হাজার ৩১১ টাকা। প্রতিবছর হাত ধৌতকরণে পানি খরচ হয় গড়ে ৩১ হাজার ৩২ লিটার, যা গ্রাম এলাকায় ৩১ হাজার ১৮৪ এবং শহর এলাকায় ৩০ হাজার ৬৮৩ লিটার।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এ প্রতিবেদনগুলো প্রকাশ হওয়ায় জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হবে। আলেয়া আক্তার বলেন, এ ধরনের প্রতিবেদন দেশের নীতিনির্ধারকদের পরিবেশ ও জলবায়ুসংক্রান্ত যে কোনো নীতি গ্রহণে ব্যাপক সহায়ক হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদে এবং নির্ধারিত ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সঠিক তথ্য তুলে ধরার মাধ্যমে বিবিএস তার দায়িত্ব সব সময়ই পালন করে যাবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. এ কে এনামুল হক বলেন, আমরা আমাদের সম্পদ ধীরে ধীরে নিজেরাই নষ্ট করছি। এখন আমাদের কৃষিজমিতে জিংক নেই। ফলে অনেকের প্রতিবন্ধী সন্তান জন্ম হচ্ছে। আগে হাওড় এলাকায় প্রচুর খালি জমি ছিল। কিন্তু এখন আর নেই। আমাদের চারপাশে অনেক পশুপাখি বসবাস করত। কিন্তু এখন তো জঙ্গল বলতে আর অবশিষ্ট নেই। দ্রুত নগরায়ণের ফলে আজ এমন অবস্থা। এদিকে আমরা প্রতিদিন গড়ে ৭২ লিটার পানি অপচয় করি বা ফেলে দিই। এমন অবস্থা থেকে সচেতনতার মাধ্যমে বেরিয়ে আসতে হবে।

Top