নতুন সাত দাবিতে মাঠে কর্মচারী সংগঠন - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ১১ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ

নতুন সাত দাবিতে মাঠে কর্মচারী সংগঠন


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক,আলোকিত বার্তা :সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ বাতিলের দাবিতে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের ৪ নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কর্মচারীরা। একই সঙ্গে তারা আরও নতুন সাতটি দাবি উপস্থাপন করেন।তারা বলেন, দ্রুত অধ্যাদেশ বাতিল না করলে রোববার থেকে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা আসবে। নতুন সাত দাবির মধ্যে আছে-১০ থেকে ২০তম গ্রেডধারীদের পদনাম পরিবর্তন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মতো তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের রেশন প্রদান, অবিলম্বে নবম পে-স্কেল ঘোষণা, আগের মতো টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান, সচিবালয়ে কর্মরত কর্মচারীদের জন্য টিপটপ ভাতা প্রদান, ১০০ ভাগ পেনশন পুনর্বহাল ও পেনশন গ্র্যাচুইটির হার ১:৫০০ নির্ধারণ এবং সচিবালয়ের সব ব্লকপদ বিলুপ্ত করে সমপদনাম বেতন ও সম্মান অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বুধবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম নতুন দাবিগুলো ঘোষণা করেন। দ্রুত দাবি মানা না হলে রোববার থেকে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। মিছিল শেষে অধ্যাদেশ বাতিলের জন্য সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন মুর্শিদকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় কর্মচারীরা সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের সামনে বাদামতলায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। এরপর তারা মিছিল নিয়ে সচিবালয় চত্বর প্রদক্ষিণ করেন। তারা ৬ নম্বর ভবনে সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমীন এস মুর্শিদকে স্মারকলিপি দেন। সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো- চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিল চান। ফলে কোনো সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন আমরা মানব না। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে আহ্বায়ক করে পর্যালোচনা কমিটি গঠনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে কর্মচারীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সুপারিশ দেবেন। তবে এখন পর্যন্ত আমরা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আমন্ত্রণ পাইনি।

তিনি বলেন, কর্মচারীদের দাবি সংবলিত পোস্টার লাগানো হয়েছিল। যারা পোস্টার ছিঁড়েছে সিসিটিভির মাধ্যমে তাদের শনাক্ত করে আমরা তাদের পরিচয় প্রকাশ করব। ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে চোরাবালিতে আটকে ফেলার জন্য ফ্যাসিস্ট সরকারের কিছু আমলা এই আইন তৈরি করেছে। আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি। যদি বুধবারের মধ্যে তাদের প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে-এমনও হতে পারে বিভাগীয় সম্মেলন থেকে কঠোর কর্মসূচি আমরা ঘোষণা করব। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই কিন্তু আমাদের বন্দি করে আপনারা শান্তিতে দেশ পরিচালনা করতে পারবেন এটা কি হতে পারে? আমরা হলাম বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশন। যদি ফাউন্ডেশনটাই উপড়ে ফেলেন তাহলে আপনারা কীভাবে কাজ করবেন?নুরুল ইসলাম আরও বলেন, আগামীকাল সচিবালয়ের চার নম্বর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ওই ভবনে গণসংযোগ কর্মসূচি করা হবে। আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। রোববার আমরা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। কর্মচারী ঐক্য ফোরামের মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম বলেন, কোনো ধরনের গোঁজামিল, বাহানা, কালক্ষেপণ আমাদের টলাতে পারবে না। দিন যত যাবে, দাবির সংখ্যা আরও বাড়বে। সুতরাং এখনো সময় আছে নিবর্তনমূলক ও কালো অধ্যাদেশ বাতিল করুন।

ঈদের ছুটির পর সোমবার (১৬ জুন) ফের আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা। সোম, মঙ্গল ও বুধবার তারা সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন। চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে। এমন বিধান রেখে ২৫ মে সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করা হয়। এর আগে ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির খসড়া অনুমোদন হয়। আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে ২৪ মে থেকেই সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব সংগঠন সম্মিলিতভাবে আন্দোলন করে আসছে। তারা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসাবে অবহিত করছেন।

Top