জনপ্রশাসন সংস্কারে স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে এক ডজন কমিশন গঠন করা হয়েছে
মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম:জনপ্রশাসন সংস্কারে স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত কমপক্ষে এক ডজন কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশনের সুপারিশ প্রতিবেদনের বাস্তবায়ন করা হয়েছে সামান্যই। বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সংস্কারে অনাগ্রহী ছিল রাজনৈতিক সরকারগুলো। তাই এত কমিশন করার পরও প্রশাসন ঘুরপাক খাচ্ছে সেই তিমিরেই।গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো জনপ্রশাসনেও সংস্কারের বিষয়টি আলোচিত হয়। গঠিত হয় সংস্কার কমিশন। চার মাসের মধ্যে সুপারিশ প্রতিবেদনও দাখিল করে কমিশন। তবে এবার অনেকেই আশাবাদী জনপ্রশাসন সংস্কার নিয়ে। তারা বলছেন, সংস্কার বাস্তবায়নে সরকারের সদিচ্ছা গুরুত্বপূর্ণ। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ নেই। অন্য সরকারগুলো যা পারেনি এ সরকার তা পারবে।আছে ভিন্নমতও। আগের অভিজ্ঞতায় কেউ কেউ এবারও আশার আলো দেখছেন না। তারা বলছেন, এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। প্রশাসনে বড় পরিবর্তন আনতে হলে তাকে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ওপর নির্ভর করতে হবে। এটি কঠিন। এছাড়া দৃশ্যমান সংস্কারের জন্য যে সময়ের প্রয়োজন সেটাও এ সরকার পাবে বলে মনে করছেন না তারা।
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার পর এখন পর্যন্ত জনপ্রশাসন সংস্কারে সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেস্টোরেশন কমিটি (সিএআর), মার্শাল ল কমিটি, প্রশাসনিক সংস্কার ও পুনর্গঠন কমিটি (সিএআরআর), অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড সার্ভিসেস রি-অর্গানাইজেশন কমিশন (এএসআরসি), পে অ্যান্ড সার্ভিস কমিশন (পিঅ্যান্ডএসসি), সিভিল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রিফর্ম কমিশন (সিএআরসি), অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রি-অর্গানাইজেশন কমিটি (এআরসি), রেগুলেটরি রিফর্ম কমিশনসহ (আরআরসি) বিভিন্ন কমিশন গঠন করা হয়।কিন্তু এত বছরেও জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। দলীয়করণ চরম অবস্থায় নিয়ে গেছে প্রশাসনকে। একই সঙ্গে প্রশাসনে কর্মকর্তা বা বিভিন্ন ক্যাডারদের মধ্যে দ্বন্দ্বও ক্রমেই বেড়েছে।এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৩ অক্টোবর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।