শহিদরা একটা বৈষম্যহীন-মানবিক সুন্দর বাংলাদেশ চেয়েছিল
মোহাম্মাদ নাসির উদ্দিন :জুলাই বিপ্লবের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ কোনো অপকর্ম না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, শহিদরা একটা বৈষম্যহীন-মানবিক সুন্দর বাংলাদেশ চেয়েছিল। দুর্নীতি-দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ চেয়েছে। তারা চলে গেছে, আমানত আমাদের ঘাড়ে। তাদের রক্তের দিকে একটু তাকান। তরতাজা সেই শিশু, যুবক, নারী-পুরুষের দিকে তাকান। যারা জীবন দিয়েছে, তাদের দিকে তাকিয়ে বিপ্লবের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ এমন কোনো অপকর্ম কেউ করবেন না। যদি করেন, শহিদদের আত্মা কষ্ট পাবে। তাদের রক্তের অপমান করা হবে। আর জীবিত শহিদ, যারা পঙ্গু হয়ে আছে; তারা ভীষণ কষ্ট পাবে। মজলুম দেশবাসী অভিশাপ দেবে।বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে চব্বিশের রক্তস্নাত গণ-অভ্যুত্থানে শহিদদের তথ্য সংবলিত ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার শহিদ যারা’ শীর্ষক স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জামায়াতের এ অনুষ্ঠানে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, শহিদপরিবার ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। এ সময় জুলাই-আগস্টে গণ-অভ্যুত্থানের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রকাশ করা হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাব ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট প্রেস ক্লাবে একযোগে ‘জুলাই বিপ্লবের শহিদ স্মারক’-মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের কাছে মুক্তিকামী সবাই ছিলেন মজলুম। ২৪-এর গাজি ও শহিদ পরিবারগুলোর হতাশা কিছুটা দূর করতে অসম্পূর্ণ রেখেই শহিদ স্মরণিকা আজ প্রকাশিত হলো। এ স্মরণিকা পূর্ণাঙ্গ করার কাজ চলমান থাকবে। বৈষম্য, দুর্নীতি ও দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবার মধ্যে জুলাই বিপ্লবের চেতনা সমুন্নত রাখতে হবে।জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপা নেতা রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, শহিদ আলিফের বাবা গাজীউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, উত্তরের সেক্রেটারি ড. রেজাউল করিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও আজ অবধি মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের নিয়ে কোনো স্মারকগ্রন্থ প্রকাশিত হয়নি। সংখ্যা নিয়ে চলছে বাগাড়ম্বর। জুলাই বিপ্লবের শহিদ স্মারক প্রকাশ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল, রাষ্ট্র সেটি করতে পারেনি। সেই কাজটি করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সংগ্রামের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাজ্জাদ রহমান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলাওয়ার হোসেন, কামাল হোসাইনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।