জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে

মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া : জাতীয় নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি জানান, ওই নির্বাচনে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ব্যবহারের পরিকল্পনা নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা চিন্তা করছেন না বলেও জানান তিনি। মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি এসব কথা বলেন।বিজয় দিবসের দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখ করেন। তিনি আগামী বছরের শেষের দিকে বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের কথা বলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য আমরা দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করেছি। জাতীয় নির্বাচনের জন্য যেসব প্রস্তুতি দরকার, তার সবই আমাদের রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচনের যে সময়ের ধারণা দিয়েছেন, সে অনুযায়ী নির্বাচন করতে আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। তিনি বলেন, ইভিএম অনেক ঝামেলার। আমরা এই ঝামেলার মধ্যে যাব না। নির্বাচন ব্যালটে করারই পরিকল্পনা আমাদের।স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে ইন্ডিকেশন দিয়েছেন, সেটা জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তিনি স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয়ে কিছু বলেননি। আমাদের যারা স্টেকহোল্ডার রাজনৈতিক দল, তারাও সংসদ নির্বাচনের কথা বলেছে। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার থেকে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলেছে। কাজেই আমরা সংসদ নির্বাচনের কথা ভাবছি। এই মুহূর্তে স্থানীয় নির্বাচনের কোনো চিন্তা আমাদের নেই।

জাতীয় সংসদের আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ প্রশ্নে সিইসি বলেন, সীমানা পুনর্নির্ধারণ হবে ন্যায্যতার ভিত্তিতে। অতীতের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে যদি কোনো অনিয়ম হয়, কোনো প্রার্থীকে জেতানোর জন্য বা কাউকে হারানোর জন্য উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কোনো সীমানা পুনর্নির্ধারণ হলে আমরা সেটা অবশ্যই দেখব। আমরা ন্যায্যতার ভিত্তিতে এটা করব। ভোটার তালিকা হালনাগাদের বিষয়ে সিইসি বলেন, ২ মার্চ আমাদের হাতে একটি নতুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আসবে। এরপর আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করব। অনেকে মারা গেছেন, তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। অনেকে বাদ পড়েছেন। অনেক বিদেশি ভোটার হয়েছেন। ভোটার ডুপ্লিকেশন হয়েছে, এমন তথ্য আমরা পাচ্ছি। এগুলো যাচাই-বাছাই করে আমরা ওই তালিকা সংশোধন করব।নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা একটা সময়সীমা ঘোষণা করেছেন। সেই অনুযায়ী আমরা এগোব। আমরা পাবলিকলি কোনো রোডম্যাপ ঘোষণার চিন্তা করছি না। তবে কাজ করার জন্য আমাদের নিজস্ব একটি কর্মপরিকল্পনা তো থাকবেই। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করছেন। সেখানে যদি সব বিষয় উঠে আসে। তাহলে আর আমাদের সংলাপের প্রয়োজন নেই। তারপরও যদি কিছু থেকে থাকে সেটি আমরা পরে দেখব।এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আসবে কি আসবে না, বা আসতে দেওয়া হবে কি হবে না, এ নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। কারণ অনেকে আবার শুনতেছি মামলাও করছে তাদের বিরুদ্ধে, দলের বিরুদ্ধে, নির্বাচনে যেন আসতে না পারে; পত্রিকায় দেখেছি আর কি। কোর্ট থেকে রায় এলে তো আমাদের সে অনুযায়ীই করতে হবে। আর রাজনৈতিক ফয়সালা কী দাঁড়ায় দেখি। আপনারা একটু অপেক্ষা করেন, আমরাও অপেক্ষা করি। সময় এলে দেখতে পারবেন।