দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি ও অর্থ পাচার - Alokitobarta
আজ : মঙ্গলবার, ১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
প্রাথমিকে পোষ্য কোটা বাদ, মেধার ভিত্তিতে ৯৩ শতাংশ শিক্ষক নিয়োগ কোনো অবৈধ বিদেশির জায়গা হবে না বাংলাদেশে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি পরিবর্তন হলেও আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা হেড অফিসে রয়েছে বহাল তবিয়তে এিপুরা , কাশ্মীরসহ ভারতের বিরোধীপূর্ণ বিভিন্ন রাজ্যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন জরুরি এিপুরা , কাশ্মীরসহ ভারতের বিরোধীপূর্ণ বিভিন্ন রাজ্যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন জরুরি এিপুরা ,কাশ্মীরসহ ভারতের বিরোধীপূর্ণ বিভিন্ন রাজ্যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন জরুরি এবার বিআরটি লেইনে গুলিস্থান হয়ে গাজীপুর চলাচল করবে বিআরটিসির এসি বাস ষড়যন্ত্র রুখে দিতে প্রস্তুত অবসরপ্রাপ্ত সেনারা,ভারতের সঙ্গে আর নতজানু পররাষ্ট্রনীতি নয় অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে ফ্যাসিজমের প্রেতাত্মারা এখনো অবস্থান করছে থেমে আছে গ্রেফতারের উদ্যোগ

দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি ও অর্থ পাচার


মু.এ বি সিদ্দীক ভুঁইয়া:আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দেশের মানুষের মনোজগতে বড় পরিবর্তন এসেছে। যেসব রাজনৈতিক দল বা নেতা এই পরিবর্তন বুঝতে পারবে না, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি ও অর্থ পাচার। এটি রোধ হলে সব কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব। এখন গণতন্ত্র ও উন্নয়নের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে দেশ। ফলে নাগরিকদের যত ধরনের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা, তা তুলে ধরার এখনই সময়।রোববার রাজধানীর হোটেল লেকশোরে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংলাপের বিষয় ছিল ‘বাংলাদেশে ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকামের (ইউবিআই) কার্যকারিতা মূল্যায়ন’। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও ড. মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান এবং গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সিনিয়র রিসার্স ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান। তাদের মতে, দেশে ২৪ লাখ মানুষ কর দেন। অথচ ১ কোটির বেশি মানুষের ক্রেডিট কার্ড আছে। আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য পড়াশোনা শেষে এক বছর পর্যন্ত রাষ্ট্র থেকে ভাতা দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির সংস্কার প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত আছে।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এ মুহূর্তে দেশ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছে। এরকম সন্ধিক্ষণে আমাদের যত ধরনের স্বপ্ন, যত ধরনের আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, তা তুলে ধরার এটিই সঠিক সময়। তিনি বলেন, আমরা এমন একটা সমাজ গড়ব, যেখানে মানুষ উন্নয়ন ও বিকাশের নিশ্চয়তা পাবে। সেই নিশ্চয়তার অন্যতম বিষয় হলো মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া। জীবনধারণের ন্যূনতম উপকরণ নিশ্চিত করা। দেশের সংবিধানেও প্রতিটি নাগরিককে সামাজিক, আর্থিক ও মানবিক নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া আছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব। এ মুহূর্তে দেশে বিভিন্ন ধরনের সংস্কার আলোচনা চলছে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে, এটিই এখন সময়। সব নাগরিকের জন্য পর্যায়ক্রমে একটি ন্যূনতম আর্থিক নিশ্চয়তা দিতে পারি কি না, তা আজকের গবেষণায় উঠে এসেছে।

আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সব ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব। তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে অর্থের অপচয় হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে পারলে সম্পদের কোনো সমস্যা হবে না। মানুষকে সেবা দিলে কর আদায় অনেক সহজ হয়ে যায়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে বড় পরিবর্তন এসেছে। যেসব রাজনৈতিক দল বা নেতা এ পরিবর্তন বুঝতে পারবেন না, তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কিংবা জনসংখ্যার বোনাস বিবেচনায় বিএনপি শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবে। আমরা ইউনিভার্সাল হেলথ কেয়ারের (সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা) কথা বলেছি। এটা যুক্তরাজ্যের মডেলে করা। বাংলাদেশের চিকিৎসার খরচ আফগানিস্তানের চেয়েও বেশি। এ মডেল বাস্তবায়ন হলে মানুষের খরচ অনেক কমে আসবে। এতে আয়বৈষম্যও কমে আসবে। তিনি বলেন, চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য পড়াশোনা শেষে এক বছর পর্যন্ত রাষ্ট্র থেকে ভাতা দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির সংস্কার প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত আছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, দেশে ২৪ লাখ মানুষ কর দেন। অথচ ১ কোটির বেশি মানুষের ক্রেডিট কার্ড আছে। অর্থাৎ দেশের মানুষের বিরাট একটা অংশ কর দিচ্ছে না। এটি বিবেচনায় নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধ করা যাবে কি না, সেটি বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারলে ন্যূনতম মজুরিও বাস্তবায়ন করা সম্ভব।গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সবার জন্য যেন ন্যূনতম জীবনমান নিশ্চিত করা যায়, এজন্য ইউবিআই করা হয়। বাংলাদেশে এমন প্রোগ্রাম হাতে নেওয়ার কী ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে, তা এই গবেষণার উদ্দেশ্য। ইউবিআই শুধু উন্নত দেশেই নয়, নিম্নমধ্য আয়ের দেশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। সবাইকে ন্যূনতম আয় দেওয়া হলে এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু এখানে বড় চিন্তার জায়গা হলো আর্থিক সক্ষমতা হবে কীভাবে। তৌফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের দারিদ্র্য কমেছে। কিন্তু বৈষম্য বেড়েছে। দারিদ্র্য পরিস্থিতি এমন অবস্থায় আছে, হঠাৎ একটা শক এলে অনেক মানুষ আবার দরিদ্র হয়ে যায়। সামাজিক নিরাপত্তায়ও অনেক দুর্বলতা আছে। ভাতা অনেকেই পায় না। আবার দীর্ঘদিন ভাতার অঙ্ক বাড়ানো হয়নি। এতে এ কর্মসূচির কার্যকারিতা হারিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের আর্থিক সক্ষমতা খুব একটা ভালো না। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে কর আদায় কম।রজওয়ান রহমান বলেন, ইউবিআই যেসব দেশে আছে, সেখানে কর জিডিপি অনুপাত কমপক্ষে ১০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশে উন্নতি হওয়ার পরে মাত্র ১ দশমিক ২ শতাংশ ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বেড়েছে। এ রেশিও দিয়ে অর্থায়ন সম্ভব কি না, সেটার পাশাপাশি অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ তো আছেই। তিনি বলেন, এটা যেহেতু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছাবে, এখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটার একটা রোডম্যাপ তৈরি করতে পারে।

Top