গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা - Alokitobarta
আজ : বৃহস্পতিবার, ২০শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা


এবি সিদ্দীক ভূইঁয়া:এক ঝাক আওয়ামীলীগ সরকারের অনুসারীদের দখলে রয়েছে বতর্মান ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর।ছাত্র জনতার বিপ্লবের পরেও বড় ধরনের ষড়যন্ত্র করে চলছে আওয়ামীলীগের অনুসারীরা।কোন এক অদৃশ্য পক্ষের নির্দেশে গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন অধিদপ্তরে ঘুগ যুগ ধরে চেয়ার আঁকড়ে ধরে থাকা কর্মকর্তারা । স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পুরো আমল জুড়ে এসব কর্মকর্তারা ঢাকা ও আশেপাশে গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল থেকে ফয়দা লুটেছেন। এসব কর্মকর্তাদের অনেকের সাথেই সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক সচিবের সঙ্গে ছিল নিবিড় সম্পর্ক।সূত্র জানায়, স্বৈরাচার সরকারের পতনের আগ পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি অংশ এসব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পৌঁছে যেত সাবেক সচিব ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পকেটে। কেউ কেউ সচিবের বাসায় বাজার পর্যন্ত পৌঁছে দিতেন বলেও জানা গেছে।ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ভক্তবৃন্দের মেলায় দিনকে দিন অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তর। শোনা যাচ্ছে, কোন এক অদৃশ্য পক্ষের নির্দেশে গভীর ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা। সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের অনেক দোসরদের সঙ্গে এসব কর্মকর্তাদের প্রতিনিয়ত যোগসাজস রয়েছে বলে সূত্র থেকে জানা গেছে।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আনসার বিদ্রোহের মত ফায়ার সার্ভিসেও বড় ধরনের একটি তুলকালাম’ ঘটাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন অধিদপ্তরের কিছু বিপদগামী কর্মকর্তা। তাদের সাথে জড়িত রয়েছেন আজ্ঞাবহ কয়েকজন ছোট কর্মকর্তা ও কর্মচারী।ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমল সুবিধাভোগী এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে ডিরেক্টর অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ তাজুল ইসলাম, ডিডি সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ডিডি আখতারুজ্জামান,অধ্যক্ষ
মামুন মাহমু নাম অন্যতম। তাদের ষড়যন্ত্র বিস্তারে ফুট ফরমায়েশ করছেন একাধিক ফায়ার ফাইটার সহ দুইজন ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর। তাদের মাধ্যমে ফায়ার সার্ভিস এর মত সুশৃংখল একটি বাহিনীতে আনসার বিদ্রোহের মত পরিস্থিতি তৈরি করতে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বিশ্বস্ত সূত্র।ইতিমধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের ভেতরে বিভিন্ন ভাবে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এসবের সাথে আওয়ামীলীগ সরকারের সময় মধু খাওয়া সুধিধাবাদী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দোসর দীর্ঘদিন ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় চাকরি করা এই কর্মকর্তারা।এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে (ডিএডি ঢাকা এডি ঢাকা এবং সর্বশেষ ডিডি ঢাকা) সালেহ উদ্দিন আহমেদ, এডি ওয়ার হাউস মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং ডিরেক্টর অপারেশন লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ তাজুল ইসলাম।ডিডি আখতারুজ্জামানঅধ্যক্ষ মামুন মাহমু।সূত্র জানায়, এরা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য ফায়ার সার্ভিসের ভিতর তীব্র অসন্তোষ তৈরির উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রের জাল বিছিয়েছেন। পাশাপাশি এক্সটিংগুইশার ব্যবসায়ী ফায়ার ফাইটার হান্নান এবং সাবেক ছাত্রলীগ ক্যাডার রেজায়ে রাব্বিকে বেছে নিয়েছে।মহাপরিচালক ফায়ার এবং ফায়ার সার্ভিস এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের পরিকল্পনা করেন যা আনসার বাহিনীর মতো বিদ্রোহের প্রথম ধাপ হিসাবে মনে করছেন উক্ত সেক্টরে সংশ্লিষ্টরা।

ফায়ার সার্ভিসের মত সেবামূলক একটা সুশৃংখল বাহিনীর বিরুদ্ধে কিভাবে ‘চেইন অফ কমান্ড’ ভঙ্গ করে সংবাদ সম্মেলন করার বিষয়টা বিদ্রোহ পরিকল্পনার প্রথম ধাপ হিসাবে মনে করছেন অনেকেই।এসব কর্মকাণ্ডের পিছনে অবশ্যই আওয়ামী লীগের কোন অদৃশ্য রাঘব বোয়ালরা ইন্ধন দিতে গোপনে জড়িত রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের একজন বিভাগীয় প্রধান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এমন বিদ্রোহ পরিকল্পনা যদি হয়েও থাকে সেটা যেন বাস্তবায়ন না করতে পারে সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতই কৌশলী হওয়া উচিত।পাশাপশি পরিকল্পনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইনুদ্দিন আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে একাধিক সূত্র থেকে এমন গুঞ্জন রয়েছে। তবে এসব নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। ফায়ার সার্ভিস রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবামূলক সুশৃংখল প্রতিষ্ঠান। এখানে কোন দুষ্কৃতিকারীর প্রশ্রয় দেয়ার সুযোগ নেই।বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।ডিডি আখতারুজ্জামানের পদোন্নতি হয়। ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের অনুসারী হওয়ার সুবাদে সিন্ডিকেট গঠন করে নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য ছাড়াও নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।নামে বেনামে রয়েছে সম্পদের পাহাড়!মন্ত্রণালয়ের যে পদ উন্নতির ফাইল রয়েছে তাতে উল্লেখ রয়েছে তিনি আওয়ামী লীগের লোক। সকল অপরাধ থেকে রেহাই পেয়ে যায় এই কর্মকর্তা।ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন।পরে ডিজি পরিবর্তন হলে ফায়ার সার্ভিসের রেজায়ে রাব্বি নামে এক কর্মকর্তা আবার যোগদান করে। যিনি বিগত দিনে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। আওয়ামীলীগ নেতা হিসেবেই বাগিয়ে নিয়েছিলেন ফায়ার সার্ভিসে চাকরি। দেশে সদ্য সংঘঠিত ছাত্র-জনতার বিপ্লব ঠেকাতে সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা রাব্বি মোটা অংকের অর্থ সহায়তার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়ে নিয়মিত সহযোগিতা করেছিলেন বলে জানা গেছে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সাময়িক বরখাস্ত ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর জনাব রেজায়ে রাব্বী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ গণমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য তুলে ধেরেছেন। এতে এই সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিষয়ে জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো বিভ্রান্তি তৈরি না হয় সে কারণে ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বীর বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।

ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী ২০১৭ সালের ৮ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ৪ বছর ৫ মাস ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৪৭, ৬১ ও ৭১) কর্মরত ছিলেন। তাকে ২০২১ সালের ১ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালকের অধীনে লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (চট্টগ্রাম-৪৭) বদলি করা হয়। মাত্র ৮ মাসের মাথায় তৎকালীন আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে নিজেকে সাবেক ছাত্রলীগ পরিচয় দেয়া রেজায়ে রাব্বী পুনরায় ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (ঢাকা-৭২) বদলি হন। এর পর থেকে পুনরায় তিনি ২ বছর ১ মাস ফায়ার সার্ভিস ঢাকার সহকারী পরিচালকের অধীনে বিভিন্ন লাইসেন্স এলাকায় বা কর্ম অঞ্চলে (যথাক্রমে ঢাকা-৭২ ও ৫৭) কর্মরত ছিলেন। গত ১৯-০৮-২০২৪ খ্রিঃ তারিখে তাকে লালমনিরহাট-১ কর্ম অঞ্চলে সংযুক্ত আদেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে অদ্যাবধি কর্মস্থলে যোগদান করা থেকে বিরত আছেন।গত ১৭-০৭-২০২৪ খ্রিঃ দেশে চলমান পরিস্থিতিতে সকল ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টরগণকে নিজ নিজ কর্ম অঞ্চলের ফায়ার স্টেশনে অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর রেজায়ে রাব্বী তৎকালীন কর্ম অঞ্চলের অধীন ফায়ার স্টেশনে গত ১৯-০৭-২০২৪ খ্রিঃ থেকে ২২-০৭-২০২৪ খ্রিঃ বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকেন। তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করে নতুন সংযুক্ত আদেশকৃত কর্মস্থলে যোগদান থেকেও বিরত থাকেন। এ সময় কিছু গণমাধ্যমে তার বিষয়ে “ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত ফায়ার সার্ভিস কর্মী রাব্বী লাপাত্তা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধিদপ্তরের ‘সাময়িক বরখাস্ত আদেশ-৩০(২৪)’ দ্বারা তাকে ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগে গত ০৫-০৯-২০২৪ খ্রিঃ ২০১৮ সালের সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার ১২ নং বিধিমতে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মূলত নিজের অপরাধ আড়াল করার লক্ষ্যে তিনি মিডিয়ায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বিরুদ্ধে বিষোদগারমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন, যা চাকরি শৃঙ্খলার পরিপন্থী।জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো ভ্রান্ত ধারণা তৈরি না হয় সেজন্য উল্লিখিত বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের বক্তব্য তুলে ধরা হলো।সুত্র ফায়ার সার্ভিস মিডিয়া সেল।নতুন ডিজি আসার সাথে সাথে চাকুরীতে বহাল রয়েছেন।

বার বার ঢাকায় চাকুরী করেন মামুন মাহমু অধ্যক্ষফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ট্রেনিং কমপ্লেক্স, মিরপুর, ঢাকা বতর্মানে কর্মরত রয়েছে । তিনি খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডিডি ছিলেন নিজ জেলা নোয়াখালীতে তার বাবা ডিসি অফিসের পিওনের চাকুরী করতেন।মামুন মাহামুদের পাচ ভাই ৩ বোন (আট ভাই বোনের বিতরে মামুন মাহামুদ ওরফে শিমুল দ্বীতিয় )একুশে এক্সপ্রেস নামের পরিবহন ২০১৮ সালে ক্রয় করেন।যা বিভিন্ন রুটে চলমান রয়েছে।নিজ এলাকায় ২ ০ একর জমি ক্রয় করেছেন যার অনুমান মূল্য প্রায় ৬০ কোটি টাকা, উত্তরায় তিনটি ফ্ল্যাট যার মূল্য ৬ কোটি লাখ টাকা, বসিলায় ছয় তলা একটি ভবন যার মূল্য তিন কোটি টাকা, তার ভাই ও বোনদের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন, গুলশান তিন নাম্বারে দুটি ফ্ল্যাট যার মূল্য ২ কোটি ৪ লাখ টাকা,স্ত্রীর জন্য ৮২ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নিজ এলাকায় কিং ফাহাদ চাইনিজ রেস্টুরেন্ট যার মূল্য তিন কোটি টাকাসহ আরও নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনের নামে প্রায় কয়েকশো কোটি টাকা সম্পদ অর্জন করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে উপ পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) হিসেবে অধিদপ্তরে কর্মরত ছিল । ফায়ার ফাইটার ম্যান নিয়োগ বাণিজ্য করছে। আওয়ামী লীগের অনুসারী ছাত্র থাকা কালিন সময় ছাত্রলীগের নোয়াখালীর শাখার পদপদবী থাকার সুবাদে দুর্নীতি সহ নানা বিষয় অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও উপরে নির্দেশে আমলে নেয়নি ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর ।মামুন মাহমু অধ্যক্ষ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ট্রেনিং কমপ্লেক্স, মিরপুর, ঢাকা বতর্মানে কর্মরত রয়েছে । নানা অভিযোগে ঝড়জরিত মামুন মাহামুদ ! কতৃপক্ষ নিচ্ছে না কোন পদক্ষেপ।নামে বেনামে রয়েছে সম্পদের পাহাড়! এক মামুন মাহমুদের বিরুদ্ধে রয়েছে রাজধানীতে ৭টি জিডি সহ ছিল গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তারপরও পেয়েছেন পদোন্নতি। এই শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।তার এসব আমলে নেয়নি কারণ ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগের সাবেক ছাত্র নেতা।সিন্ডিকেট গঠন করে নিয়োগ, বদলি বাণিজ্য ছাড়াও নানাভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ সাবেক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ -পরিচালক ( প্রশাসন অর্থ ) সাবেক মামুন মাহমুদের বিরুদ্ধে । বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে তাকে খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ -পরিচালক হিসাবে ঢাকা থেকে বদলি করা হয় ।টাকা দিয়ে চাকরি না পেয়ে দিশেহারা অনেকেই । টাকা চাইতে গিয়ে হত্যার হুমকি ও লাঞ্চিত হয়ে জিডি করতে বাধ্য হয়েছেন ভুক্তভোগীদের কেউ কেউ।

ভুক্তভোগীদের একজন শারমিন সুলতানা । নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মাহতাব মৃধার মেয়ে । ২০১৬ সালের নভেম্বরে তাকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে নগত ১৫ লাখ টাকা নেন মামুন মাহমুদ । সেই সুবাদে বিভিন্ন সময় পছন্দের জায়গায় নিয়ে গিয়ে যৌন হয়রানি করেন । তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এবং প্রতিকার চেয়ে ২০১৬ সালে ৭ নভেম্বর এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। আরেকজন ভুক্তভোগী নাসির ফকির। শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন তিনিও । ডায়েরি নং- ১৩৮৯ তাং- ৩১/১২/২০১৫।

শিশু মৃত্যু ঘটনায় থানা পুলিশ ইউডি মামলা করে । শিশু মৃত্যুর জন্য মামুন মাহমুদকে দায়ি করা হলে প্রাণনাশের হুমকি দেন এবং শারীরিক নির্যাতন করেন । এঘটনায় মামুন মাহমুদসহ কয়েকজনের নামে থানায় জিডি করেন নাসির ফকির । ভুক্তভোগী এম মোর্শেদ জিডি করেছেন রমনা মডেল থানায় । ২০১৮ সালে দায়েরকৃত জিডি নং- ২১২৮ । নাজমা খাতুন পুষ্পিতা আরেক ভুক্তভোগী । রমনা থানায় জিডি করেছেন । জিডি নং- ১৩২৭ তাং- ১৮-৪-১৪। উচ্চ আদালতে জনস্বার্থে রিট পিটিশন নং- ৩৩৭২- ২০১৪ মামলা করেন আরো কয়েকজন ভুক্তভোগী।

রমনা থানায় জিডিও করেন। মোজাম্মেল হক ২০১২ সালে সূত্রাপুর থানায় তার নামে জিডি করেন । নং- ১৪১৬ । মোজাম্মেল হক মামলা করেন । মামলা নং- ২০৪-১৬ প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তৎপ্রেক্ষিতে বংশাল থানা ওসিকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত বিজ্ঞ জেলা ম্যজিস্ট্রেট আদালত ।

ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতসহ একাধিক মামলাও রয়েছে তার নামে এমন কথা জানান আরও অনেকেই । এসব কর্মকান্ড নিয়ে জাতীয় দৈনিকে একাধিক সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । ব্যাপক প্রচার থাকার পরও তার ও তার সিন্ডেকেট সদস্যদের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি অদৃশ্য কারনে । দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে ঢাকাতেই কর্মরত রয়েছেন তিনি।ঘুরে ফিরে ঢাকাতেই রয়েছেন।

মামলা ও একাধিক জিডি থাকার পরেও তার হয়েছে প্রমোশন । আবার টাকা দেয়ার পর চাকরি না হলেও ভুক্তভোগী ঘাপটি চুপটি মেরে বসে থাকতে হয় । প্রতিবাদ করলেই বিপদ । হামলা হুমকি আর হয়রানির শিকার হতে হয় । অনেক ভুক্তভোগী ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ ।
তার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়,দুদকসহ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্তে নেমেছিল সেই তদন্তে সঠিক তথ‍্য উঠে আসেনি কারন সাবেক ছাত্র লীগ নেতা পরিচয় থাকারর কারন ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এলাকার লোক এবং তার আস্থাভাজন ব‍্যক্তি হওয়ার সুবাদে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অধিদপ্তরের পরিচালক জানান,মামুন সাহেব সম্পর্কে তেমন কিছু আমি জানিনা।লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতি কখনো ছোট বড় নই। দুর্নীতি তো দুর্নীতিই সেটি যেমনই হোক। ছোট ছোট দুর্নীতি থেকেই বড় বড় দুর্নীতির জন্ম দেয়। দুদক আগের চেয়ে ভালো কাজ করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। দুদকের দুর্নীতির বিষয়ে আর বিশদ অনুসন্ধান প্রয়োজন। একইসঙ্গে দুদকের জনবলেরও ঘাটতি রয়েছে সেগুলোর সমাধান প্রয়োজন। কেননা যে তুলনায় দুর্নীতির অভিযোগ আসে সেই তুলনায় দুদক অনুসন্ধান করতে পারে না। যদি সকল দুর্নীতি দুদক অনুসন্ধান করতে পারতো তাহলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে আসত। তবে আমরা আশাবাদী দুর্নীতিবাজদের শিকড় উপড়ে ফেলা সম্ভব সেটি একদিন হবেই।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা অনেক দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছি। যারাই অপরাধ করুক না কেন আমাদের অনুসন্ধানে যদি কোনোভাবে প্রমাণিত হয়।’তবে আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করব এবং প্রয়োজনীয় যত ব্যবস্থা আছে তা নেব। কোনো দুর্নীতিবাজকে ছাড় দেওয়া হবে না।

তার এলাকার এক ব‍্যক্তি নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটা সত্য। আওয়ামী লীগের তথ্য সন্ত্রাস সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছরিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এদের মূল উদ্দেশ্যই হলো ছাত্র জনতার মহান উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরে মহাপরিচালক,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল জানান, অভিযোগ পত্র এখনো পাইনি।হাতে পেলে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে আইনের আওতায় এনে বিচারের ব‍্যবস্থা করা হবে।

Top