ছাত্র জনতার মনোনীত সরকার ক্ষমতায় থাকলেও ফায়ার সার্ভিসে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা এখনো সক্রিয়, রয়েছেন বহাল তবিয়তে
এবি সিদ্দীক ভূইঁয়া:প্রভাতেই বোঝা যায় দিন কেমন যাবে। ফায়ার সার্ভিসে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা এখনো সক্রিয়। নতুন মহাপরিচালককে ভুলভাল বুঝিয়ে নিয়ম বহির্ভূত কয়েকজন উপসহকারী পরিচালক কে বদলি করা হয়েছে। যেখানে কথা এবং কাজের যোজন যোজন তফাৎ। টাকার কাছে যে সকলেই অসহায়, বলে লাভ কি? নতুন মহাপরিচালক বলে ছিলেন দুই বছরের আগে কোন বদলি হবে না কিন্তু বাস্তবে! দুই মাসও না এর মধ্যে বদলি। ঢাকার উপসহকারী পরিচালক শামসুদ্দুহা কে দুই মাস আগেই ঢাকা সদর জোনের উপসহকারী পরিচালক হিসাবে পোস্টিং দেখানো হয় কিন্তু দুই মাসের মধ্যে আবার বদলি।এখানেই শেষ না আরোও আছে, উপসহকারী পরিচালক গাজীপুরকে তার পূর্বের জায়গায় নারায়ণগঞ্জ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে কিন্তু কেন তিনি কি নারায়ণগঞ্জ এবং গাজীপুরেই চাকরি করবেন অন্য কোন অফিসার নেই। এখানেই শেষ না তাকে অর্ডারের মাধ্যমে দুটি জোনের দায়িত্ব দেয়া হয় যেটা ফায়ার সার্ভিসের ইতিহাসে প্রথম। নতুন মহাপরিচালক তো এইসব কিছুই জানেন না কিন্তু কে সেই নাটের গুরু যে এগুলো করাচ্ছেন। ঘুরেফিরে একটা নামই সামনে আসে উপ-পরিচালক প্রশাসন মোঃ জসিম উদ্দিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান বর্তমান মহাপরিচালকের বাড়ি চট্টগ্রাম এবং জসিম উদ্দিন এর বাড়ি ও চট্টগ্রাম,দুজনার মধ্যে অনেক সখ্যতা হয়েছে আলাপ-আলোচনা হয়েছে ,মাঠে খেলা করার জন্য তারা মাঠ সাজাচ্ছেন,খেলোয়াড় হিসেবে চট্টগ্রামের অফিসাররাই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছেন। কিন্তু নতুন মহাপরিচালক মহোদয়ের বোঝা উচিত এই জসীমউদ্দীন আওয়ামী লীগ এর প্রোডাক্ট একে নিয়ে কাজ করলে তার নিজেরও বিপদ আছে।জসীমউদ্দীনের দুর্নীতি যেন লাগামহীন ঘোড়া। যা থামানো সাধ্য নেই কারো। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতাই তার প্রমাণ। অফিস সহায়ক নারীকে যৌন হয়রানি চট্টগ্রাম বিভাগের অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদ থেকে শুরু করে ঘুষ দুর্নীতি নারী কেলেঙ্কারি সহ সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়েও বহাল তবিয়তে চেয়ার আকড়ে রেখেছেন তিনি। তাকে বাঁচাতে তৎপর ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সীমাহীন দুর্নীতি অনিয়ম ও নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগের বিষয়ে সম্প্রতি অসংখ্য দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরেও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের।
তার বিরুদ্ধে একাধিক সংবাদ প্রচার করা হলেও অদৃশ্য শক্তির বলে বহাল তবিয়তে রয়েছেন জসিম উদ্দিন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ তো দূরের কথা জসিমের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি।সূত্র জানায়, উপ-পরিচালক জসিম উদ্দিন এর বিরুদ্ধে অধীনস্থ নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানি ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগের পাশাপাশি তার চাকরি জীবনে দুর্নীতি ও অনিয়মের অসংখ্য অভিযোগ নিয়ে একাধিক জাতীয় সংবাদমাধ্যমের সংবাদ প্রচার করা হয়েছে। এসব সংবাদে তার দুর্নীতি ও অনিয়মের ভয়ংকর চিত্র ফুটে উঠলেও ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে। এমনকি সামান্য তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয়তা মনে করেনি তারা।ফায়ার সার্ভিসের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাদের হতাশা প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমকে জানান, জসিমের দুর্নীতি অনিয়ম ও নারি কেলেঙ্কারীর এমন চিত্র প্রকাশ হওয়া ফায়ার সার্ভিস এর মত একটি গৌরব উজ্জ্বল বাহিনী কলঙ্কিত হওয়ার শামিল। তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব কর্মকর্তারা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করেন।এদিকে ছাত্র জনতার উপর হামলা মামলায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কি করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দীন ঢাকার হেড অফিসে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সুবিধা পাওয়া ঢাকায় হেড অফিসে কর্মরত এই কর্মকর্তা শতকোটি টাকার সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।বার বার দুদকের মুখা -মুখি করা হলেও আওয়ামী লীগের প্রিয় ব্যক্তি হওয়ার সুবাদে অদৃশ্য ইশারায় পার পেয়ে যায় বার বার।নিজের অবৈধ সম্পদ রক্ষা ও হেড অফিসে থাকার জন্য এবং অন্য কোন সরকার ক্ষমতায় আসলে দুদকের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে।ছাত্র জনতার আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ,শ্রমিক লীগকে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।অঢেল অর্থ সম্পদের মালিক হিসেবে নিজ এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি হয়ে উঠেছেন।অথচ জাদুর কাঠি হাতে পাওয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দীনে বাবা ছিলেন দিনমজুর।বিভাগীয় তদন্ত ও দুদক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করলে তার দূর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যেত।এদিকে শতকোটি টাকার সম্পদের পাহাড়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা প্রায় শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মুখোমুখি হয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জসিম উদ্দীন।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শহরে দুটি ৬ তলা বাড়ি, ১০০ একরের বেশি জমি ও মার্কেটসহ বেশকিছু সম্পদের মালিকানা রয়েছে তার। যা তিনি নিজের নামে ছাড়াও স্ত্রী, ভাই ও শ্যালকের নামে গড়েছেন।অথচ জাদুর কাঠি হাতে পাওয়া ওই কর্মকর্তার বাবা ছিলেন দিনমজুর। এই চাকরি করে শত কোটি টাকার মালিক কীভাবে হলেন। আলাদীনের আশ্চার্য প্রদীপের সন্ধান ছাড়া এতো সম্পদের মালিক হওয়া যায় না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।জানা যায়, জসিম উদ্দীন এক সময়ে কুমিল্লায় ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে কারণে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে গত বছরের শেষের দিকে দুদকের কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। সম্প্রতি অনুসন্ধান কর্মকর্তা পরিবর্তন করে সংস্থাটির উপসহকারী পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান রুবেলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।অনুসন্ধান পর্যায়ে চট্টগ্রাম ও সীতাকুণ্ডের সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, ভূমি অফিস, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সরকারি-বেসরকারি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। যা বর্তমানে যাচাই-বাছাই পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে কুমিল্লা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক ফজলুল হকের কাছে জানতে চাইলে তিনি অনুসন্ধান পর্যায়ে কোনো বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন।
স্ত্রীকে মৌসুমি ব্যবসায়ী বানিয়েও রক্ষা পেলেন না সার্ভেয়ারড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে ঘুষ লেনদেন, দুদকের অভিযানকাস্টমসের ৬১ কেজি সোনা চুরি, রাঘব-বোয়ালদের খোঁজে দুদকঅন্যদিকে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের প্রশাসন শাখার উপপরিচালক জসিম উদ্দীনকে ফোন কিংবা মেসেজে বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও তার কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অত্যন্ত সাধারণ ঘর থেকে উঠে আসা একজন কর্মকর্তা কীভাবে এতো সম্পদের মালিক হয়েছেন, সেটাই আমাদের অনুসন্ধানের লক্ষ্য। নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদের মালিকানা ও সম্পদ অর্জনের সময়টা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি এক সময়ে কুমিল্লায় সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে হিসেবে এটা কুমিল্লা থেকে অনুসন্ধান চলছে। যতটুকু নথিপত্র পাওয়া গেছে, তাতে অবৈধ সম্পদের সত্যতা রয়েছে। তবে অভিযোগে যা বলা হয়েছে, তার সবটুকু সত্য নয়। অনুসন্ধান শেষে হলে বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জসিম উদ্দীন সীতাকুণ্ডের বাসিন্দা হলেও তার বাবার পরিচয় সন্দ্বীপ। তবে সম্পদের অভিযোগ মূলত সীতাকুণ্ডের সম্পদকে ঘিরেই। জসিম উদ্দিনের বাবা ছিল সামান্য দিনমজুর। তার শ্বশুর ছিলেন সরকারি ফায়ার সার্ভিসের একজন ফায়ার ম্যান। তার বড় ভাই সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক। তার ছোট ভাই সরকারি ছোট পর্যায়ের চাকরি করে। রানা প্লাজার ঘটনার পর সরকারি কিছু নিয়ম গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানকে বেঁধে দেওয়ার পর থেকে জসিম এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে মূলত অল্প সময়ের ব্যবধানে প্রচুর সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
চট্টগ্রামে সব শিল্পপ্রতিষ্ঠানে ফায়ার ফাইটিং লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়ন এবং ফায়ার ফাইটিংয়ের সব ইকুইপমেন্ট নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান থেকে নিতে বাধ্য করানো তার অসৎ উপার্জনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে তিনি ব্যবহার করেছেন। তবে জসিম উদ্দীন নিজের নামে সম্পত্তি কম ক্রয় করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে। তিনি প্রায় সব সম্পত্তি বউ, শালা, ভাইয়ের মেয়েসহ নিকট আত্মীয় স্বজনের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। অভিযোগে জসিম উদ্দীন একজন সরকারি কর্মচারী হয়ে প্রায় ১০০ কোটি টাকার মালিকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।অবৈধ সম্পদের মধ্যে রয়েছে- চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড স্টেশন কলেজ রোডে কালি মন্দিরের সামনে গড়ে ওঠা বদিউল আলম নিউ মার্কেট, সীতাকুণ্ডের মধ্যম মহাদেবপুরের (কলেজ রোড), ৬ তলা ভবন, জসিম নিজ নামে সীতাকুণ্ড মধ্যম মহাদেবপুর চৌধুরী পাড়া এলাকায় তার নির্মাণাধীন ৫ তলা ভবন।অন্যদিকে স্ত্রী পারভীন আক্তারের নামে সীতাকুণ্ডের চৌধুরী পাড়ায় ৬ তলা ভবন, কলেজ রোডে এসপি মার্কেট, স্ত্রীর নামে ১০০০ শতাংশ জমি, অন্য জায়গায় ২ শতাংশ জমিসহ দোকান রয়েছে।
এছাড়া জসিম উদ্দীনের বড় ভাইয়ের নামে সীতাকুণ্ডে চৌধুরী পাড়ার পূর্ব পার্শ্বে খরিদকৃত প্রায় ২৪ শতাংশ জমি ও চট্টগ্রাম ইপিজেডের ভেতরে বড় ভাইয়ের ছেলের নামে একটি কারখানা রয়েছে। আর জসিম উদ্দীনের শ্যালক মো. সেলিমের নামে ৮০০ শতাংশ ও ৫০০ শতাংশ জমি এবং দুটি নোহা গাড়ি ও ২টি প্রাইভেট কারের মালিকানা রয়েছে বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।আওয়ামী লীগের প্রিয় ব্যক্তি ছিলেন তার পরিবারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সেটা সত্য। আওয়ামী লীগের তথ্য সন্ত্রাস সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিভিন্ন প্রোপাগান্ডা ছরিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। এদের মূল উদ্দেশ্যই হলো ছাত্র জনতার মহান উদ্দেশ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা ।