ফের প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদল হচ্ছে চলতি সপ্তাহে - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফের প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদল হচ্ছে চলতি সপ্তাহে


মোহাম্মাদ মুরাদ হোসেন: ফের প্রশাসনে বড় ধরনের রদবদল হচ্ছে চলতি সপ্তাহে। মাঠ প্রশাসন সদ্য নিয়োগ পাওয়া আওয়ামী লীগ অনুসারি চিহ্নিত বেশির ভাগ জেলা প্রশাসকদের থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে। এসব ডিসি নিয়োগ নিয়ে চলছে বিতর্ক। আবার নতুন নিয়োগ পাওয়া ডিসিদের গোয়েন্দা সংস্থার গোপনীয় তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া তারাহুড়া করে নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো এবার তাদের মাঠ প্রশাসন থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এসব ডিসিদের মধ্যে ২৫ থেকে ৩০ জন ডিসিকে তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। পাশাপাশি চুক্তিতে নিয়োগ পাওয়া মন্ত্রিপরিষদ সচিববাদে অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল করা হয়। ডিসি ও সচিব নিয়োগে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন, ব্যক্তিগত তথ্য ও কর্মজীবেনের ইতিবৃত্ত এবং সাফল্যসহ অন্যান্য যাচাই বাছাইকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। বিশেষ করে ডিসি নিয়োগ নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ঘটে নচজরবিহিন ঘটনা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বঞ্চিত কর্মকর্তারা ডিসি ফিট লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হয়ে পরীক্ষা দিয়েও ডিসি নিয়োগ না পাওয়ায় তারাই বেশি ক্ষুব্ধ হন। তাদের কেউ কেউ বলেছেন, যোগ্যতা ও মেধা যাচাই বাছাই ছাড়াই অর্থের বিনিময়ে ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর নেপথ্যে বিগত সরকারের আস্থভাজন কর্মকর্তারাই রয়েছেন। এসময় তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কক্ষ অবরুদ্ধ করে রাখেন। এমনকি কোন কোন কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করেন।

স্বাধীনতার পর জনপ্রশাসনে এমন ঘটনা ঘটেনি বলে অনেকেই মন্ত্রব্য করেছেন। এপ্রেক্ষাপটে জনপ্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ন্যাক্কারজনক বলে অভিহিত করেছেন। অবসরপ্রাপ্ত কোন কোন শীর্ষ কর্মকর্তা সমালোচনা করে গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। তাদের মতে, এ অবস্থা চলতে থাকলে প্রশাসনের ঐতিহ্য হারিয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা। কঠোরভাবে তাদের লাগাম টেনে ধরার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। শুধু তাই নয়, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান বলেছেন, সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড (এসএসবি)র মাধ্যমে যোগ্যদের ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া কমিটির সকলেই অভিজ্ঞ ও দক্ষ। তারা প্রার্থীদের শারিরীক সক্ষমতা ও মেধা যাচাই করেই ডিসি নিয়োগ দিয়েছেন। তাছাড়া সকলেই ডিসি হবেন এমন কোন গ্যারান্টি নেই। এখানে কাউকে মুখ দেখে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা বিশৃঙ্খলা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মাঠ প্রশাসন থেকে থেকে ৩ বছর ধরে যেসব অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রয়েছেন তাদেরও প্রত্যাহার করা হবে। বিপুল পরিমান আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ত্যাগী, বঞ্চিত ও যোগ্য কর্মকর্তাদের বাইরে রেখে আওয়ামী লীগ পরিবার সংশ্লিষ্ট এবং বিগত ১৫ বছরে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদেরই আবার ডিসি পদে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী এবং ছাত্রলীগের রাজনীতিতে জড়িত থাকা ডিসি নিয়োগের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এক উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা কাযালয়ের পরিচালক প্রশাসন (অতিরিক্ত সচিব) এবং জনপ্রশান মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগের (এপিডি) মো. আব্দুর রউফ এসব নিয়োগের মুল দায়িত্ব পালন করেছেন বলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের অভিযোগ। ইতোমধ্যে তিন কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদায়ণ নিয়ে মাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে খতিয়ে দেখতে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। এদিকে ঘুষের বিনিময়ে ডিসি নিয়োগ কোটির ক্যাশ চেক দিয়ে ডিসির পদায়নের ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

Top