অত্যাচার-নির্যাতন, গুম-খুনের প্রত্যেক হুকুমদাতাকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অত্যাচার-নির্যাতন, গুম-খুনের প্রত্যেক হুকুমদাতাকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে


মোহাম্মাদ মুরাদ হোসেন :অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করে জনগণের ওপর অত্যাচার চালানো হয়েছে। অত্যাচার-নির্যাতন, গুম-খুনের প্রত্যেক হুকুমদাতাকে খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় আনা হবে। এছাড়া যারা চাঁদাবাজি-দখলদারি করছেন, তাদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ করেছি সেনাপ্রধানকে। রোববার দুপুরে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেওয়া ঠিক হয়নি-এমন মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাহিনীটিকে লাঠিয়াল হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন। আর যেসব শিক্ষার্থী ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন, তাদের সনদ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল থেকে এম সাখাওয়াত হোসেন সরাসরি আসেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। উপদেষ্টা হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর রোববারই সচিবালয়ে প্রবেশ করেন। নিজ কার্যালয়ে প্রবেশের আগে মন্ত্রণালয়ের নিচতলায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আত্মগোপন ও কর্মবিরতিতে থাকা পুলিশ সদস্যদের বৃহস্পতিবারের মধ্যে কাজে ফিরতে হবে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজে যোগ না দিলে অনুপস্থিতরা আর ‘চাকরি করতে ইচ্ছুক নন’ বলে ধরে নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তাদের চাকরি থাকবে না। আমি আইজিপির সঙ্গে আলাপ করেছি, র‌্যাবের ডিজির সঙ্গে আলাপ করেছি, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলাপ করেছি। বৃহস্পতিবারের মধ্যে যে যার জায়গায় চলে যাবেন, ডিউটিতে থাকবেন। পুলিশ সদস্যরা নির্ধারিত সময়ে কাজে না ফিরলে তাদের ‘পলাতক’ ধরে নেওয়া হবে।

৫ আগস্ট গণ-আন্দোলন ও সহিংসতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই থানাসহ পুলিশের স্থাপনাগুলোয় একের পর এক হামলা হতে থাকে। ভাঙচুর ও লুটপাটও করা হয় অনেক থানায়। এসব ঘটনায় হতাহত হয়েছেন অনেক পুলিশ সদস্য। আত্মগোপনে চলে যান উচ্চপর্যায়ের বেশকিছু কর্মকর্তা। নিজেদের নিরাপত্তাহীনতা ও সহকর্মীদের হতাহত হওয়ার ক্ষোভ থেকে ৫ আগস্টের পর কাজে যোগ দেননি পুলিশের নন-ক্যাডার সদস্যরা। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে পালিয়েও গেছেন। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রাস্তাঘাট ও থানাগুলো কার্যত পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে পুলিশি ব্যবস্থা কার্যত ভেঙে পড়ে। পুলিশবিহীন অবস্থায় রাজধানীসহ দেশের নানা স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি রয়েছেন আনসার সদস্যরা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশের গায়ে যেন অহেতুক কেউ হাত না দেয়। ছোট-বড় অপরাধ যাই হোক, তাদের বিচারপ্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচারের আওতায় আনা হবে। ঢালাওভাবে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না। জনগণকে আমি এটুকু বলতে চাই, আপনারা পুলিশের গায়ে হাত দেবেন না। আপনারা দেখছেন, আপনারা নিজেরাই সাফার করছেন। তিনি বলেন, ‘চেষ্টা করছি যাতে পুলিশ ফিরে আসে, যদি না ফেরে, আপনারা দেখছেন কী হতে পারে। একটু আগে দেখলাম ব্যাংকে মারামারি হয়েছে, ব্যাংক দখল করবে। যে যার মতো করে দখলদারি করছে। কিছুক্ষণ আগে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে আনসারের একটি অংশ। তাদেরও কিছু দাবিদাওয়া আছে। সবারই দাবিদাওয়া আছে, আমারও দাবিদাওয়া আছে। আমার দাবিদাওয়া হলো-আপনারা ফিরে যান; আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসাবে আমার দায়িত্ব আপনাদের কাছে আসা, আপনাদের কথা শোনা। যতদূর সম্ভব আমার পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে যা করার করব। প্রতিটি বাহিনীর সঙ্গে আমি কথা বলব।’

অরাজকতা নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এলাম দখল করব, বাজার দখল করব, ঘাট দখল করব, চাঁদাবাজি করব-কিছুদিন করেন; কিন্তু আমি সেনাপ্রধানকে বলেছি, অনুরোধ করেছি; পা ভেঙে দিতে আপনাদের। আই ডোন্ট কেয়ার, ইউ গো টু হেল।’ তিনি বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি দখল-চাঁদাবাজি করে, তাদের পা ভেঙে দিতে সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করেছি। এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এদেশে পলিটিক্স করতে হলে পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্টের মধ্যে করতে হবে। এটা আপনাদের পছন্দ হলেও না হলেও। আমি যতদিন আছি, আমি এটা করে ছাড়ব। আপনারা স্বৈরাচারী হয়ে যাবেন, এটা তো হবে না। সব রাজনৈতিক দলকে আমি একটি মেসেজ দিচ্ছি। একটি পলিটিক্যাল পার্টির অবস্থা আপনারা দেখেন, এত বড় ঐতিহ্যবাহী একটা দল। যার নামের সঙ্গে স্বাধীনতা জড়িত, আজ তাদের সদস্যদের পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। জনগণের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, যারা চাঁদাবাজি করবেন, তাদের ওখানেই ধরেন। কী করা লাগে, সেটা আমরা করব। শৃঙ্খলা ফেরাতে হবে। দেশ এভাবে চলতে পারে না।রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেওয়া হয়েছে। পুলিশের হাতে এ অস্ত্র দেওয়া ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, বিদায়ি সরকার ক্ষমতায় থাকতে মানুষ মেরেছে। পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করে জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে। প্রত্যেক হুকুমদাতাকে খুঁজে বের করা হবে। তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। কেউ ছাড় পাবে না।

উপদেষ্টা বলেন, হাজার হাজার মানুষ মারার পরও ক্ষমতায় থাকতে চাওয়ার মানসিকতা নিয়ে তারা পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনীর মতো ব্যবহার করেছে। পুলিশের হাতে মারণাস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে দেখে আমি আশ্চর্য হয়ে গেছি, এটা ঠিক হয়নি। তিনি বলেন, পুলিশকে আর লাঠিয়াল বাহিনীর মতো ব্যবহার করতে পারবেন না। পুলিশ চলবে পুলিশ কমিশনের অধীনে। এই পুলিশ জনগণের পুলিশ। তবে পুলিশ কমিশন কবে নাগাদ গঠন করা হবে-সে ব্যাপারে কিছু বলেননি।ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যেসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে তাতে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়েছে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পুলিশকে তারা ব্যবহার করেছে, আপনারা তাদের ধরুন। আমি চেষ্টা করব হুকুমদাতাদের ধরতে। কারা পুলিশকে এভাবে ব্যবহার করেছে, তাদের উদ্দেশ্য কী, এটাও খুঁজে দেখতে হবে।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশ সদস্যদের ওপর যে হামলা হয়েছে, এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। মাথার চামড়া খুলে ফেলা, হাত-পা-মাথা থ্যাঁতলিয়ে ফেলা, এটা সহ্য করার মতো না। বহু তরুণ মারা গেছে পুলিশ ও অন্যদের গুলিতে, এটাও দুঃখজনক। পুলিশ ছাড়া আমাদের সমাজ চলতে পারে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যায় ডাকাতি হচ্ছে। কী করবেন পুলিশ নেই, পুলিশ সদস্য ডিমোরালাইজড হয়ে গেছে। আমাদের সেনাবাহিনী ও বিজিবি মাঠে আছে। কিন্তু এটা তাদের কাজ না। পুলিশের যেটা কাজ, সেটা তারা পারে না।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অতিরিক্ত বল প্রয়োগ করবেন না। যাদের টার্গেট করছেন, তারা আপনার সন্তান। রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে; কিন্তু সেখানকার পুলিশ কমিশনারকে এখনো সরানো হয়নি, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রথমে বলেছি, এটা মার্ডার। আমরা এ ধরনের লোক চাই না, যারা গাইড করতে পারে না। পুলিশ সদস্যদের দাবিদাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনাদের কয়েকজন প্রতিনিধি আসবেন, তাদের শতভাগ কথা শুনব। তারা এমন কোনো দাবি করেননি, যেটা পূরণ করা সম্ভব নয়। কিছু জায়গায় হয়তো দেরি হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একটা রাষ্ট্র এভাবে চলে না। একজনের ইচ্ছামতো রাষ্ট্র চালানো যায় না। দেশটা কারও ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সম্পত্তি না। হুকুম দিয়ে ছেলেপেলে আর জনগণকে মারবেন, এটা হতে পারে না। আবার আসেন, দেখেন জনগণ কী করে? জনগণ ছিঁড়ে ফেলবে এবার।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাজনীতি হয়ে গেছে চাটুকারদের রাজনীতি। আমরা কোনো রাজনীতিক তৈরি করিনি, চাটুকার তৈরি করেছি। মানুষ মরে যাচ্ছে, কিন্তু বলা হচ্ছে-না, সব ঠিক আছে। এরকম চাটুকারদের দল দিয়ে রাজনীতি করা যায় না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, চাটুকারিতা করলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। আমি আপনাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করছি, যদি মিডিয়া চাটুকারিতা করে, তাহলে মিডিয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। টকশোতে চাটুকারদের ডাকবেন না। মিডিয়া চাটুকার হবেন না। একটা দেশ ডুবে কখন, যখন মিডিয়া সত্য কথা বলে না। তিনি বলেন, মিডিয়াগুলো ওই সময় যদি সত্য ঘটনা তুলে ধরত, তাহলে পুলিশের এ অবস্থা হয় না। মিডিয়া বারবার বলেছে কিছুই হয়নি। কিন্তু বিবিসিতে আমি সব দেখেছি। বেসরকারি টেলিভিশনগুলোর টকশোতে জ্ঞানগর্ভ কোনো আলোচনা হয় না। মিডিয়া সঠিক তথ্য তুলে ধরে না। তিনি আরও বলেন, আপনারা টকশোতে কাকে ডাকা যাবে, কাকে ডাকা যাবে না লিস্ট করেন। অনুগ্রহ করে তাদের ডাকবেন না, চাটুকারদের ডাকবেন না। দয়া করে সঠিক তথ্য তুলে ধরেন, যাতে যারা ক্ষমতায় থাকেন, তাদের চোখটা যেন খোলে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী লেখাপড়া জানা লোক, কিন্তু তিনি ছাত্রদের বললেন দুষ্কৃতকারী। এসবের বিচার হওয়া উচিত। মিডিয়ার মালিকদেরও বিচার হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রীকে আপনারা প্রশ্ন করেন কী? আপনি অমুক, আপনি অমুক জয় করে আসছেন-এগুলো কেমন প্রশ্ন, যোগ করেন তিনি। সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা সত্য ঘটনা তুলে ধরেননি। যদি ধরতেন, তাহলে পুলিশের এ অবস্থা হয় না। বারবার বলছেন, কিছু হয়নি। ‘শেম অন ইউ। শেম অন দ্য মিডিয়া ওনার’। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, যা হয়েছে হয়েছে, ইতিহাসকে ফেরত আনতে পারব না। আমরা মনে করি, আওয়ামী লীগ অনেক পুরোনো পার্টি, সেখানে নতুন নেতৃত্ব আসবে। তারা এ শিক্ষাটা গ্রহণ করবে। আমি চেষ্টা করব, যাতে ‘পলিটিক্যাল পার্টি অ্যাক্ট’ থাকে। সে অনুযায়ী দল চালাতে পারলে চালাবেন, নয়তো বন্ধ করে দেবেন। তবে এই অ্যাক্টের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি কবে নাগাদ ফিরবে-এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা স্বাভাবিক হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে জনগণের ওপর। সংখ্যালঘু যারা আছেন, তারা আপনাদের সমাজেই বাস করেন। এ ধরনের হামলা কোথাও করতে দেবেন না। তাদের কোনো দোষ নেই। জনগণের কাছে অনুরোধ, আপনারা এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনুন। দুষ্কৃতকারী যারা আছে, ধরে ফেলেছে অনেক জায়গায়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে যেসব শিক্ষার্থী ট্রাফিকের কাজ করছে, তাদের তালিকা করে সবাইকে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এ সার্টিফিকেট যেন তাদের চাকরির ক্ষেত্রে মূল্যায়ন হয়। শিক্ষার্থীরা নিজের টাকায় সড়কে কাজ করছে, সড়ক পরিষ্কার করছে, রং কিনে দেওয়াল সুন্দর করছে। এটা যদি সরকারি প্রজেক্ট হতো, তাহলে হাজার কোটি টাকা লাগত। একটা দেশে এর চেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে না। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার গাড়িও ধরেছে। আমার গাড়ি থামিয়ে বলছে, পতাকাওয়ালা গাড়ি। তারপর তারা বলছে, পতাকা থাক আর যাই থাক গাড়ি চেক করব। এরপর আমাকে দেখে বলল, না, স্যার আপনি চলে যান। তিনি বলেন, যেটা পুলিশ করতে পারত না, সেটা তারা (শিক্ষার্থীরা) করছে। তারা কোনো চাঁদা নেয় না। কোনো দোকানে গিয়ে বলে না খাবার দাও।

এ সময় আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, আমরা ভিআইপি রোডে ইতোমধ্যে ট্রাফিক সদস্যদের ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছি। ইতোমধ্যে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল থেকে জাহাঙ্গীর গেট পর্যন্ত বেশি করে ফোর্স দিয়ে চালু করেছি। তিনি বলেন, আন্দোলনে সহিংসতায় ৪২ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পরিদর্শক ৩ জন এবং ২ জন র‌্যাব সদস্য। আহত অসংখ্য, শুধু রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালেই ৫০৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। যারা বেশি আহত এমন ২৭ জন। তাদের মধ্যে আইসিইউতে আছেন ২ জন। যারা আহত হয়েছেন, তাদের আমরা সম্পূর্ণ সহায়তা দিচ্ছি। এ সময় ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মাইনুল হাসান ও র‌্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Top