ভারতের সাথে ১২০টি চুক্তি করেছে - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতের সাথে ১২০টি চুক্তি করেছে


মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম :আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের সাথে ১২০টি গোলামীর চুক্তি করেছে বলে মন্তব্য দেশের বিশিষ্ট নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। গতকাল শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে গভর্নেন্স অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ-জিপিআরের উদ্যোগে ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অন্তরায় ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।বিশিষ্ট নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণ বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের সাথে ১২০টি গোলামীর চুক্তি করেছে। এসব চুক্তির মাধ্যমে ভারত লাভবান হচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশের দেশের জনগণের কোনো লাভ হচ্ছে না। সরকার দেশের সার্বভৌমত্ব লংঘন করে একের পর এক ভারতকে সমুদ্র বন্দর করিডোর, স্থল বন্দর করিডোর, নদী বন্দর করিডোর এবং সর্বশেষ রেললাইন করিডোর দিয়েছে। বিনিময়ে গত একযুগে সীমান্তে ভারতের বিএসএফের হাতে ১ হাজার ২৭৬ জন বাংলাদেশী নাগরিক নির্মম হত্যার শিকার হয়েছে। ভারত আমাদের ওপরে পানি আগ্রাসন চালাচ্ছে। ভারতের আগ্রাসনের কারণে আজ বাংলাদেশ সার্বভৌমত্ব হারাতে বসেছে, মানুষের ভোটের অধিকার নাই, মানবাধিকার নাই, বাক-স্বাধীনতা নাই, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নাই। ভারত আমাদের দেশের জনগণের ভোটার অধিকার কেড়ে নিয়ে, একটি ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার ইকতেদার আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাবেক ভিসি অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আব্দুর রব, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত জহুরুল আলম, গণধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা ও কর্নেল (অব.) মিয়া মশিউজ্জামান, এম মোজাহেরুল হক, মেজর অবসরপ্রাপ্ত মোহাম্মদ ইমরান, মেজর অবসরপ্রাপ্ত ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন প্রমূখ।সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে যড়যন্ত্র চলছে সেভেন সিস্টারে খ্রিস্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে। এই অবস্থা চললে পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদের হাত ছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বে অফ বেঙ্গল ভবিষ্যতে ল্যান্ড হিসেবে প্রকাশ পাবে। ভারতকে যে ট্রানজিট দিয়েছে তাতে বাংলাদেশ লাভবান হবে না। আমাদের দেশে সাগর অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা কম হচ্ছে।অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আব্দুর রব বলেন, ভারতের ফরেন এক্সচেঞ্জ-এর ইনকামের ক্ষেত্র হিসেবে ৫তম দেশ হচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের স্বাধীনতার জন্য আইনের শাসনের জন্য যারা কথা বলছে তাদেরকে গুম-খুনের শিকার হতে হচ্ছে। দেশের আলেমরা আজ জুলুম নির্যাতনের শিকার। আলেমদেরকে ডান্ডা-বেড়ি পরিয়ে কোর্টে নেয়া হচ্ছে। এখনো দেশের লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে দিন যাপন করছে। নেপাল থেকে বাংলাদেশের ২২ কিলোমিটার ট্রানজিট করিডোর দিচ্ছে না ভারত, ভুটানের সাথে ৩৫ কিলোমিটারের ট্রানজিট করিডোরও দিচ্ছে না ভারত। অথচ ৮৬১ কিলোমিটার রেল করিডোর ভারত ব্যবহার করবে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য ভারতকে সব দিয় দিচ্ছে।

নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক পিএসসি প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বলেন, আইনের শাসনের নামে দেশের জনগণ আজ নিষ্পেষিত অবহেলিত লাঞ্চিত। দেশে আজ আইনের শাসনের কোনো জবাবদিহিতা নেই, জনগণের ভোটাধিকার নাই। জনগণের আজ বাক স্বাধীনতা নেই, মৌলিক অধিকার নাই। আজ দেশে আইনের শাসনের অভাব, বাক স্বাধীনতার অভাব। পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায় বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক কৃষ্টি সবকিছু বাদ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে মুসলমানদেরকে বলা হচ্ছে যে আমরা বহিরাগত অথচ বাংলাদেশের মুসলমানরাই এদেশের আদি অধিবাসী এবং আদি ভূমিপুত্র।মেজর (অব) মোহাম্মদ ইমরান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারত ট্রানজিট দিয়েছে। অথচ ভারত আমাদের পানি ন্যায্য হিস্যা দিচ্ছে না। যখন আমাদের পানির প্রয়োজন নাই তখন পানি ছেড়ে দিয়ে সারাদেশকে বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছে ভারত। ভারতের আগ্রাসন থেকে আমাদের দেশকে রক্ষা করতে হবে।মেজর (অব.) ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন বলেন, রাষ্ট্র যে আজকের এই অবস্থায় যাবে তা আমরা ২০০৯ সালে বুঝতে পারি। আমাদের বিভিন্ন বাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া হয়েছে। দেশকে রক্ষা করতে হলে বর্তমান সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আন্দোলন করে সফল হচ্ছি না বিরোধী দলগুলো ব্যর্থতার কারণে। আজকে দেশের সেনাবাহিনীকে যে অবস্থায় নিয়ে এসেছে তাতে সেনাবাহিনীর মধ্যে সেনা উত্থান হবে না। আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সাথে ১২০টা চুক্তি হয়েছে ক্ষমতায় টিকে থাকতে।

কর্নেল (অব) দিদারুল আলম বলেন, বর্তমান সরকার অবৈধ, তাদের চুক্তিও অবৈধ। আওয়ামী লীগ সরকারকে কে অধিকার দিলো ভারতের সাথে এতগুলো চুক্তি করার। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থেকে টিকে থাকার জন্য ১২০টি চুক্তি করেছে। আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে ভারতের রেল যেতে দিব না।সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্টার ইকতেদার আহমেদ বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৪টি আসনে বিনা ভোটে নির্বাচন হয়েছে। ১৮ সালের নির্বাচন দিনের ভোটার রাতে দেয়া হয়েছে। ২০২২ সালে নির্বাচনের ৯০ শতাংশ জনগণ অংশগ্রহণ করেনি এবং একটি ডামি ডামি খেলার মাধ্যমে নির্বাচন করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আছে। মুন সিনেমা হলে মামলাকে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মধ্যে ডাইভার্ট করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে ক্ষমতায় আছে।

Top