কর্ণফুলীর নদীর ৮৬৫১ দাগ নদীর জায়গা তা নদী হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কর্ণফুলীর নদীর ৮৬৫১ দাগ নদীর জায়গা তা নদী হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশ


মো.ইমন হাওলাদার:কর্ণফুলী নদীর জায়গায় তৈরি জাতীয় মৎস্যজীবি সমিতি স্থাপিত মাছ বাজার এলাকাটি নদীর জায়গা হিসাবে সংরক্ষণ করার নির্দেশ হাইকোর্টের। আজ ২৯ মে ২০২৪ হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ার এর আদালত এই আদেশ প্রদান করেন।২০২০ সালের ডিসেম্বরের ২০ তারিখ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্ণফুলী নদীর জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরিকারী ৪৭ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করেন। উক্ত নোটিশের ৪৭ নম্বর বিবাদী (জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি) চাক্তাই ও রাজাখালী খালের মোহনা দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ মাছ বাজার কর্তৃপক্ষ উক্ত নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি আবেদন করেন। জেলা প্রশাসন উক্ত আবেদন নিষ্পত্তি করার পূর্বে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে আপিল করার কয়েকদিনের মধ্যে উক্ত নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট মামলা ৭২০/২০২১ দায়ের করেন।

আদালত উক্ত রিট মামলায় রুল জারি করে স্থিতিবস্থার আদেশ দেন। উক্ত মাছ বাজারটি কর্ণফুলীর নদীর জায়গা ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে যা হিউম্যান রাইট এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) কর্তৃক জনস্বার্থে দায়েরকৃত ৬৩০৬/২০১০ মামলায় আদালতের নির্দেশে জরিপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিএস দাগ নাম্বার ৮৬৫১ প্লটের উপর যে আদালত উক্ত স্থিতিবস্থা দিয়েছিল সেই স্থিতিবস্থা নিয়ে এইচআরপিবি একটি আবেদন দাখিল করে আদালতের রায় সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করা হলে, পরবতীর্তে দুই পক্ষের শুনানী করে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশণার মৎস্যজীবি সমিতির আবেদন খারিজ করে দেয়। বিভাগীয় কমিশনার আদালতে প্রদত্ত প্রতিবেদনের এবং সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ এর শুানানীর প্রেক্ষিতে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের আদালত জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির দায়েরকৃত রুলটি ২০২৩ সালের মার্চে খারিজ করে দেয়।বিভাগীয় কমিশনার তাদেও আপিল খারিজ করলে জাতীয় মৎসজীবি সমিতি হাইকোর্টে আরেরকটি রিট পিটিশন ২৪০২/২০২৩ করে এবং স্থিতিবস্থার আদেশ অর্জন করেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ার সংবার ভিত্তিতে এইচআরপিবি এর নজরে আসলে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রিট্ মামলায় পক্ষ হওয়ার আবেদন করেন। যা আদালত মঞ্জুর করেন।

আদালতে এফিডেভিট দাখিল করে সিনিয়র আ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ ২০১০ সালে দায়েরকৃত মামলায় এবং ২০১৬ সালের রায় এবং তৎপরবতীর্ আপিল বিভাগের রায় আদালতে উপস্থাপন করেন। গত মার্চ ২০২৪ থেকে দীর্ঘ দুইমাস মামলাটি একাধিকবার বিচারপতি মোহাম্মদ খসরুজ্জামান ও বিচারপতি এ কে এম জাহিদ সরওয়ার এর আদালতে মামালাটি দীর্ঘদিন শুনানী হয়। শুনানীতে এইচআরপিবি প্রেসিডেন্ট সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ রিট কারি ও জেলা প্রশাসনের মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ের ব্যাপারে এইচআরপিবি এর কোন বক্তব্য নাই বলে জানান। তবে যে জায়দায় রিট পিটিশনার ফিশারী ঘাট তৈরি করেছেন সেই জায়গাটি কর্ণফুলী নদীর জায়গা এবং ্এইচআরপিবি জনস্বার্থ মামলায় ইতোপূর্বে হাইকোর্ট ২০১৬ সালে রায় দিয়ে নদীর জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেন এবং হাইকোর্টের নির্দেশে জরিপে ৮৬৫১ দাগটি নদী হিসাবে চিহ্নিত। কোন এক সময় নদীর জায়গা ভরাট করে চট্টগ্রাম পোর্ট অথরিটি ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিলের জন্য জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে নদীর জায়গাটি লিজ প্রদান করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের লিজ সম্পূর্ন অবৈধ কারন আপিল বিভাগের রায়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে ব্যবসায়িক কারনে নদীর জায়গা লিজ দেয়া যাবেনা। শুনানীতে এডভোকেট মোরসেদ নদীর জায়গা নদী হিসাবে সংরক্ষণের আদেশ প্রার্থনা করেন। শুনানী শেষে আজ আদালত রুল নিষ্পত্তি করে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন

১. কর্ণফুলী নদীর জায়গা দাগ নং ৮৬৫১ নদী হিসাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।

২. উক্ত জায়গার মালিকানা নিয়ে পোর্ট অথরিটি নিম্ন আদালতে যে মামলা করেছেন সেই জায়গার মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় আইন অনুযায়ী উক্ত আদালতে সিদ্ধান্ত নিবে। আদেশের পরে সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, যেহেতু আদালত্ উক্ত জায়গাটি নদী হিসাবে সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছেন তাই জাতীয় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে উক্ত জায়গা থেকে সরে যেতে হবে।রিটকারীর পক্ষে আইনজীবি ছিলেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট সারাওয়ার আহমেদ ও সিনিয়র অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা, পোর্ট অথরিটির পক্ষে ছিলেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সরকারের পক্ষে ছিলেন ডিআইজি বিপুল বাগমির, পক্ষভুক্ত বিবাদী এইচআরপিবি এর পক্ষে ছিলেন, সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

Top