আমার সরকার কাজ করে যাচ্ছে - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমার সরকার কাজ করে যাচ্ছে


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকাবাসী যাতে সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে, সেজন্য আমার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। শনিবার সকালে বঙ্গবাজারে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) চারটি উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ এলাকার, বিশেষ করে পুরান ঢাকার মানুষ উপকৃত হবে এবং তারা সুন্দর জীবনযাপন করতে পারবে। এ প্রকল্পগুলো নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ সৃষ্টি করে দেবে।প্রকল্পগুলো হলো বঙ্গবাজারে বঙ্গবাজার নগর পাইকারি বিপণিবিতান, পোস্তগোলা ব্রিজ থেকে রায়েরবাজার স্লুইস গেট পর্যন্ত আট সারির ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ শেখ ফজলুল হক মণি সরণি’, ধানমন্ডি লেকে ‘নজরুল সরোবর’ এবং শাহবাগে ‘হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশু উদ্যান’ আধুনিকীকরণ।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এলজিআরডি ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-৮ আসনের সংসদ-সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম।প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্ধিত ঢাকার জনগণ যেন যথাযথ সেবা পেতে পারে, সেজন্য নগরীকে তিনি উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন-এ দুটি অংশে ভাগ করেন। যেগুলো ইউনিয়ন ছিল, সেগুলোকেও সিটি করপোরেশনের আওতায় নিয়ে এসে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঠিকানাবিহীন পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের আবাসন সমস্যা দূরীকরণে তার সরকার আবাসিক ফ্ল্যাট ও সম্মানজনক পদবির ব্যবস্থা করে দিয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিমে রাস্তাই ছিল না। আমার সরকার সেসব রাস্তা, ওভারপাস, মেট্রোরেল, এক্সপ্রেসওয়ে, বাঁধের ওপর রাস্তা, বুড়িগঙ্গা বেড়িবাঁধ করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যেগুলো বাস্তবায়ন হলে যোগাযোগব্যবস্থা আরও উন্নত হবে। তিনি বলেন, আন্তঃজেলা যোগাযোগ সহজ করতে আমরা ঢাকায় একটি রিং-রোড নির্মাণ করতে চাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুরান ঢাকার সঙ্গে আমার একটা আলাদা নাড়ির টান রয়েছে। কাজেই এ অঞ্চলের মানুষ ভালো থাকুক, সেটাই আমার লক্ষ্য।সরকারপ্রধান এ সময় মশার উপদ্রব থেকে বাঁচার জন্য পানি জমে থাকা জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখা এবং পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায়ও সবার সহযোগিতা চান। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলে নির্দিষ্টি জায়গায় ফেলার এবং সিটি করপোরেশনকেও তিনি দ্রুত এগুলো সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশনা দেন।এ সময় তিনি আসন্ন কুরবানির ঈদে যেখানে-সেখানে পশু কুরবানি না দেওয়ার জন্যও নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে শুধু সিটি করপোরেশনে নয়, সমগ্র দেশেই আমার নির্দেশ রয়েছে প্রত্যেক জায়গায় আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার।

তার সরকার ঢাকা শহরের জলাধারগুলো উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে যত্রতত্র পুকুর-খাল, জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা তৈরি না করার জন্য নগর পরিকল্পনাবিদদের সজাগ থাকার নির্দেশ দেন। অতীতের সরকারগুলো পুকুর, খাল-বিল ভরাট করে স্থাপনা বা বক্স কালভার্ট নির্মাণ করায় খাল-বিল-পুকুরে ভরা ঢাকা শহরের বাতাসও এখন ভারী হয়ে উঠেছে, পানি সরার কোনো জায়গা থাকছে না।তিনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং মাদক থেকে সবাইকে দূরে থাকার এবং সিটি করপোরেশনের পার্কগুলো যেন মাদকসেবনে ব্যবহার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

আওয়ামী লীগ সরকার এসে এই বাংলাদেশে অতীতে অস্ত্র চোরাকারবারির যে রুট ছিল, সেটা বন্ধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে উলফা থেকে শুরু করে যেখানে যেখানে যারা অস্ত্র সাপ্লাই দিত, সেগুলো আমরা বন্ধ করেছি। তাদেরও যাতে শান্তি আসে ওই সেভেন সিস্টারে, সেই ব্যবস্থাও কিন্তু আওয়ামী লীগ করেছে। এটা সবচেয়ে বড় কাজ।বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা ক্ষমতায় এসেছিল লুটপাট, দুর্নীতি ও অস্ত্র চোরাকারবারি করতে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে দেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সে কাজেই ব্যস্ত ছিল তারা, আর মানুষ খুন করতে। তিনি বলেন, এ দেশকে তারা কোথায় নিয়ে গিয়েছিল। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করেছিল। অস্ত্র চোরাকারবারি; ওই তারেক রহমান তো অস্ত্র চোরাকারবারি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওখানে বসে (লন্ডন) এখন নানাভাবে ওই অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ মারা, মানুষ খুন করা, গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা-এসব কাজ করে বেড়ায়।

Top