ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু স্থানীয় বাজারেই নয়,বরং সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারে প্রবেশের জন্য ইতালির ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।গতকাল রোববার ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো গণভবনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে পারেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো.নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।শেখ হাসিনা বলেন,দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজার ছাড়াও বাংলাদেশের একটি বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাজারকে ঘিরে বড় কেন্দ্রীয় বাজার হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৬ সালের পর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের অঙ্গনে পা রাখবে। এ ব্যাপারে তিনি ইউরোপের দেশগুলোতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির জন্য দেশটির জিএসপি প্লাস সুবিধা অব্যাহত রাখতে ইতালির সহায়তা কামনা করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। তিনি তাদের সেই সুযোগগুলি খুঁজে বের করে তা ব্যবহার করার অনুরোধ জানান।ইতালিসহ ইউরোপের দেশগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো দেশে যেন কেউ অবৈধভাবে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ নিচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের দেশগুলোতে ঢোকার চেষ্টাকালে বাংলাদেশিসহ বহু মানুষ মারা যাচ্ছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিচ্ছে, যাতে কেউ অবৈধভাবে কোনো দেশে না যায়। তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে আমরা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করছি। তিনি ইতালিকে বৈধ উপায়ে আরো বাংলাদেশি জনবল নেওয়ার অনুরোধ জানান। শেখ হাসিনা ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রোর মাধ্যমে ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

ইতালির রাষ্ট্রদূত বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশকে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও প্রতিরক্ষা ক্রয় এবং বিভিন্ন খাতে আধুনিকায়নে সহায়তা করতে চায়। তিনি বাংলাদেশকে দ্বিতীয় স্যাটেলাইট প্রদানে তাঁর দেশের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ উম্মুক্ত করে দেয়ার জন্য বাণিজ্য বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেন। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনায় উভয়েই জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে মর্যাদাপূর্ন প্রত্যাবাসনের বিষয়ে একমত হন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।এ দিকে গতকাল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশে অ্যাপোস্টোলিক নুনসিও অফ দ্য হোলি সি’র আর্চবিশপ কেভিন এস র‌্যান্ডাল সাক্ষাৎ করেন। তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) স্বাগত জানায়, তবে এর অপব্যবহার রোধে কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, আমরা এআইকে স্বাগত জানাই, তবে এর অপব্যবহার রোধ করার জন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে আমাদের কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থা নিতে হবে। বৈঠক শেে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধরা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। আমরা সবাই মিলে আমাদের উৎসব উদযাপন করি। শেখ হাসিনা আর্চবিশপ কেভিন এস র‌্যান্ডালের মাধ্যমে পোপকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। আর্চবিশপ র‌্যান্ডাল জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান ও পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

Top