দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রেশনবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা - Alokitobarta
আজ : বুধবার, ১৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
ধরতে হচ্ছে পরিবারের হাল,বাড়ছে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে এবং বিএনপির দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কর্মশালায় যোগ দিতে চীন যাচ্ছে আওয়ামী লীগের পঞ্চাশ সদস্যের একটি দল কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনের জামিন বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা,এনবিআরের ১৩ কর অফিসে নিয়োগ জটিলতা শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে বিশেষ স্মার্ট কার্ড তুলে দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) চলতি অর্থবছরে শেষ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ৩৩৪ প্রকল্প জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার কনডেম সেল নয় মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত না হলে এনএসআই পরিচয়ে ভুয়া নিয়োগের অভিযোগে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে

দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন রেশনবঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :দীর্ঘদিন ধরেই অবসরে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা আজীবন শতভাগ রেশন সুবিধার দাবি তুলে আসছিলেন। একাধিক পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ দাবি তুলে ধরেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সে দাবি বাস্তবায়ন হলেও রয়ে যায় শুভঙ্করের ফাঁকি। শুধু ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে যারা অবসরে গেছেন তাদের ক্ষেত্রে রেশন সুবিধা দেওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।২০২০ সালের ২৯ জানুয়ারির ওই প্রজ্ঞাপনের ফলে রেশন সুবিধাবঞ্চিত হন পুলিশের অবসরে যাওয়া প্রায় এক লাখ সদস্য। মূলত যারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই দাবি তুলেছিলেন তারাই রেশন সুবিধার বাইরে রয়ে যান। শতভাগ রেশন সুবিধা পাওয়ার দাবিতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা।বাংলাদেশ পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের ব্যানারে তারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজি) কাছে একাধিকবার চিঠি দিয়ে রেশন সুবিধা দেওয়ার অনুরোধ করেন এবং দেখা করতে চান। কিন্তু তাদের অনুরোধে কেউ সাড়া দেননি। এমন বাস্তবতায় রেশন বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত পুলিশের সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের দুটি সংগঠন বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার্স কল্যাণ সমিতি ও অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, অবসরে যাওয়া লক্ষাধিক পুলিশ সদস্য অবসরকালীন রেশন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই বিষয়টি মানবিক দিক থেকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মহাসচিব আনিসুর রহমান হাওলাদার বলেন, পুলিশ বাহিনীতে আমরা কম বেতনে চাকরি করেছি। কম দামের রেশন পেয়েছি। পেনশনও কম পেয়েছি। এজন্য আমরা সুযোগ-সুবিধার দাবি করছি দীর্ঘদিন ধরে। অথচ আমাদেরই বঞ্চিত করে অর্থ মন্ত্রণালয় নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে।তিনি বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এক বুক আশা নিয়ে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু আমাদের বঞ্চিত করা হলো।ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারিতেও আমরা দাবি-দাওয়া নিয়ে আইজি মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তার সাক্ষাৎ পাইনি। আমরা এখন বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) ইনামুল হক সাগর বলেন, ‘পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এর আগে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবগত করা হয়েছে।অনূর্ধ্ব সাব-ইন্সপেক্টর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কল্যাণ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গত বছরের ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়-‘চাকরিকালে আমরা সবাই নামমাত্র বেতন পেয়ে অতিকষ্টে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেছি। অবসরে এসেও সেই দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।

অবসরে আসার আগে সরকারের কাছে আমাদের প্রাণের দাবি ছিল অবসরকালীন পারিবারিক রেশন সুবিধা পাওয়ার। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপনি ২০১৯ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ও ২০২০ সালের ৬ জানুয়ারি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অনুষ্ঠিত ‘পুলিশ সপ্তাহ’ ঘোষণা দেন, ‘অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য অবসরকালীন পারিবারিক রেশন দেওয়ার বিষয়টিও আমাদের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে। আমরা সেটারও ব্যবস্থা করে দেব।’ চিঠিতে আরও বলা হয়, আমাদের মধ্যে কয়েকজন ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয় এবং ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচন প্রতিরোধ আন্দোলনের সময় আগুনে পুড়ে আক্রান্ত হয়, তারাও বঞ্চিত হয়েছে।এদিকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন জারির পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকে ১ জানুয়ারি ২০২০-এর আগে অবসর গ্রহণকারী জীবিত পুলিশ সদস্যদের মানবিক ও অবস্থানগত দিক বিবেচনা করে আজীবন দুই সদস্যের রেশন সুবিধা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।পুলিশ সদর দপ্তরের ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড পেনশন শাখা থেকে পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের নামের তালিকা তৈরি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবও পাঠানো হয়।

Top
%d bloggers like this: