বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মোকাবিলায় নতুন মিত্রের সন্ধানে নেমেছে ক্ষমতাসীন - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ সংবাদঃ
দেশের আবহাওয়ায় বিরাজ করছে মরুভূমির তাপ,বৃষ্টির বাতাস সরে গেছে চীনের দিকে আকাশে বুলেট-বারুদের ধোঁয়া,ঘুম থেকে উঠলেই সাইরেনের শব্দ তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক ব্যাংক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ গণমাধ্যমে প্রচারিত খবর সঠিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে না,জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকের উন্নতি হয়নি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান না দেখালে তা শৃঙ্খলাভঙ্গ হিসাবেই গণ্য করা হবে শহর, বন্দর, গ্রাম-সব জায়গায় গ্রীষ্মের রুদ্ররোদ গ্যাসের মূল্য ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে,বেড়েছে বিদ্যুতের মূল্যও প্রতিটি ধাপেই ভোটের দিন পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে-এমন আশঙ্কা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীর ‘স্বজন’ নিয়ে জটিলতা আওয়ামী লীগে

বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মোকাবিলায় নতুন মিত্রের সন্ধানে নেমেছে ক্ষমতাসীন


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো মোকাবিলায় নতুন মিত্রের সন্ধানে নেমেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।এ ক্ষেত্রে মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশ, সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন ইসলামিক ফ্রন্ট, আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর নেতৃত্বাধীন খেলাফত আন্দোলনসহ ইসলামি এবং ধর্মভিত্তিক কয়েকটি রাজনৈতিক দলকে কাছে টানার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এর বাইরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ এবং সম্প্রতি নিবন্ধন পাওয়া প্রয়াত ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার গঠন করা তৃণমূল বিএনপিসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পর্দার আড়ালে আলাপ-আলোচনা চলছে শাসক দলের।জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে প্রবীণ রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু রোববার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। অনেকেই আমাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে চান। আমরাও মনে করি বিএনপি-জামায়াতের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিপরীতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে এক মোহনায় সমবেত করতে। তিনি আরও বলেন, অনেকে ১৪ দলীয় জোটে যুক্ত হতে চান। আমরা মনে করি ১৪ দলীয় জোট একটি আদর্শিক জোট। নানা কারণে এখানে কোনো দলকে সম্পৃক্ত করা সম্ভব নাও হতে পারে। এ ক্ষেত্রে তারা যদি আলাদা জোট গঠন করে পথ চলতে চায়, সে ক্ষেত্রে আমাদের সমর্থন থাকবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিকদেরও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তারাও যে যার মতো করে ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপিসহ তাদের বলয়ে থাকা দলগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলে ভোটের মাঠে এক ধরনের কৌশল অবলম্বন করবে আওয়ামী লীগ, আর ভোট বর্জন করলে অন্যরকম কৌশল নেবে। বিরোধীরা নির্বাচনে অংশ নিলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট আরও সম্প্রসারণ করা হবে, এমনকি মহাজোটকেও সক্রিয় করার চিন্তা রয়েছে ক্ষমতাসীনদের মাথায়। বিএনপিসহ তাদের শরিকরা নির্বাচন বর্জন করলে যে যার মতো করে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে ভোটের মাঠে থাকবে।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের প্রধান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী, ইসলামিক ফ্রন্টের প্রধান সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আতাউল্লাহ হাফেজ্জীসহ বেশ কয়েকটি ইসলামি এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের প্রধান ১৪ দলীয় জোটের প্রধান সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সঙ্গে তার বাসভবনে গত ১৩ মার্চ বৈঠক করেন। এ সময় তারা সরকারের সঙ্গে থেকে পথ চলার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট, খেলাফত আন্দোলন-এই তিনটি দলই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত। তাদের সঙ্গে আরও কয়েকটি ইসলামি এবং ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল রয়েছে। সরকারি দলের সবুজ সঙ্কেত মিললে নির্বাচনের আগেই নতুন জোট হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে রাজনীতির মাঠে।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ধর্মভিত্তিক দলের মধ্যে রয়েছে-জাকের পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ও খেলাফত মজলিস। এর মধ্যে তরিকত ফেডারেশন ১৪ দলের শরিক। জাকের পার্টি জোটে না থাকলেও শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের সুহৃদ।সূত্র জানায়, বিএনপি, জামায়াতের বিপরীতে বিদ্যমান ইসলামি ও ধর্মভিত্তিক দলগুলো মিলে আলাদা একটি জোট গঠন করুক এবং তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে পথ চলুক-এটা ক্ষমতাসীনদেরও চাওয়া।এ প্রসঙ্গে আমির হোসেন আমু বলেন, আমাদের দেশে অনেক ইসলামি ও ধর্মভিত্তিক দল রয়েছে। তারা আমাদের সঙ্গে পথ চলতে চাইলে অবশ্যই আমরা তাদের সাধুবাদ জানাব। কারণ আওয়ামী লীগ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বাদে সবাইকে নিয়েই পথ চলতে চায়এর আগে গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সপরিবারে সাক্ষাৎ করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। ওই বৈঠকে শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকার বিষয়ে নিজের আগ্রহের কথা জানান বঙ্গবীর। জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু কন্যার সবুজ সংকেত মিললে কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ যুক্ত হবে ১৪ দলীয় জোটে।২০১৫ সালের ২০ নভেম্বর গঠিত তৃণমূল বিএনপি চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘সোনালী আঁশ’ প্রতীকে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন পায়। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার মৃত্যু হলে তার মেয়ে অন্তরা সেলিমা হুদা এখন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনিও চান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে পথ চলতে। তবে এখনই এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে নারাজ অন্তরা সেলিমা হুদা।এ বিষয়ে জানতে চাইলে তরিকত ফেডারেশনের একাংশের প্রধান লায়ন এম আউয়াল রোববার বলেন, আমরা ইসলামি ও ধর্মভিত্তিক কয়েকটি রাজনৈতিক দল মিলে কিছু একটা করার চেষ্টা করছি। আলাপ-আলোচনা চলছে। শিগগিরই এ বিষয়ে আমরা জানান দেব।

Top
%d bloggers like this: