বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণে কমেছে
মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম রেকর্ড পরিমাণে কমেছে। বর্তমানে বিশ্ববাজারে তেলের দাম সর্বনিম্ন। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েল প্রতি ব্যারেল ৯৪ দশমিক শূন্য ২ ডলারে বিক্রি হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার ৯৩ দশমিক ৮১ ডলারে নেমে আসে। খবর বিবিসি, এপি ও রয়টার্সের।দুই মাস আগে জ্বালানি তেলের দাম ১২০ ডলার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে প্রতি ব্যারেল ৯৪ দশমিক ১২ ডলারে বিক্রি হচ্ছে, যা ১৮ ফেব্রুয়ারির পর সর্বনিম্ন দর। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) ক্রুডের দর ছিল ৯৩ দশমিক ১০ ডলার। এদিকে, বেশি মাত্রায় দাম কমার পেছনে হয়তো বিনিয়োগকারীদের বিশ্বমন্দার আশঙ্কা কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানির মজুত ভাণ্ডার প্রত্যাশার তুলনায় বেশি হওয়াকেও দরপতনের অন্যতম একটি কারণ বলছেন বিশ্লেষকরা। নিউইয়র্ক টাইমসকে অ্যাডওয়ার্ড জোনস ইনভেস্টমেন্টসের বিশ্লেষক ফয়সাল এ হারসি বলেন, সম্ভাব্য মন্দার প্রতি বিনিয়োগকারীদের মনোযোগ-এ দরপতনের সবচেয়ে বড় কারণ এবং এটি চাহিদার ওপর বেশ প্রভাব ফেলতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে চলছে মন্দাবস্থা এবং উদীয়নমান অর্থনীতির দেশগুলো ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এ ছাড়া বিশ্বে জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীনে শূন্য কোভিড নীতির কারণে অর্থনীতি কার্যক্রম কমেছে। এ কারণে চাহিদা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় তেলের দাম কমছে।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়লে পেট্রল-ডিজেল যত তাড়াতাড়ি দামি হয়, উলটো হলে দাম তত দ্রুত কমে না। তার ওপর দাম কমার ধারা কতদিন বহাল থাকবে, তা নিয়েও সংশয় আছে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে তেল রপ্তানিকারী দেশগুলোর গোষ্ঠী ওপেককে জোগান বাড়াতে বলেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উলটোটা। রাশিয়াসহ বৃহত্তর ওপেক গোষ্ঠী জুলাই-আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরে জোগান বৃদ্ধির হার তেমন একটা বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে দাম আবার বাড়বে কি না, সেই প্রশ্নও থাকছে।উল্লেখ্য, কোভিডের শুরুতে সারাবিশ্ব যখন লকডাউনে তখন অপরিশোধিত তেলের দর শূন্যেরও অনেক নিচে নেমে যায়। এতে তেল কোম্পানিগুলো ক্ষতির মুখে পড়ে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর তেলের দর প্রতি ব্যারেল ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়।