সুরক্ষা দেয় কপিরাইট আইন
মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক যে কোনো সৃজনকর্মে স্রষ্টার অধিকারকে স্বীকৃতি, সুরক্ষা দেয় কপিরাইট আইন। কপিরাইট বিষয়ক যে কোনো সমস্যা সমাধানে তাই সৃজনকর্মের রেজিস্ট্রেশন অত্যন্ত জরুরি। অনেক পরে হলেও দেশে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। কয়েক বছরে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের হার কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায়-দেশে ২০১৬ সালে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন ছিল মাত্র ৬৩১টি। পরের বছর সেটি কমে দাঁড়ায় ৬২৫টিতে। ২০১৮ সালের পর এ সংখ্যা বাড়তে থাকে। এ বছর কপিরাইটের রেজিস্ট্রেশন সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৯৫টি। এভাবে ২০১৯ সালে ৩ হাজার ২০৫, ২০২০ সালে ৩ হাজার ৬২১ এবং ২০২১ সালে ৩ হাজার ৬৯৮টি কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন হয়।এতে দেখা যায়, কপিরাইটের জন্য রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। আর এ বাড়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ডিজিটালি কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সুবিধা। ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট কপিরাইট অফিস এটুআইয়ের মাধ্যমে অনলাইনে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের সুবিধা চালু করে। এর ফলে এ যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধিত হয়।
বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের সাবেক রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিনের কাজের ফসল এটি। ২০১৬ সালে কপিরাইট অফিসে যোগদানের পর দেখি কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন খুবই কম। তবে ২০১৭ সালে এটুআইয়ের সহযোগিতায় ডিজিটালি কপিরাইটের রেজিস্ট্রেশনের সুবিধা চালু হওয়ার পর থেকে রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে এ পরিবর্তন দেখা দেয়। তিনি বলেন, ২০১৭ সালে সারা ভারতে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন ১৮ হাজারের মতো। ২০২১ সালে এসে সেটি দাঁড়ায় ২৪ হাজার। ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতে প্রতি বছর ৩০ হাজার কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন হলে জনসংখ্যার অনুপাতে আমাদের দেশে প্রতি বছর ৩ হাজার রেজিস্ট্রেশন ঠিক আছে। আমরা পিছিয়ে নেই। আর সৃজনশীল কর্মের সঙ্গে জড়িত মানুষকে বেশি বেশি সচেতন করা গেলে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
কপিরাইট সংশোধন আইন কারিগরি কমিটির সদস্য খান মাহবুব বলেন, কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন বাড়াতে হলে আরও তিনটি বিষয় জরুরিভাবে করতে হবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো-কপিরাইটের যে আইন আছে সেটিকে আরও সুষম করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য মানুষকে বিষয়গুলো আরও জানাতে হবে। তৃতীয়ত, যারা কপিরাইট আইন ভঙ্গ করবেন তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আইনের প্রয়োগে বা এ বিষয়ক অপরাধ যাতে না ঘটে তার জন্য অপারেশনাল কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে।
দেশে বর্তমানে সাহিত্যকর্ম (কবিতা, গল্প, উপন্যাস, কার্টুন, বই, অভিধান), সংগীত (সব ধরনের সংগীত), সফটওয়্যার (মোবাইল অ্যাপস), ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল প্লাটফরম, চলচ্চিত্র, নাটক, ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশনস (ব্লগ, ই-মেইল, সব ধরনের ইলেকট্রনিক যোগাযোগ) ক্যাটাগরিতে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের নিয়ম চালু আছে।