রমজানুল মোবারক ও কুরআনুল কারিম মুমিনের জন্য মহানিয়ামত
মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া :রমজানুল মোবারক ও কুরআনুল কারিম মুমিনের জন্য মহানিয়ামত। আল্লাহতায়ালা আমাদের প্রতি সীমাহীন দয়া ও রহমত করেছেন। তাঁর দান ও করুণা অফুরন্ত, যা গণনা করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহ নিজে বলেছেন, ‘তোমরা যদি আল্লাহর নিয়ামত গণনা করো তাহলে তা আয়ত্ত করতে পারবে না। আমাদের আত্মা, আমাদের জীবন, আমাদের অস্তিত্ব, হাত, পা, চোখ, মুখ, মন, মগজ সবকিছুই আল্লাহর নিয়ামত। মাটি, বাতাস, পানি, শস্য কণা, ফল-ফুল ইত্যাদি যা কিছু আমাদের প্রয়োজন সবকিছু আল্লাহ্ মাটির দস্তরখানে আমাদের জন্য বিছিয়ে দিয়েছেন। তবে সর্বাপেক্ষা বড় যে নিয়ামত দান করেছেন, তা হলো আল্লাহ আমাদের কুরআনে কারিমের মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে আলাপনের সুযোগ দান করেছেন। আমাদের উদ্দেশে রমজানুল মোবারকে কুরআন নাজিল করেছেন এবং তা বোঝা ও তিলাওয়াতের সুযোগ দান করেছেন।
কুরআনে পাক তিলাওয়াতের মতো নিয়ামত ফেরেশতারাও পাননি। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, ফেরেশতারা এজন্য নামাজের জামাতে শরিক হন, যাতে কুরআনে কারিমের তিলাওয়াত শ্রবণ করতে পারেন। যেখানে কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত হয়, সেখানে ফেরেশতারা একত্র হয়ে ডানা ছড়িয়ে দেন এবং আশপাশে ঘেরাও করে রাখেন, যাতে কুরআনের উসিলায় যে রহমত নাজিল হয়, তাতে ফেরেশতারাও ভাগী হতে পারেন এবং শ্রবণ করতে পারেন। কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত ও মর্যাদা শুধু এ উম্মত লাভ করেছে। পূর্ববর্তী উম্মতকেও আল্লাহতায়ালা আহকাম দান করেছেন; কিন্তু তিনি তা প্রদান করেছেন কিতাবের মাধ্যমে, কালামের মাধ্যমে নয়। কিতাব ভিন্ন জিনিস, কালাম ভিন্ন জিনিস। কাউকে নিজের কুশলাদি লিখে জানালে তাকে কিতাব বলা হবে আর যদি টেলিফোনে বা সামনা-সামনি কথাবার্তা বলা হয় তাকে বলা হয় কালাম। কুরআন মাজিদ হলো আল্লাহর কালাম, এর শব্দ ও অর্থ উভয়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। কুরআনে কারিম অবতীর্ণ হয়েছে রমজানুল মোবারকে। রমজান মাসে রয়েছে আল্লাহর সীমাহীন রহমত। এটা কত বড় রহমত যে, রমজানের প্রতি কর্মে রয়েছে ৭০ গুণ সমপরিমাণ সাওয়াব। তাই রমজানে কুরআনে কারিমের তিলাওয়াত তথা আল্লাহর সঙ্গে আলাপনে বেশি বেশি লিপ্ত হয়ে তাঁর প্রেম সাগরে ডুব দিয়ে তাঁর সঙ্গে প্রেমময় সম্পর্ক গড়ার এক অপূর্ব সুযোগ। আল্লাহতায়ালা আমাদের এ সুযোগ কাজে লাগানোর তৌফিক দান করুন।