রাষ্ট্রপতির সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাষ্ট্রপতির সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে


মোহাম্মাদ আবুবকর সিদ্দীক ভুঁইয়া:রাষ্ট্রপতির সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আমন্ত্রণ পায়নি, তবে আমন্ত্রণ পেলেও সংলাপে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে মোস্তফা মহসীন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরামের একাংশও।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সংলাপে না যাওয়ার ঘোষণা দেন দলটির আমির ও চরমোনাইর পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। এ সময় তিনি নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তী জাতীয় সরকার গঠনের দাবিও জানান।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসি গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হয়েছে ২০ ডিসেম্বর। আমন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও সংলাপে যায়নি বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং বাম ঘরানার প্রভাবশালী রাঝনৈতিক দল সিপিবি সংলাপে যাবে না বলে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। এবার এ তালিকায় যুক্ত হলো ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণফোরামের একাংশ।

এদিকে সংলাপে অংশগ্রহণে অপরাগতা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছে সিপিবি। শনিবার দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়। রাষ্ট্রপতি বরাবর প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে দেশে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন থাকা একান্তভাবে প্রয়োজন। কিন্তু অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সেটাই যথেষ্ট নয়। কমিশনের মৌলিক গলদ দূর করতে না পারলে অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। এ মৌলিক বিবেচনা থেকে সিপিবি নির্বাচনের আমূল সংস্কারের জন্য সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বসহ ৫৩টি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের সুপারিশমালা ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে আপনার কাছে প্রদান করেছিল। এ অবস্থায় হুবহু একই আলোচ্যসূচিতে ও একই প্রকরণের আরেকটি সংলাপে যোগ দিয়ে সিপিবির নতুন কোনো কথা বলার নেই। সে কারণে সংলাপে যোগদানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করছি না।ইসি গঠনে দ্রুত আইন প্রণয়নের দাবি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো চিঠিতে সিপিবির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করার জন্য সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন কমিশন মনোনীত করা জরুরি। আপনার কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ, আপনি জাতীয় সংসদকে জরুরি বার্তা পাঠিয়ে আগামী মাসের ভেতরে নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়ন করে তা স্বাক্ষরের জন্য আপনার কাছে পাঠাতে বলুন। তাহলে নির্বাচন কমিশন মনোনয়নের আগে সে বিষয়ে পরামর্শ নেয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আপনার বৈঠকের প্রয়োজন পড়বে না।নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে চলমান সংলাপ একটি তামাশা মাত্র দাবি করে গণফোরামের একাংশের নেতারা বলেছেন, এই সংলাপের মাধ্যমে কাক্সিক্ষত নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হবে না। শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে দলটির নেতারা এ দাবি করেন।

দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ আজ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করল। কিন্তু প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ আইন এ সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে কীভাবে সংবিধানবহির্ভূত সার্চ কমিটি গঠন করবেন। এটা সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদের (২) এর সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ শুধু নয়, এতে সংবিধানকে উপেক্ষা এবং পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা করার সাংবিধানিক ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির আছে কী? এ অংশের নবনির্বাচিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মহসীন মন্টুসহ দলের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন। তবে তিনি সংলাপে যাবেন না বলে আমাদের জানিয়েছেন।চরমোনাইয়ের পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনও সংলাপে যাবে না বলে জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে দলটির আমির বলেন, ২০১২ ও ২০১৭ সালের সংলাপে অংশ নিয়ে আমরা চরমভাবে হতাশ হয়েছি। ২০১২ সালের সংলাপে গঠিত ইসি ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করেছে, যেখানে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হয়েছেন। আর ২০১৭ সালের সংলাপের পর গঠিত কমিশন ১০১৮ সালে একটি চরম বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছে, যাকে অনেকেই মধ্যরাতের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করেন।

Top