জাল সনদ তৈরির সাতজনকে আটক - Alokitobarta
আজ : শুক্রবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাল সনদ তৈরির সাতজনকে আটক


আলোকিত বার্তা:নূর রিমতি। ২০১৯ সালে রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ থেকে তিনি এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। পরে ইতালি যেতে এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয় তার। এ কারণে টাকার বিনিময়ে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে তথ্য বদলে দিয়ে তাকে এসএসসি পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে।ভয়ঙ্কর এই জালিয়াতির তথ্য দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের তথ্য পরিবর্তন করে জাল সনদ তৈরির অভিযোগে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর, রমনা ও চকবাজার এলাকা থেকে সাতজনকে গ্রেফতারের পর শনিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।গ্রেফতাররা হলো- নূর রিমতি, জামাল হোসেন, এ কে এম মোস্তফা কামাল, মো. মারুফ, ফারুক আহম্মেদ স্বপন, মাহবুব আলম ও মো. আবেদ আলী।গ্রেফতার এই চক্রের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।

ডিবির ভাষ্য,প্রথমে এই চক্রের সদস্যরা ঢাকা বোর্ডসহ অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংযোজন করে। তারপর জাল সনদ তৈরির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়।ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেফতার নূর রিমতি ২০১৯ সালে রাজধানীর সিটি মডেল কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন।ইতালি যেতে এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট প্রয়োজন। এ কারণে জাল সনদ তৈরি করতে তার মামা জামাল হোসেন ৩ লাখ টাকায় একেএম মোস্তফা কামালের সঙ্গে চুক্তি করেন। মোস্তফা কামাল শিক্ষা বোর্ডের দালাল মো. মারুফ, মাহবুব আলম, ফারুক আহম্মেদ স্বপন এবং আবেদ আলীর মাধ্যমে নূর তাবাসসুম নামের এক শিক্ষার্থীর জেএসসি এবং এসএসসি পাসের সব তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর নূর তাবাসসুমের জায়গায় নূর রিমতির সব তথ্য সংযোজন করতে শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফরমেটে আবেদন করে। পরে বোর্ডের ওয়েবসাইটের ফলাফল আর্কাইভে সংরক্ষিত কৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর তাবাসসুমের তথ্য পরিবর্তন করে অকৃতকার্য শিক্ষার্থী নূর রিমতির তথ্য আপলোড করে জাল সনদ তৈরি করা হয়। ফলে শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে নূর তাবাসসুমের জায়গায় নূর রিমতির তথ্য প্রদর্শিত হয়।

বিষয়টি কীভাবে ধরা পড়ল, সে বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগী নূর তাবাসসুম ২০১৯ সালে ধানমন্ডি কামরুননেছা গভ. গার্লস হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেন। গত ২১ আগস্ট তার শিক্ষা বোর্ডে দেওয়া মোবাইল নম্বরে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করার জন্য একটি মেসেজ আসে। ওই মেসেজে তার রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঠিক থাকলেও নিজের নাম ও বাবা-মার নামসহ জন্ম তারিখ পরিবর্তিত দেখতে পায়। তখন তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে যোগাযোগ করে পরিবর্তনের বিষয়টি জানতে পারে। এ ঘটনায় ধানমন্ডি মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী নূর তাবাসসুম। ওই মামলার তদন্তে নেমে গোয়েন্দা পুলিশ এই চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। নূর তাবাসসুমের মতো কেউ ভুক্তভোগী হয়ে থাকলে ডিবির সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানিয়েছেন সংস্থাটির এই অতিরিক্ত কমিশনার।

Top