নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে - Alokitobarta
আজ : শনিবার, ২২শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে


আলোকিত বার্তা:বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,দুর্নীতি ও চাকরি রক্ষা করতে গিয়ে অসদাচরণ করে সরকারের ইচ্ছা পূরণে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংসস্তুপে পরিণত করেছে। কমিশনের অসদাচরণের পিছনে রয়েছে চাকরি রক্ষা ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বিত্তের মালিক হওয়া।শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, অনিয়ম, আর্থিক কেলেঙ্কারী এবং নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত এই নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এরপরেও তাদেরকে কেউ টলাতে পারে না। কারণ শেখ হাসিনাকে খুশি করাই এদের একমাত্র লক্ষ্য। দেশব্যাপী ভোট সন্ত্রাসের বৈধতা দান করতে গিয়ে কমিশন বিভিন্নভাবে আইন ও বিধি-বিধানের লঙ্ঘন করেছে গুরুতর অসদাচরণের মাধ্যমে।তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) বিষয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা যা বলেছিলেন তা হলো- এই মেশিনে দূর থেকে হ্যাক করা যায়। ভোটের ফলাফল ম্যানিপুলেট করা যায়। এ কথার সত্যতা এখন আওয়ামী নেতারা নিজেরাই অকপটে স্বীকৃতি দিচ্ছেন। লক্ষীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী ওরফে নয়ন ৩নং ওয়ার্ডের চর সেকেন্দার সফি একাডেমি মাঠে অনুষ্ঠিত সভায় নোয়াখালির আঞ্চলিক ভাষায় বলেছেন, ‘নৌকার বাইরে ভোট দিলে ইভিএমে ধরি ফেলা যায়।রিজভী আরো বলেন, ইভিএম যে একটা ধাপ্পাবাজীর মেশিন বিএনপিসহ নানা মত ও পথের এবং বিশ্বের গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলের এই অভিমত এখন আওয়ামী লীগ নিজেরাই জানান দিচ্ছে। ২০১৮ সালে বিএনপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনে নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো না চাইলে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না।’ কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার সেই কথা রাখেননি। তিনি কথা রেখেছেন শেখ হাসিনার। ইভিএমে ভোট ম্যানিপুলেট করা হয়েছে দেদারসে। দিনের ভোট রাতে করেছেন।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, সরকারি দলের ভোট সন্ত্রাস, হামলা, প্রচার মাইক ভাঙচুর, বিএনপি নেতাকর্মীদের জখম ও রক্তাক্ত করা, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়া, যেখানে ভোট হচ্ছে, সেই এলাকার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, হয়রানি এবং পাইকারীভাবে গ্রেফতারের বিষয়ে অভিযোগ করলে নির্বাচনী কার্যালয়ের কর্মকর্তারা তা আমলে নেয় না, বরং উপহাস করে, তামাশা করে।কারণ তারা মনে করে সুষ্ঠু নির্বাচন করলে শেখ হাসিনা মাইন্ড করবেন এবং নির্বাচনের নামে লুটপাটে বাধা আসবে। বাধা আসবে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের বক্তৃতার নামে দুই কোটি টাকার আত্মসাতে। নিয়োগ বাণিজ্যে চার কোটি টাকার দুর্নীতিতে, ইভিএম ক্রয় ও ব্যবহারে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতিতে। বাধা আসবে অবৈধভাবে কমিশনারদের গাড়ি ব্যবহারে।বিএনপির এই মুখপাত্র আরো বলেন, শেখ হাসিনাকে খুশি করতে গিয়ে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশন এমন কাণ্ড করেছেন, যা কেবল বিকারগ্রস্ত ব্যক্তিরাই করতে পারে। ২১৫ আসনে শত ভাগ ভোট দেখানো এবং সাড়ে চারশো কেন্দ্রে শতকরা ৯৫ ভাগ ভোট দেখানোর মতো কাজ কেবল নিম্নমানের অপরাধীরা ছাড়া আর কেউ করতে পারে না। বর্তমানে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সেই ট্র্যাডিশন সমানে চালিয়ে যাচ্ছে। এই নির্বাচন কমিশন যে অপরাধ করেছে, তা অবশ্যই অভিশংসনযোগ্য অপরাধ, দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিকের এই অভিমতের সাথে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সম্পূর্ণরূপে একমত।এ সময় তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব প্রত্যাহারের সরকারি হঠকারী ও অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামীকাল ১৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার ঢাকাসহ দেশের সকল মহানগরীতে এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার দেশের সকল জেলা সদরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঢাকায় উক্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে।সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ড.মামুন আহমেদ, হাবিব উন নবী খান সোহেল ও ডা. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Top