ওবায়দুল কাদের তার ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে শান্ত থাকতে বলেছেন
আলোকিত বার্তা:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে শান্ত থাকতে বলেছেন।শনিবার বিকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে কাদের মির্জা সাক্ষাৎ করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদের তাকে শান্ত থাকতে বলেন।নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র কাদের মির্জা কিছু বক্তব্য দিয়ে সম্প্রতি দেশে আলোচনার ঝড় তুলেছেন।১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন উপলক্ষ্যে তার বক্তব্য আওয়ামী লীগের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। তিনি বলেছিলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের দু-একজন এমপি ছাড়া অন্যরা পালানোর পথ পাবেন না।তিনি এখনও তার সেই বক্তব্যে অনড় রয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করেন।সাক্ষাতের পর কাদের মির্জা গণমাধ্যমকে বলেন, এটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। কারণ পৌরসভা নির্বাচনের পর আমাদের মধ্যে দেখা হয়নি। সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে।পুনর্গঠিত কিছু কমিটি সম্পর্কে তাকে (সাধারণ সম্পাদক) অবহিত করেছি। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। ওই নির্বাচনও যাতে সুষ্ঠু হয় সে বিষয়ে কথা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) এখন থেকে পরিকল্পনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।পৌর নির্বাচনের সময় দেওয়া কিছু বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের কিছু বলেছেন কিনা জানতে চাইলে মির্জা কাদের বলেন, না। কেন বলবেন? এসব বিষয় কোনো কথা হয়নি।তবে তিনি (ওবায়দুল কাদের) শান্ত থাকতে বলেছেন। দলের ঘোষণাপত্রের ৫৮/৩/২ ধারায় বাক-স্বাধীনতার বলা আছে। আমার মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে অবশ্যই কথা বলব।আমি সাহস করে সত্য কথা বলব। অন্যায়, অবিচার ও অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ করব। আমি চাই, দেশে পরবর্তী নির্বাচনগুলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক। তিনি আরও বলেন, হাইকমান্ডের নির্দেশে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছি।কিন্তু নোয়াখালীতে অপরাজনীতি, টেন্ডারবাজি, চাকরিবাণিজ্য, প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটানো এবং অস্ত্রবাজি বন্ধ না হলে এক মাস পর আবার কর্মসূচি দেব। আগের নির্বাচনগুলো প্রশ্নবিদ্ধ মনে করেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের মির্জা বলেন, এর আগে কিছু কিছু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ ছিল। সব নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এটা ঠিক নয়।তিনি আরও বলেন, হ্যাঁ-না ভোটের মাধ্যমে দেশে ভোটচুরির রাজনীতি শুরু করেছেন জিয়াউর রহমান। ১৯৯১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যে নির্বাচন হয়েছে তা নিরপেক্ষ হয়েছে, বিএনপি ক্ষমতায় আসে।আর মাগুরার নির্বাচনসহ যত নির্বাচন হয়েছে একটা নির্বাচনও বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে নিরপেক্ষ হয়নি। আওয়ামী লীগের আমলে অনেক দৃষ্টান্ত আছে।কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের নেত্রীর (শেখ হাসিনা) প্রতি আস্থা আছে, শতভাগ আস্থা আছে। তিনি যে নির্দেশ দেবেন সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করব।দলীয় হাইকমান্ডকে এক মাসের সময় বেঁধে দিলেন কাদের মির্জা : নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, কাদের মির্জা বলেছেন দলীয় হাইকমান্ডের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে কোম্পানীগঞ্জের রোববারের হরতাল প্রত্যাহার এবং ২ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাসের সংবাদ সম্মেলন বাতিল ঘোষণা করেছি।তবে আগামী এক মাসের মধ্যে হাইকমান্ড আমাদের দাবি না মানলে আমরা আবার কর্মসূচি দেব। তিনি বলেন, কবিরহাট উপজেলায় চলছে হরিলুট।আমাদের নেতাকর্মীরা টিআর-কাবিখা কিছুই পায় না। তারা অসহায় এতিমের মতো দলকে ভালোবেসে দলের কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কবিরহাট উপজেলা ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনি আসন।অথচ একরামুল করিম চৌধুরী এখানে মাতাব্বরী করে। ওই উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা একরামুল চৌধুরী ও তার স্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যানের অত্যাচারে জর্জরিত। শুক্রবার সন্ধ্যায় এ প্রতিনিধির সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় কাদের মির্জা এ কথাগুলো বলেন।